দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মেডিকেল ইভেন্ট ‘ম্যানেজমেন্ট অ্যাপ্রোচ অব কমন ডারমাটোলজিক ইমার্জেন্সিস’ গত শুক্রবার রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় ৩০০ জন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ অংশগ্রহণ করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন অধ্যাপক এ জেড এম মাইদুল ইসলাম এবং অধ্যাপক সৈয়দ আতিকুল হক। উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক রোবেদ আমিন, অধ্যাপক এম এন হুদা, অধ্যাপক শহিদুল্লাহ সিকদার, অধ্যাপক কামরুল হাসান জায়গীরদার, অধ্যাপক শহিদুল্লাহ, অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, অধ্যাপক নার্গিস আক্তার, অধ্যাপক মাসুদা খাতুন, অধ্যাপক শায়লা আহমেদসহ দেশের প্রখ্যাত অনেক চিকিৎসক।

অনুষ্ঠানে দেশের সাতজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সাতটি ভিন্ন ত্বকরোগ–সংক্রান্ত জরুরি বিষয়ের ব্যবস্থাপনা চিকিৎসা সম্পর্কে আলোচনা করেন। তবে দিনের সবচেয়ে আলোচিত অংশ ছিল কবির অ্যান্ড হাসিবস ডায়গনস্টিক অ্যাটলাস: কমন স্কিন ডিজিজেস অব বাংলাদেশ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন। বইটির লেখকেরা হলেন বাংলাদেশের খ্যাতনামা চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এম ইউ কবির চৌধুরী ও অধ্যাপক হাসিবুর রহমান।

বইটি বহু বছরের রোগীদের ছবি সংগ্রহ ও অভিজ্ঞতার সমন্বয়ে তৈরি করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিদেশি স্ট্যান্ডার্ড টেক্সট বুকগুলো বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার মানুষের স্কিন ডিজিজের বাস্তব চিত্র সঠিকভাবে প্রতিফলিত করতে পারে না। তাই এতে ব্যবহার করা হয়েছে দেশীয় রোগীদের বাস্তব ছবি।

লেখক অধ্যাপক এম ইউ কবির চৌধুরী বলেন, ‘বিদেশি অ্যাটলাসের ছবি সাদা চামড়ার রোগ দেখায়, যা বাংলাদেশের মানুষের জন্য প্রযোজ্য নয়। তাই আমাদের দেশীয় অ্যাটলাসের প্রয়োজন ছিল।’

অধ্যাপক হাসিবুর রহমান জানান, বইটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে এর ছবি দেখে সহজেই শনাক্ত করা যায় এবং একই রোগের বৈচিত্র্যময় প্রকাশ হতে পারে যা এখানে সন্নিবেশ করা হয়েছে। এটি চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বইয়ের মোড়ক উন্মোচনের সময় জ্যেষ্ঠ চিকিৎসকেরা বইটি সম্পর্কে তাঁদের মতামত শেয়ার করেন। এ সময় চর্মরোগ বিশেষজ্ঞরা ছাড়াও মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক এম এ মান্নান (এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট), অধ্যাপক আখতার উন নাহার (মাইক্রোবায়োলজিস্ট), অধ্যাপক পারভিন শাহিদা আক্তার (অনকোলজিস্ট) ও অধ্যাপক নাজমা পারভীন আনসারী (প্যাথোলজিস্ট)।

অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে অনলাইনভিত্তিক মেডিকেল প্লাটফর্ম ডারবাং ও বিডি ফিজিশিয়ানস। অনুষ্ঠানটির পরিচালনায় ছিলেন বিশিষ্ট চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ এহসানুজ্জামান খান।

সার্বিক সহযোগিতা করেছে ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। এসকেএফের পক্ষ থেকে সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন মহাব্যবস্থাপক (বিপণন) মাসুদ মহিউদ্দিন খসরু। তিনি বলেন, এসকেএফ সব সময় চেষ্টা করে সবচেয়ে গুণগত মানসম্পন্ন ওষুধ বাংলাদেশের মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে। ভবিষ্যতে এ ধরনের অনুষ্ঠানগুলোয় এসকেএফ সব সময় চিকিৎসকদের পাশে থাকবে বলে জানান তিনি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন চ ক ৎসক

এছাড়াও পড়ুন:

পাকিস্তানের সঙ্গে চীনের তামাশা

মহান মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায় পর্যন্ত পাকিস্তানিরা আশা করেছিল, চীন হয়তো তাদের পক্ষ নিয়ে যুদ্ধে অংশ নেবে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জারের চীন সফরে মধ্যস্থতা করে তাদের সেই আশা আরও প্রবল হয়েছিল। কিন্তু সে আশায় গুড়েবালি।

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেছেন, পাকিস্তানের প্রধান লক্ষ্য ও শেষ পর্যন্ত প্রবল আশা ছিল, যা তারা প্রকাশ্যে দেখাচ্ছিল, তা হলো চীন শেষ পর্যন্ত তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসবে। কিন্তু এটি ছিল একটি তামাশা। কারণ, চীনারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তারা সামরিকভাবে যুদ্ধে হস্তক্ষেপ করবে না। সব ধরনের কূটনৈতিক সহায়তা দেবে।

রোববার দ্য ডেইলি স্টার মিলনায়তনে ‘মুক্তিযুদ্ধের বৈশ্বিক ইতিহাস’ শীর্ষক আলোচনায় অধ্যাপক রেহমান সোবহান এই মন্তব্য করেন।

ডেইলি স্টার ইতিহাসের বিভিন্ন বিষয় ও ব্যক্তির অবদান তুলে ধরতে ‘ইতিহাস আড্ডা’ শীর্ষক ধারাবাহিক আলোচনার আয়োজন করেছে। এটি ছিল সপ্তম আয়োজন। কবি ইমরান মাহফুজের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

অনুষ্ঠানের নির্ধারিত আলোচক ছিলেন অধ্যাপক রেহমান সোবহান, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান ও অধ্যাপক নাভিন মুর্শিদ। অসুস্থতার কারণে আরেক আলোচক গবেষক–সাংবাদিক মঈদুল হাসান আসতে পারেননি।

চীনের তামাশা, যুক্তরাষ্ট্রের নাটক

অধ্যাপক রেহমান সোবহান মুক্তিযুদ্ধকালে তাঁর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও ভূমিকার পরিপ্রেক্ষিতে দীর্ঘ আলোচনা করেন। তিনি বলেন, চীন পাকিস্তানের সঙ্গে যে তামাশা করছিল, সেই নাটক সাজিয়ে ছিল যুক্তরাষ্ট্র। চীনকে উসকে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল, যেন তারা যুদ্ধে যোগ দেয়। চীন যখন যুদ্ধে আসছিল না, তখন যুক্তরাষ্ট্র তাদের সপ্তম নৌবহর বঙ্গোপসাগরে পাঠানোর হুমকি দেয়। কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে তাদের নৌবহরকে মার্কিন সপ্তম নৌবহরের গতিবিধি লক্ষ করতে নির্দেশ দিয়েছিল। সপ্তম নৌবহর আর আসেনি। এর পরিণতিতেই নিয়াজির চূড়ান্ত আত্মসমর্পণ এবং স্বাধীন বাংলাদেশের উত্থান।

‘মুক্তিযুদ্ধের বৈশ্বিক ইতিহাস’ শীর্ষক ইতিহাস আড্ডায় অধ্যাপক রেহমান সোবহান। রোববার দ্য ডেইলি স্টার মিলনায়তনে

সম্পর্কিত নিবন্ধ