ঘোষণাপত্র ফলপ্রসূ করতে আরও আলোচনার সিদ্ধান্ত হয়েছে: আসিফ নজরুল
Published: 16th, January 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, জুলাই ঘোষণাপত্রের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে। ঘোষণাপত্র ফলপ্রসূ করতে আরও আলোচনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কাজটি এগিয়ে নেওয়ার জন্য কমিটিও গঠন করা হতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত নিয়ে সর্বসম্মতিক্রমে ডকুমেন্টেড করতে সময় নেওয়া হবে। এ বিষয়ে দ্রুত একটি কর্মকৌশল ঠিক করা হবে।
আজ বৃহস্পতিবার জুলাই ঘোষণাপত্রের খসড়া নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও অংশীজনের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা ড.
অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র প্রণয়নের বিষয়ে সবাই একমত হয়েছেন। সবাই বলেছেন, এ ধরনের একটা ঘোষণাপত্র করার দরকার আছে। তবে এখানে অনেক সাজেশন (পরামর্শ) এসেছে। মোটাদাগে হলো- ঘোষণাপত্রে সবার অবদান বলতে হবে, ধারাবাহিকতা উল্লেখ করতে হবে। ঘোষণাপত্রের রাজনৈতিক বা আইনি প্রকৃতি কী হবে, সেটা স্পষ্ট করতে হবে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের রাজনৈতিক শক্তি ও ছাত্র-জনতা সবার মধ্যে আলোচনা করে সর্বসম্মতভাবে এই ঘোষণাপত্র প্রণয়নের ওপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানান উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, ‘এটার জন্য যতটা সময় লাগা প্রয়োজন, ততটা সময় নেওয়া যেতে পারে। তবে অযথা কালবিলম্ব বা সময়ক্ষেপণ যেন না হয়। সবাই একমত পোষণ করেছে, সবার ঐকমত্যের ভিত্তিতে আরও নিবিড় আলোচনার মাধ্যমে এ ধরনের ঘোষণাপত্র হওয়া উচিত।’
ঘোষণাপত্র প্রকাশের সময়সীমা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘সব রাজনৈতিক দল ও শিক্ষার্থীদের সংগঠনের যারা অংশ নিয়েছেন, সবাই সর্বসম্মতিক্রমে একটি ঘোষণাপত্র তৈরি করার কথা বলেছেন। যত সময় লাগুক, তা যেন নেওয়া হয়। তাড়াহুড়া যেন না করা হয়, আবার অযথা কালক্ষেপণ যেন না করা হয়। এই লক্ষ্যে অনেকে প্রস্তাব করেছেন আলোচনা করার জন্য যেন একটি কমিটি গঠন করা হয়। আমরা এই প্রস্তাবগুলো দ্রুত বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আইন উপদ ষ ট ন উপদ ষ ট র জন ত ক ত হয় ছ
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।