পটুয়াখালীর বাউফলে দলিল নিবন্ধনে কমিশনের নামে দলিলপ্রতি নির্দিষ্ট হারে উৎকোচ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। কয়েকজন ভুক্তভোগী জানান, দলিল লেখকরা উৎকোচের অর্থ তুলে পেশকার নাসির উদ্দিনের মাধ্যমে উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার কাজী নজরুল ইসলামের কাছে পৌঁছে দেন। নাসির উদ্দিনের দাবি, উৎকোচ নয়, আপ্যায়ন বাবদ দলিল লেখকদের থেকে সামান্য অর্থ নেওয়া হয়। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বছরে প্রায় ১২০ কোটি টাকা মূল্যের দলিল রেজিস্ট্রি হয় বাউফল সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে।  এ অর্থের ৮ পার্সেন্ট হিসাবে প্রায় ১৫ কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হয়। অভিযোগ উঠেছে,  ১ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা মূল্যের দলিল রেজিস্ট্রি করতে ২ শতাংশ হারে বাড়তি অর্থ নেন দলিল লেখকরা। ১০ লাখ বা এর বেশি মূল্যের দলিল নিবন্ধনে গ্রাহককে ১ শতাংশ হারে উৎকোচ দিতে হয়। 

কয়েকজন দলিল লেখকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকারি স্ট্যাম্প চালান ব্যাংকের মাধ্যমে দিতে হয়। দলিলের পর্চা, দাখিলা, পরিচিত দস্তখত দিয়ে দলিল নিবন্ধন করতে পেশকারের মাধ্যমে এজলাসে তোলেন তারা। পরে সাব-রেজিস্ট্রার দলিল খতিয়ে দেখে তাঁর স্বাক্ষর দেন। পেশকার দলিল লেখকদের মধ্যে কে কয়টা এবং কত টাকার দলিল দাখিল করেন তার হিসাব রাখেন। কত টাকার দলিল তার একটি  স্লিপ পেশকারকে দেন দলিল লেখকরা। পরে তারা হিসাব অনুযায়ী উৎকোচের অর্থ পেশকারের হাতে তুলে দেন। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দলিল লেখক জানান, সাব-রেজিস্ট্রার দলিল সঠিকভাবে দেখভাল করলে অধিকাংশ দলিল নিবন্ধন করা সম্ভব নয়। কারণ অনেক দলিলে দাগ ও খতিয়ানে সমস্যা থাকে। ঝামেলা এড়াতে তারা পেশকারের সিদ্ধান্তকেই মেনে নেন। 

এ বিষয়ে বাউফল দলিল লেখক সমিতির সভাপতি জালাল আহম্মেদ বলেন, উপজেলায় ৭৩ জন দলিল লেখক ও ১০ জন স্ট্যাম্প ভেন্ডর রয়েছেন। তারা দলিল নিবন্ধন বাবত বছরে ১৫ কোটি ১৬ লাখ টাকা সরকারকে রাজস্ব এনে দেন ব্যাংকের মাধ্যমে। তারা জরাজীর্ণ একটি টিনশেড ঘরে বসে দলিল লেখেন। বর্ষা মৌসুমে তাদের কাগজপত্র ভিজে যায়। দলিল লেখকদের সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের পেশকারদের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে হয়। দলিল সম্পাদনে অনেক ঝামেলা এড়াতে পেশকাররা যে সিদ্ধান্ত দেন, দলিল লেখকদের তা মানতে হয়। 

এ বিষয়ে বাউফল সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের পেশকার নাসির উদ্দিন জানান, দলিল মূল্যের ১ বা ২ শতাংশ হারে উৎকোচ দেওয়ার অভিযোগ সত্য নয়। দলিল সম্পাদনের জন্য চা-বিস্কুট খেতে আপ্যায়ন বাবদ কিছু খরচা দেন দলিল লেখকরা। 

দলিল নিবন্ধনে উৎকোচ নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বাউফল উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার কাজী নজরুল ইসলাম মোবাইল ফোনে এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘এসব পার্সেন্টেজের আলাপ রাস্তায় হয়, অফিসে নয়। প্রায় ১২০ কোটি টাকার দলিল রেজিস্ট্রিতে সরকারি কোষাগারে প্রায় ১৫ কোটি টাকা জমা দিয়েছি। অফিসে আসেন চায়ের দাওয়াত রইল।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: দল ল ল খ ক র দল ল ন দল ল ল দল ল র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

গুগলের সার্কেল টু সার্চে আসছে নতুন দুই সুবিধা

অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমে চলা স্মার্টফোনে দ্রুত নির্দিষ্ট তথ্য খুঁজে দিতে গত বছর ‘সার্কেল টু সার্চ’-সুবিধা চালু করে গুগল। এ সুবিধা কাজে লাগিয়ে ফোনে ভিডিও দেখার সময় বিভিন্ন দৃশ্যে থাকা পণ্যের ছবি নির্বাচন করে সে বিষয়ে সরাসরি গুগলে সার্চের ফলাফল জানা যায়। অর্থাৎ ভিডিওতে থাকা যেকোনো ব্যক্তির চশমা সার্কেল করলে নিচে চশমাটি-সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য গুগল সার্চের মাধ্যমে দেখার সুযোগ মিলে থাকে। ব্যবহারকারীদের দ্রুত বিভিন্ন তথ্য জানার সুযোগ দিতে সার্কেল টু সার্চে নতুন দুই সুবিধা যুক্ত করতে যাচ্ছে গুগল।

জানা গেছে, গুগল অ্যাপের সর্বশেষ বেটা সংস্করণ বিশ্লেষণ করে সার্কেল টু সার্চে নতুন দুই সুবিধা যুক্তের বিষয়টি শনাক্ত করা হয়েছে। গানের তালিকা সংরক্ষণ এবং অনুবাদপ্রক্রিয়া আরও সহজ করতে সক্ষম সুবিধাগুলো সবার জন্য উন্মুক্ত না হলেও পরীক্ষামূলকভাবে কাজ করছে।

সার্কেল টু সার্চ ব্যবহার করে গান শনাক্তের সময় পর্দায় বর্তমানে একটি ছোট মিউজিক আইকন দেখা যায়। কিন্তু নতুন সুবিধাগুলো চালু হলে মিউজিক আইকনে যুক্ত হবে একটি অতিরিক্ত বাটন, যা দেখতে অনেকটা ঘড়ির মতো। এই নতুন আইকনের মাধ্যমে সরাসরি প্রবেশ করা যাবে ‘রিসেন্ট সং সার্চ’ নামের একটি মেনুতে। ফলে ব্যবহারকারী সহজেই আগে শনাক্ত করা গানের তালিকা দেখতে পারবেন। শুধু তা-ই নয়, এখানে গানের শিরোনাম, শিল্পীর নাম এবং অ্যালবামের ছবিও দেখা যাবে।

সার্কেল টু সার্চের আরেকটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসছে অনুবাদ সুবিধায়। বর্তমানে কোনো লেখাকে চিহ্নিত করার পর তা অনুবাদ করতে চাইলে ব্যবহারকারীকে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া পুনরায় শুরু করতে হয়। নতুন সুবিধা চালু হলে সার্কেল টু সার্চে কোনো লেখা ট্যাপ করলেই সঙ্গে সঙ্গে অনুবাদের বাটন পর্দায় দেখা যাবে।

সূত্র: অ্যান্ড্রয়েড পুলিশ

সম্পর্কিত নিবন্ধ