অস্ট্রেলিয়ার সিডনির জনপ্রিয় বন্ডাই সমুদ্রসৈকতে আজ রোববার সন্ধ্যায় দুই বন্দুকধারী এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ছিলেন। এ সময় এক বন্দুকধারীকে নিরস্ত্র করেছেন এক পথচারী। তাঁর সাহসিকতার কারণে আরও মানুষ গুলির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন। দারুণ সাহসী এই ব্যক্তির নাম আহমেদ আল আহমেদ।

অস্ট্রেলিয়ার সম্প্রচারমাধ্যম সেভেন নিউজকে আহমেদের চাচাতো ভাই মুস্তফা এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, ৪৩ বছর বয়সী আহমেদ দুই সন্তানের জনক। পেশায় ফল ব্যবসায়ী আহমেদ সিডনির বাসিন্দা। বন্দুকের ব্যবহার সম্পর্কে তাঁর কোনো ধারণাই নেই। ঘটনার সময় তিনি ওই বন্দুকধারীর অদূরে ছিলেন।

অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস (এনএসডব্লিউ) রাজ্যের সেন্ট জর্জ হাসপাতালের বাইরে সেভেন নিউজের সঙ্গে কথা বলছিলেন মুস্তফা। তিনি জানান, আহমেদের গায়েও দুটি গুলি লেগেছে। একটি গুলি বাহুতে, আরেকটি হাতের আঙুলে লেগেছে। তাঁর অস্ত্রোপচার করতে হচ্ছে।

মুস্তফা বলেন, ‘তিনি (আহমেদ) হাসপাতালে আছেন। ভেতরে কী হচ্ছে, আমরা তা ঠিক জানি না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আশা করি তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন। তিনি শতভাগ একজন নায়ক।’

সিডনি মর্নিং হেরাল্ড ঘটনাস্থলের একটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যায়, কালো শার্ট ও সাদা প্যান্ট পরা এক বন্দুকধারী ক্যাম্পবেল প্যারেড কার পার্কিংয়ের পাশে দুটি ময়লা ঝুড়ির পাশে দাঁড়িয়ে কাছের সমুদ্রসৈকতে থাকা মানুষের দিকে গুলি ছুড়ছেন। তাঁর সঙ্গে ঝোলানো একটি কালো ব্যাগ আছে। এ সময় সাদা এবং কালো প্যান্ট পরা এক ব্যক্তি পার্কিংয়ে থাকা গাড়ির ফাঁক দিয়ে বন্দুকধারীর দিকে সন্তর্পণে এগিয়ে যান। তিনি পেছন থেকে বন্দুকধারীর গলায় হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরেন। ধস্তাধস্তি শুরু হয়। তখন দ্বিতীয় এক পথচারীও বন্দুকধারীকে নিরস্ত্র করতে এগিয়ে যান। কিন্তু তিনি ধস্তাধস্তিতে যুক্ত হওয়ার আগেই বন্দুকধারী মাটিতে পড়ে যান। বন্দুকটিও মাটিতে পড়ে যায়। বন্দুকটি প্রথম পথচারী নিয়ে নেন। এরপর তা ওই বন্দুকধারীর দিকে তাক করেন।

বন্দুকধারীর কাছ থেকে অস্ত্র কেড়ে নেওয়া আহমেদ আল আহমেদকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে দ্য সিডনি মর্নিং হেরাল্ড থেকে স্ক্রিনশট.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আহম দ

এছাড়াও পড়ুন:

পাকিস্তানের সঙ্গে চীনের তামাশা

মহান মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায় পর্যন্ত পাকিস্তানিরা আশা করেছিল, চীন হয়তো তাদের পক্ষ নিয়ে যুদ্ধে অংশ নেবে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জারের চীন সফরে মধ্যস্থতা করে তাদের সেই আশা আরও প্রবল হয়েছিল। কিন্তু সে আশায় গুড়েবালি।

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেছেন, পাকিস্তানের প্রধান লক্ষ্য ও শেষ পর্যন্ত প্রবল আশা ছিল, যা তারা প্রকাশ্যে দেখাচ্ছিল, তা হলো চীন শেষ পর্যন্ত তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসবে। কিন্তু এটি ছিল একটি তামাশা। কারণ, চীনারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তারা সামরিকভাবে যুদ্ধে হস্তক্ষেপ করবে না। সব ধরনের কূটনৈতিক সহায়তা দেবে।

রোববার দ্য ডেইলি স্টার মিলনায়তনে ‘মুক্তিযুদ্ধের বৈশ্বিক ইতিহাস’ শীর্ষক আলোচনায় অধ্যাপক রেহমান সোবহান এই মন্তব্য করেন।

ডেইলি স্টার ইতিহাসের বিভিন্ন বিষয় ও ব্যক্তির অবদান তুলে ধরতে ‘ইতিহাস আড্ডা’ শীর্ষক ধারাবাহিক আলোচনার আয়োজন করেছে। এটি ছিল সপ্তম আয়োজন। কবি ইমরান মাহফুজের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

অনুষ্ঠানের নির্ধারিত আলোচক ছিলেন অধ্যাপক রেহমান সোবহান, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান ও অধ্যাপক নাভিন মুর্শিদ। অসুস্থতার কারণে আরেক আলোচক গবেষক–সাংবাদিক মঈদুল হাসান আসতে পারেননি।

চীনের তামাশা, যুক্তরাষ্ট্রের নাটক

অধ্যাপক রেহমান সোবহান মুক্তিযুদ্ধকালে তাঁর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও ভূমিকার পরিপ্রেক্ষিতে দীর্ঘ আলোচনা করেন। তিনি বলেন, চীন পাকিস্তানের সঙ্গে যে তামাশা করছিল, সেই নাটক সাজিয়ে ছিল যুক্তরাষ্ট্র। চীনকে উসকে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল, যেন তারা যুদ্ধে যোগ দেয়। চীন যখন যুদ্ধে আসছিল না, তখন যুক্তরাষ্ট্র তাদের সপ্তম নৌবহর বঙ্গোপসাগরে পাঠানোর হুমকি দেয়। কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে তাদের নৌবহরকে মার্কিন সপ্তম নৌবহরের গতিবিধি লক্ষ করতে নির্দেশ দিয়েছিল। সপ্তম নৌবহর আর আসেনি। এর পরিণতিতেই নিয়াজির চূড়ান্ত আত্মসমর্পণ এবং স্বাধীন বাংলাদেশের উত্থান।

‘মুক্তিযুদ্ধের বৈশ্বিক ইতিহাস’ শীর্ষক ইতিহাস আড্ডায় অধ্যাপক রেহমান সোবহান। রোববার দ্য ডেইলি স্টার মিলনায়তনে

সম্পর্কিত নিবন্ধ