সূর্যমুখী বাগানে মনের খোরাক মিটছে পর্যটকদের
Published: 15th, January 2025 GMT
সূর্যের মতই যেন ফুটন্ত সূর্যমুখী ফুল। বিশাল মাঠ জুড়ে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ানো ফুলগুলি দিকে তাকিয়ে থাকলে যেন মনে হয় মাঠজুড়ে দাঁড়িয়ে আছে একেকটি সূর্য। অপরূপ এক সৌন্দর্যের নীলাভূমি যেন সূর্যমুখী ফুলের বাগান।
ফুলের মধু খেতে প্রচুর মৌমাছি জড় হয় ফুল বাগানে। এই অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে মানুষের ভিড় করে বাগানে। নরসিংদীর বিভিন্ন এলাকায় তেলবীজ শস্য হিসেবে বপন করা সূর্যমুখী বাগান এখন হয়ে উঠেছে স্থানীয়দের বিনোদনকেন্দ্র। কৃষকরা তেলবীজের পাশাপাশি বাগানে আসা দর্শনার্থীদের কাছ থেকেও পাচ্ছেন বাড়তি আয়। এতে খুশি কৃষক।
দেশে আদর্শ মানের ভোজ্য তেল হিসেবে সূর্যমুখী বাগানের পরিধি যেমন বাড়ছে, তেমনি এটিকে বিনোদনকেন্দ্র হিসেবে বেছে নিয়েছেন স্থানীয়রা। আর কৃষকদের সূর্যমুখী বাগান থেকে ভোজ্য তেলের পাশাপাশি বাগানে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদের কাছ থেকে বাড়তি আয় হচ্ছে।
নরসিংদীর নাগরিয়াকান্দি মেঘনা নদীতে নির্মিত সেতুর উত্তর পাশে বিশালাকার চরাঞ্চলে গড়ে উঠেছে সূর্যমুখী কর্নার। এখানে প্রায় হাজার বিঘা চরের জমি বছরের একটি সময় পতিত থাকে। এই জমিকে কাজে লাগানোর জন্য স্থানীয় একজন যুবক মিলে কৃষি বিভাগের পরামর্শে এলাকায় গত বছর প্রথমবারের মতো পাঁচ বিঘা জমিতে চাষ করেন সূর্যমুখীর। বর্তমানে যা ২০ বিঘারও উপরে।
এই বাগানে ফুল ফোটার পর আসতে শুরু করেছেন দর্শনার্থী। তাই বাগান রক্ষা ও দর্শনার্থীদের উপভোগের জন্য বাগানে রাখা হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এই সূর্যমুখী বাগান করে একদিকে স্বল্প ব্যয়ে বেশি লাভ, অপরদিকে বাগানগুলো বিনোদনকেন্দ্রে পরিণত হওয়ায় আসছে বাড়তি আয়। আর এই বাগান ঘুরতে এসে খুশি দর্শনার্থীরাও।
তহিদুল ইসলাম মাসুম নামে বাগান মালিক বলেন, “প্রথমে পরীক্ষামূলকভাবে নরসিংদীতে সূর্যমুখীর বাগান করেন। বাগান করে সফলতাও পেয়েছেন। তাই গত বছর নিজ এলাকা নদীর পাড়ে গড়ে ওঠা বিশালাকার চর পতিত রয়েছে। জমিগুলো কাজে লাগানোর লক্ষ্যে লিজ নিয়ে প্রথমবার পাঁচ বিঘা জমিতে সূর্যমুখী চাষ করি। বর্তমানে ২০ বিঘা জমিতে গড়ে তুলেছি সূর্যমুখীর বাগান।”
তিনি আরো বলেন, “তেলবীজ সংগ্রহের আশায় গড়ে তোলা হলেও এখন স্থানীয়দের বিনোদনকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে ফুল বাগান। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সব বয়সের নারী পুরুষ এখানে ঘুরতে আসেন। বাগান ঘুরে ছবিও তোলেন দর্শনার্থীরা। এবার ভালো ফলন পাব বলে আশাবাদী। প্রতিদিন এক হাজার থেকে ১২০০ দর্শনার্থী আসেন এখানে। টিকেটের মূল্য ৩০ টাকা। দর্শনার্থীদের কাছ থেকে মাসে আয় হয় প্রায় ছয় থেকে সাত লাখ টাকা।”
ঘুরতে আসা কলেজ প্রভাষক সহিদুল হক সুমন বলেন, “আমাদের উপজেলায় এটিই প্রথম সূর্যমুখী বাগান। আগে কখনো এই অঞ্চলে সূর্যমুখী বাগান দেখিনি। আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। সময় পেলেই চলে আসি।”
ডালিম মিয়া নামে এক পর্যটক বলেন, “মূলত ইউটিউবে এই বাগানের কথা শুনেছিলাম। সূর্যমুখী দেখার তীব্র ইচ্ছা ছিল তাই পরিবার নিয়ে বাগানে চলে আসছি। পুরো বাগান ঘুরে দেখলাম অপরূপ এক সৌন্দর্য সূর্যমুখী ফুলের মাঝে খুঁজে পেয়েছি। বাগানের মাঝখানে তো নিজেরা হারিয়ে যাচ্ছি। এত সুন্দর ফুল আমরা কখনো আগে দেখিনি। অনেক রকমভাবে ছবি তুলছি। আসল পরিবারের সাথে এই জায়গায় সময়টা অনেক ভালোই যাচ্ছে। পাশাপাশি সূর্যমুখী তেল অনেক পুষ্টিকর। আমাদের মনে হচ্ছে সূর্যমুখী ফুল সবদিক দিয়ে উপকারী জিনিস।”
নরসিংদী জেলা কৃষি কর্মকর্তা মো.
সরিষার তেলের পাশাপাশি সূর্যমুখীর তেলও ব্যবহার শুরু করেছেন। এছাড়া বর্তমানে সূর্যমুখী বাগান দর্শনীয় স্থান হিসেবে বেছে নিয়েছেন স্থানীয় ভ্রমণ পিপাসুরা। তবে এর চাষাবাদ নরসিংদীতে ব্যাপক না হলেও দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সূর্যমুখী বাগান করে ভোজ্য তেলের পাশাপাশি স্থানীয় বিনোদনকেন্দ্র হিসেবে দর্শনার্থীদের আনন্দ দানের মাধ্যমে কৃষকের অতিরিক্ত অর্থ আয় হবে। আমরা কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করছে বলে জানান তিনি।
ঢাকা/হৃদয়/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব গ ন কর র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
সিলেট, ময়মনসিংহ নাকি অন্য কোনো দল—কারা হবে চ্যাম্পিয়ন
আরও একবার শিরোপার হাতছানি সিলেট বিভাগের সামনে। জাতীয় ক্রিকেট লিগের গত আসরেই প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল তারা। এবারও শেষ রাউন্ডের ম্যাচে বরিশাল বিভাগের মুখোমুখি হওয়ার আগে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে আছে দলটি। এই ম্যাচ জিতলে এবারের জাতীয় লিগের ট্রফিটাও যাবে তাদের ঘরে। হেরে গেলে বা ম্যাচ ড্র করলে শুরু হবে পয়েন্ট তালিকার জটিল হিসাব–নিকাশ।
এমন ‘বাঁচা–মরার’ ম্যাচে সিলেটের জন্য ধাক্কা হয়ে এসেছে চোট ও ব্যক্তিগত কারণে তিন পেসার রেজাউর রহমান, খালেদ আহমেদ ও ইবাদত হোসেনের খেলতে না পারা। তবে তাঁদের অভাব পূরণ করার সামর্থ্য বাকি পেসারদের আছে বলে মনে করেন সিলেটের কোচ রাজিন সালেহ। প্রথম আলোকে কাল তিনি জানালেন দলের সাফল্যের রহস্যও, ‘তরুণ অথবা সিনিয়র, আমাদের দলের প্রতিটা খেলোয়াড় নিবেদিত। আমাদের দলের ভেতরের যে পরিবেশ, প্রতিটা ছেলেই সিলেটকে ধারণ করে।
শেষ রাউন্ডে সিলেটের পা হড়কালে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে জোরালো হবে ময়মনসিংহের। ঢাকা মেট্রোর পরিবর্তে এবারের আসরেই প্রথমবারের মতো জাতীয় লিগে খেলছে ময়মনসিংহ। মাত্র এক দিনের অনুশীলনেই দলটিকে টুর্নামেন্ট খেলতে নামতে হয়েছিল।
শীর্ষে থাকা সিলেটের চেয়ে দুই পয়েন্ট পিছিয়ে থেকে শেষ রাউন্ডে রাজশাহীর বিপক্ষে খেলতে নামবে ময়মনসিংহ। দলটির এবারের যাত্রা নিয়ে কোচ নাজমুল হোসেন বলেন, ‘হোটেলে ও মাঠে অনুশীলনের সময় একসঙ্গে বেশি সময় কাটিয়ে খেলোয়াড়দের মধ্যে বন্ধন তৈরির চেষ্টা করেছি। ওদের ভালো ও খারাপ সময়ে সমর্থন দিয়েছি। দলের এ বন্ধনটাই আমাদের শক্তি।’
এই দুই দলের বাইরেও ৬ ম্যাচে দুটি করে জয় পাওয়া রংপুর, খুলনা, চট্টগ্রাম ও বরিশালের সামনেও শিরোপা জয়ের সুযোগ আছে। রোমাঞ্চ নিয়ে তাই অপেক্ষায় জাতীয় লিগের শেষ রাউন্ড।
এনসিএলের পয়েন্ট তালিকাপয়েন্টের হিসাব :
ম্যাচ জিতলে ৮ পয়েন্ট
ড্র করলে প্রতি দল ২ পয়েন্ট
টাই করলে প্রতি দল ৪ পয়েন্ট
বোনাস পয়েন্ট হিসাব:
ইনিংস ব্যবধানে জিতলে ১ পয়েন্ট
১০ উইকেটে জিতলে ১ পয়েন্ট
পরপর দুই ম্যাচ জিতলে ১ পয়েন্ট
টানা ৩ ম্যাচ জিতলে ২ পয়েন্ট
টানা ৪ ম্যাচ জিতলে ৩ পয়েন্ট
টানা ৫ ম্যাচ জিতলে ৪ পয়েন্ট
টানা ৬ ম্যাচ জিতলে ৫ পয়েন্ট
পয়েন্ট সমান হলে কী দেখা হবে?
* সবচেয়ে বেশি জয়
*সবচেয়ে কম হার
*সমান হওয়া দলের বিপক্ষে মুখোমুখি লড়াইয়ে কে বেশি পয়েন্ট পেয়েছে
*প্রতিপক্ষের বেশি উইকেট নিতে পেরেছে কোন দল
*সবচেয়ে বেশি রান করেছে কারা
শেষ রাউন্ডে কে কার মুখোমুখিআরও পড়ুনঅস্ট্রেলিয়াতেও ১ হাজার রান, যে রেকর্ডে রুটের ওপরে শুধুই একজন০৫ ডিসেম্বর ২০২৫