‘এখন আমি কার ফোনের জন্য অপেক্ষা করব’
Published: 14th, December 2025 GMT
সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনে হামলায় নিহত ছয় বাংলাদেশির মধ্যে একজন মাসুদ রানা। তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর করপোরাল (এমটি) ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে পরিবার ও স্বজনদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।আট বছর বয়সী একমাত্র সন্তান আসমা উল হুসনাকে বুকে জড়িয়ে বলছিলেন, ‘আমি এখন আমার মেয়েকে কী বলে সান্ত্বনা দিব। সে (মাসুদ রানা) তো সবার কথা ভাবত, এখন ওর মেয়ের জন্য কে ভাববে? এখন আমি কার ফোনের জন্য অপেক্ষা করব।’
গতকাল শনিবার সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘের একটি ঘাঁটিতে সন্ত্রাসীরা অতর্কিত ড্রোন হামলা চালালে বাংলাদেশি ছয় শান্তিরক্ষী নিহত হন। আহত হন আটজন। তাঁরাও বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী। সবাই আবেইর জন্য জাতিসংঘের অন্তর্বর্তী নিরাপত্তা বাহিনীতে (ইউএনআইএসএফএ) কর্মরত ছিলেন। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
আরও পড়ুনশামীম রেজার গ্রামে শোকের ছায়া২ ঘণ্টা আগেনিহত ব্যক্তিদের একজন নাটোরের লালপুর উপজেলার আড়বাব ইউনিয়নের বোয়ালিপাড়ার মাসুদ রানা। তিনি যশোর ক্যান্টনমেন্টের ২১ পদাতিক ব্রিগেড থেকে শান্তি মিশনে অংশগ্রহণ করেন। এক মাস ছয় দিন আগে সুদান মিশনে যোগ দিয়েছিলেন। তিনি বোয়ালিপাড়া গ্রামের সাহার উদ্দিন ও মর্জিনা বেগম দম্পতির বড় ছেলে। তাঁর অন্য দুই ভাই মনিরুল আলম ও রনি আলমও সেনাবাহিনীতে কর্মরত আছেন।
রোববার বিকেলে বোয়ালিপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, দলে দলে লোকজন সাহার উদ্দিনের বাড়িতে জড়ো হয়েছেন। সেখানে কথা হয় মাসুদ রানার ছোট ভাই রনি আলমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমার বাবা নিতান্তই একজন গরিব মানুষ ছিলেন। সামান্য যেটুকু জমি ছিল, তা বিক্রি করে মাসুদ ভাইকে মানুষ করেছিলেন। তিন বছর আগে আব্বাও মারা গেছেন। মাসুদ ভাই বাবার দায়িত্বই পালন করে আসছিলেন। এখন আমরা সবই হারালাম।’
আরও পড়ুনসুদানে সন্ত্রাসী হামলায় হতাহত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের নাম-পরিচয় জানাল আইএসপিআর৮ ঘণ্টা আগেসুদানে নিহত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর করপোরাল মাসুদ রানা.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ ন ত রক ষ এখন আম র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
রংপুরে মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁর স্ত্রীকে হত্যা মামলায় একজন গ্রেপ্তার
রংপুরের তারাগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা যোগেশ চন্দ্র রায় ও তাঁর স্ত্রী সুবর্ণা রায়কে নিজ বাড়িতে হত্যার ঘটনায় জড়িত অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার গভীর রাতে উপজেলার আলমপুর ইউনিয়নের শেরমস্ত বালাপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম মোরছালিন (২২)। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আবু সাইয়ুম তালুকদার জানান, হত্যার দুই দিন আগে মোরছালিন যোগেশ চন্দ্রের বাড়িতে টাইলস লাগানোর কাজ করেন। আজ শুক্রবার মোরছালিনকে নিয়ে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান চালানো হবে।
আরও পড়ুনপরোপকারী দম্পতির এমন মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না এলাকাবাসী০৭ ডিসেম্বর ২০২৫এর আগে গত শনিবার রাতে তারাগঞ্জ উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের রহিমাপুর গ্রামের নিজ বাড়িতে খুন হন মুক্তিযোদ্ধা এবং অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক যোগেশ চন্দ্র রায় ও তাঁর স্ত্রী সুবর্ণা রায়। পরদিন রোববার সকালে প্রতিবেশীরা ডাকাডাকি করেও তাঁদের সাড়া পাননি। একপর্যায়ে বাড়ির ভেতরে ঢুকে ওই দম্পতির রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পান।
এ ঘটনায় ওই দম্পতির বড় ছেলে শোভেন চন্দ্র রায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে তারাগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। সেই মামলায় মোরছালিনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রুহুল আমিন বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার ব্যক্তি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁর কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও পাওয়া গেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে এখনই বিস্তারিত জানানো হচ্ছে না।
আরও পড়ুনরংপুরে মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁর স্ত্রীকে হত্যায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে থানায় মামলা০৮ ডিসেম্বর ২০২৫