সূর্যের মতই যেন ফুটন্ত সূর্যমুখী ফুল। বিশাল মাঠ জুড়ে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ানো ফুলগুলি দিকে তাকিয়ে থাকলে যেন মনে হয় মাঠজুড়ে দাঁড়িয়ে আছে একেকটি সূর্য। অপরূপ এক সৌন্দর্যের নীলাভূমি যেন সূর্যমুখী ফুলের বাগান। 

ফুলের মধু খেতে প্রচুর মৌমাছি জড় হয় ফুল বাগানে। এই অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে মানুষের ভিড় করে বাগানে। নরসিংদীর বিভিন্ন এলাকায় তেলবীজ শস্য হিসেবে বপন করা সূর্যমুখী বাগান এখন হয়ে উঠেছে স্থানীয়দের বিনোদনকেন্দ্র। কৃষকরা তেলবীজের পাশাপাশি বাগানে আসা দর্শনার্থীদের কাছ থেকেও পাচ্ছেন বাড়তি আয়। এতে খুশি কৃষক।

দেশে আদর্শ মানের ভোজ্য তেল হিসেবে সূর্যমুখী বাগানের পরিধি যেমন বাড়ছে, তেমনি এটিকে বিনোদনকেন্দ্র হিসেবে বেছে নিয়েছেন স্থানীয়রা। আর কৃষকদের সূর্যমুখী বাগান থেকে ভোজ্য তেলের পাশাপাশি বাগানে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদের কাছ থেকে বাড়তি আয় হচ্ছে।

নরসিংদীর নাগরিয়াকান্দি মেঘনা নদীতে নির্মিত সেতুর উত্তর পাশে বিশালাকার চরাঞ্চলে গড়ে উঠেছে সূর্যমুখী কর্নার। এখানে প্রায় হাজার বিঘা চরের জমি বছরের একটি সময় পতিত থাকে। এই জমিকে কাজে লাগানোর জন্য স্থানীয় একজন যুবক মিলে কৃষি বিভাগের পরামর্শে এলাকায় গত বছর প্রথমবারের মতো পাঁচ বিঘা জমিতে চাষ করেন সূর্যমুখীর। বর্তমানে যা ২০ বিঘারও উপরে।

এই বাগানে ফুল ফোটার পর আসতে শুরু করেছেন দর্শনার্থী। তাই বাগান রক্ষা ও দর্শনার্থীদের উপভোগের জন্য বাগানে রাখা হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এই সূর্যমুখী বাগান করে একদিকে স্বল্প ব্যয়ে বেশি লাভ, অপরদিকে বাগানগুলো বিনোদনকেন্দ্রে পরিণত হওয়ায় আসছে বাড়তি আয়। আর এই বাগান ঘুরতে এসে খুশি দর্শনার্থীরাও।

তহিদুল ইসলাম মাসুম নামে বাগান মালিক বলেন, “প্রথমে পরীক্ষামূলকভাবে নরসিংদীতে সূর্যমুখীর বাগান করেন। বাগান করে সফলতাও পেয়েছেন। তাই গত বছর নিজ এলাকা নদীর পাড়ে গড়ে ওঠা বিশালাকার চর পতিত রয়েছে। জমিগুলো কাজে লাগানোর লক্ষ্যে লিজ নিয়ে প্রথমবার পাঁচ বিঘা জমিতে সূর্যমুখী চাষ করি। বর্তমানে ২০ বিঘা জমিতে গড়ে তুলেছি সূর্যমুখীর বাগান।”

তিনি আরো বলেন, “তেলবীজ সংগ্রহের আশায় গড়ে তোলা হলেও এখন স্থানীয়দের বিনোদনকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে ফুল বাগান। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সব বয়সের নারী পুরুষ এখানে ঘুরতে আসেন। বাগান ঘুরে ছবিও তোলেন দর্শনার্থীরা। এবার ভালো ফলন পাব বলে আশাবাদী। প্রতিদিন এক হাজার থেকে ১২০০ দর্শনার্থী আসেন এখানে। টিকেটের মূল্য ৩০ টাকা। দর্শনার্থীদের কাছ থেকে মাসে আয় হয় প্রায় ছয় থেকে সাত লাখ টাকা।”

ঘুরতে আসা কলেজ প্রভাষক সহিদুল হক সুমন বলেন, “আমাদের উপজেলায় এটিই প্রথম সূর্যমুখী বাগান। আগে কখনো এই অঞ্চলে সূর্যমুখী বাগান দেখিনি। আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। সময় পেলেই চলে আসি।”

ডালিম মিয়া নামে এক পর্যটক বলেন, “মূলত ইউটিউবে এই বাগানের কথা শুনেছিলাম। সূর্যমুখী দেখার তীব্র ইচ্ছা ছিল তাই পরিবার নিয়ে বাগানে চলে আসছি। পুরো বাগান ঘুরে দেখলাম অপরূপ এক সৌন্দর্য সূর্যমুখী ফুলের মাঝে খুঁজে পেয়েছি। বাগানের মাঝখানে তো নিজেরা হারিয়ে যাচ্ছি। এত সুন্দর ফুল আমরা কখনো আগে দেখিনি। অনেক রকমভাবে ছবি তুলছি। আসল পরিবারের সাথে এই জায়গায় সময়টা অনেক ভালোই যাচ্ছে। পাশাপাশি সূর্যমুখী তেল অনেক পুষ্টিকর। আমাদের মনে হচ্ছে সূর্যমুখী ফুল সবদিক দিয়ে উপকারী জিনিস।”

নরসিংদী জেলা কৃষি কর্মকর্তা মো.

আজিজুল রহমান জানান, সূর্যমুখীর বীজের মাধ্যমে যে পরিশোধিত তেল পাওয়া যায় তা স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর। এর ফলে বাজারে চাহিদা রয়েছে প্রচুর। সূর্যমুখীর বীজ থেকে যে তেল পাওয়া যায়, তাতে মানব দেহের ক্ষতিকর কোনো বিষয় থাকে না। তাই শরীরের জন্য উপকারী হিসেবে সূর্যমুখীর বীজ থেকে পাওয়া তৈল মানবদেহের জন্য স্বাস্থ্যকর। এর ফলে মানুষ এখন সয়াবিন তেল ব্যবহার থেকেও সরে আসছেন।

সরিষার তেলের পাশাপাশি সূর্যমুখীর তেলও ব্যবহার শুরু করেছেন। এছাড়া বর্তমানে সূর্যমুখী বাগান দর্শনীয় স্থান হিসেবে বেছে নিয়েছেন স্থানীয় ভ্রমণ পিপাসুরা। তবে এর চাষাবাদ নরসিংদীতে ব্যাপক না হলেও দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সূর্যমুখী বাগান করে ভোজ্য তেলের পাশাপাশি স্থানীয় বিনোদনকেন্দ্র হিসেবে দর্শনার্থীদের আনন্দ দানের মাধ্যমে কৃষকের অতিরিক্ত অর্থ আয় হবে। আমরা কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করছে বলে জানান তিনি।

ঢাকা/হৃদয়/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব গ ন কর র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

এমএলএস কাপ জিতে কত টাকা পেলেন মেসিরা

ইতিহাস গড়ে প্রথমবারের মতো এমএলএস কাপ জিতেছে লিওনেল মেসির ইন্টার মায়ামি। রোববারের ফাইনালে প্রতিপক্ষ ভ্যাঙ্কুভার হোটয়াইটসক্যাপসকে মায়ামি উড়িয়ে দেয় ৩-১ গেলে। চেজ স্টেডিয়ামে হওয়া এই ফাইনাল শেষে শুরু হওয়া উদ্‌যাপনে এখনো মেতে আছেন মায়ামির খেলোয়াড় ও সমর্থকেরা। প্রথমবারের মতো এমএলএসের সবচেয়ে বড় শিরোপা জয়ের পর উদ্‌যাপনটা অবশ্য এমন বাঁধভাঙাই হওয়ার কথা।

এমএলএস কাপ জিতে অবশ্য শুধু ট্রফিই নয়, বড় অঙ্কের অর্থ পুরস্কারও পেয়েছে ইন্টার মায়ামি। সর্বশেষ অফিশিয়াল প্লে-অফ পুরস্কারের কাঠামোয় ২০২৫ সালের এমএলএস কাপ জেতা দল ৩ লাখ মার্কিন ডলার (প্রায় ৩ কোটি ৬৭ লাখ টাকা) অর্থ পুরস্কার পাবে, আর রানার্সআপ দল পাবে ১ লাখ ৫০ হাজার ডলারের অর্থ পুরস্কার।

ফাইনালিস্টদের বাইরে, এমএলএস এমন দলগুলোকেও পুরস্কৃত করে, যারা প্লে-অফের আগের রাউন্ডে আসতে পারে। যেমন কনফারেন্স ফাইনালে হেরে যাওয়া দলগুলো পেয়েছে ১ লাখ ডলার করে। আর কনফারেন্স সেমিফাইনাল থেকে বাদ পড়া দলগুলোর ঝুলিতে গেছে ৪৭ হাজার ৫০০ ডলার করে।

আরও পড়ুনক্যারিয়ারের ৪৭তম শিরোপা জিতে মেসি, ‘এই মুহূর্তটার জন্যই অপেক্ষা করছিলাম’০৭ ডিসেম্বর ২০২৫

উত্তীর্ণ হওয়া সব ফ্র্যাঞ্চাইজির মধ্যে প্লে-অফ পুরস্কার হিসেবে প্রায় ১০ লাখ ডলার বিতরণ করে এমএলএস। এই অর্থ বিতরণ প্রক্রিয়া পোস্ট সিজন রাউন্ডের (প্লে-অফের ধাপগুলো) আর্থিক গুরুত্বকে আরও মজবুত করে, যেখানে প্রতিটি জয় একটি দলকে।

স্ত্রী ও পুত্রদের সঙ্গে নিয়ে মেসির আরেকটি শিরোপা উদযাপন

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে হলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ৫ বছরের তথ্
  • যুক্তরাষ্ট্রে যেতে আগ্রহী পর্যটকদের পাঁচ বছরের সামাজিক মাধ্যমের ইতিহাস দেখা হতে পারে
  • ১৪ বছরের টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথমবার সেরা তিনে স্টার্ক
  • এমএলএস কাপ জিতে কত টাকা পেলেন মেসিরা
  • রোকেয়া পদক পেয়ে ঋতুপর্ণা বললেন ‘এ পুরস্কার নারীদের আরও প্রেরণা জোগাবে’
  • বিগ টিকিটে ৮৩ লাখ টাকা জিতলেন প্রবাসী বাংলাদেশি