কাজ হবে কিনা, তা না ভেবেই নেওয়া হয় প্রকল্প: আইনুন নিশাত
Published: 14th, December 2025 GMT
সরকারি সংস্থাগুলোর প্রকল্প নেওয়ার প্রবণতার সমালোচনা করেছেন পরিবেশ ও পানিসম্পদ–বিশেষজ্ঞ আইনুন নিশাত।
তিনি বলেছেন, ‘আমরা খালি প্রকল্প করতে চাই। আমি ঠাট্টা করে বলি, বাংলাদেশ একটা বড় রোগে ভোগে। রোগটার নাম প্রজেক্টাইটিস। মেনিনজাইটিস, হেপাটাইটিসের মতো। প্রজেক্ট করে সেটা কাজে আসছে কি না, সেটা দেখে না।’
আজ রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের পর্যটন ভবনে ‘পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা ও সুশাসন: নদী, হাওর ও জলাভূমি’ শীর্ষক এক অধিবেশনে এ কথা বলেন আইনুন নিশাত।
অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি), বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) ও পানি অধিকার ফোরাম যৌথভাবে দুই দিনব্যাপী জাতীয় সম্মেলনের আয়োজন করে। আজ ছিল এ সম্মেলনের শেষ দিন।
সম্মেলনে আইনুন নিশাত বলেন, ‘পানি একটা বিরাট বিষয়। পানি ব্যবস্থাপনায় পর্যাপ্ত উপাত্ত আমাদের আছে। শুধু পানি ব্যবস্থাপনা করলে হবে না। এর সঙ্গে কৃষি ব্যবস্থাপনা, ভূমি ব্যবস্থাপনা, গবাদিপশুর ব্যবস্থাপনা, সেচ ব্যবস্থাপনাসহ অনেক কিছু মিলিয়ে পানি ব্যবস্থাপনাকে দেখতে হবে। এখন একজনের কাজ আরেকজনে করে।’
উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘ফেনীতে বন্যায় বাঁধ ভাঙল, মেরামত করতে হলে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে করতে হবে। রাস্তা ভাঙল, মেরামত করবে স্থানীয় এলজিইডি। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এগুলো ঘন ঘন হতে থাকবে। কিন্তু এসব ঠিক করতে টাকা দেওয়া হলো দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়কে। তাদের কোনো পেশাদার লোক নেই। তারা ঢেউটিন বিতরণ করতে পারে। তাদের কোনো এক্সপার্টিজ নেই। এই হলো বাংলাদেশ।’
পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা নিয়ে অধিবেশনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বেলার প্রধান নির্বাহী তাসলিমা ইসলাম। তিনি বলেন, নানামুখী দূষণ, আর্সেনিক, লবণাক্ততার কারণে পানির প্রাপ্যতা কমছে দেশে।
ওয়াটারএইডের তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রতি পাঁচজনের দুজন দূষিত পানি পান করছে। পানির যে বণ্টন, তার ৮০ শতাংশ হয় নগরকেন্দ্রিক। উপকূলের লোকজন পানি সংগ্রহে ঢাকার লোকজনের চেয়ে চার গুণ বেশি সময় ব্যয় করে। পানিতে প্রবেশগম্যতার দিক থেকে ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩৩।
অধিবেশনে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক শাহজাহান মন্ডল। তিনি বলেন, ‘পানিসম্পদ নিয়ে আমাদের পলিসি ও আইন আছে, কিন্তু যখন প্রকল্প প্রণয়ন হয়, তখন এগুলোর কোনো প্রতিফলন থাকে না।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক জসিম উদ্দিন বলেন, পানির সুরক্ষায় যেসব প্রতিষ্ঠান আছে, তারা জানে না তাদের এখতিয়ার কতটুকু। তাদের ভূমিকা সুনির্দিষ্ট করতে হবে।
অধিবেশনে সমাপনী বক্তব্যে এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা বলেন, ‘এ–জাতীয় সম্মেলনে প্রাপ্ত সব মতামত, সুপারিশের একটা সংকলন সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পৌঁছাব আমরা। একটা অর্থবহ পরিবর্তনের লক্ষ্যে আমাদের কথা বলে যেতে হবে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আইন ন ন শ ত প রকল প
এছাড়াও পড়ুন:
কাজ হবে কিনা, তা না ভেবেই নেওয়া হয় প্রকল্প: আইনুন নিশাত
সরকারি সংস্থাগুলোর প্রকল্প নেওয়ার প্রবণতার সমালোচনা করেছেন পরিবেশ ও পানিসম্পদ–বিশেষজ্ঞ আইনুন নিশাত।
তিনি বলেছেন, ‘আমরা খালি প্রকল্প করতে চাই। আমি ঠাট্টা করে বলি, বাংলাদেশ একটা বড় রোগে ভোগে। রোগটার নাম প্রজেক্টাইটিস। মেনিনজাইটিস, হেপাটাইটিসের মতো। প্রজেক্ট করে সেটা কাজে আসছে কি না, সেটা দেখে না।’
আজ রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের পর্যটন ভবনে ‘পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা ও সুশাসন: নদী, হাওর ও জলাভূমি’ শীর্ষক এক অধিবেশনে এ কথা বলেন আইনুন নিশাত।
অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি), বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) ও পানি অধিকার ফোরাম যৌথভাবে দুই দিনব্যাপী জাতীয় সম্মেলনের আয়োজন করে। আজ ছিল এ সম্মেলনের শেষ দিন।
সম্মেলনে আইনুন নিশাত বলেন, ‘পানি একটা বিরাট বিষয়। পানি ব্যবস্থাপনায় পর্যাপ্ত উপাত্ত আমাদের আছে। শুধু পানি ব্যবস্থাপনা করলে হবে না। এর সঙ্গে কৃষি ব্যবস্থাপনা, ভূমি ব্যবস্থাপনা, গবাদিপশুর ব্যবস্থাপনা, সেচ ব্যবস্থাপনাসহ অনেক কিছু মিলিয়ে পানি ব্যবস্থাপনাকে দেখতে হবে। এখন একজনের কাজ আরেকজনে করে।’
উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘ফেনীতে বন্যায় বাঁধ ভাঙল, মেরামত করতে হলে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে করতে হবে। রাস্তা ভাঙল, মেরামত করবে স্থানীয় এলজিইডি। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এগুলো ঘন ঘন হতে থাকবে। কিন্তু এসব ঠিক করতে টাকা দেওয়া হলো দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়কে। তাদের কোনো পেশাদার লোক নেই। তারা ঢেউটিন বিতরণ করতে পারে। তাদের কোনো এক্সপার্টিজ নেই। এই হলো বাংলাদেশ।’
পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা নিয়ে অধিবেশনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বেলার প্রধান নির্বাহী তাসলিমা ইসলাম। তিনি বলেন, নানামুখী দূষণ, আর্সেনিক, লবণাক্ততার কারণে পানির প্রাপ্যতা কমছে দেশে।
ওয়াটারএইডের তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রতি পাঁচজনের দুজন দূষিত পানি পান করছে। পানির যে বণ্টন, তার ৮০ শতাংশ হয় নগরকেন্দ্রিক। উপকূলের লোকজন পানি সংগ্রহে ঢাকার লোকজনের চেয়ে চার গুণ বেশি সময় ব্যয় করে। পানিতে প্রবেশগম্যতার দিক থেকে ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩৩।
অধিবেশনে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক শাহজাহান মন্ডল। তিনি বলেন, ‘পানিসম্পদ নিয়ে আমাদের পলিসি ও আইন আছে, কিন্তু যখন প্রকল্প প্রণয়ন হয়, তখন এগুলোর কোনো প্রতিফলন থাকে না।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক জসিম উদ্দিন বলেন, পানির সুরক্ষায় যেসব প্রতিষ্ঠান আছে, তারা জানে না তাদের এখতিয়ার কতটুকু। তাদের ভূমিকা সুনির্দিষ্ট করতে হবে।
অধিবেশনে সমাপনী বক্তব্যে এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা বলেন, ‘এ–জাতীয় সম্মেলনে প্রাপ্ত সব মতামত, সুপারিশের একটা সংকলন সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পৌঁছাব আমরা। একটা অর্থবহ পরিবর্তনের লক্ষ্যে আমাদের কথা বলে যেতে হবে।’