জমির দলিল নিবন্ধন করতে উৎকোচ নেওয়ার অভিযোগ
Published: 23rd, January 2025 GMT
পটুয়াখালীর বাউফলে দলিল নিবন্ধনে কমিশনের নামে দলিলপ্রতি নির্দিষ্ট হারে উৎকোচ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। কয়েকজন ভুক্তভোগী জানান, দলিল লেখকরা উৎকোচের অর্থ তুলে পেশকার নাসির উদ্দিনের মাধ্যমে উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার কাজী নজরুল ইসলামের কাছে পৌঁছে দেন। নাসির উদ্দিনের দাবি, উৎকোচ নয়, আপ্যায়ন বাবদ দলিল লেখকদের থেকে সামান্য অর্থ নেওয়া হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বছরে প্রায় ১২০ কোটি টাকা মূল্যের দলিল রেজিস্ট্রি হয় বাউফল সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে। এ অর্থের ৮ পার্সেন্ট হিসাবে প্রায় ১৫ কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হয়। অভিযোগ উঠেছে, ১ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা মূল্যের দলিল রেজিস্ট্রি করতে ২ শতাংশ হারে বাড়তি অর্থ নেন দলিল লেখকরা। ১০ লাখ বা এর বেশি মূল্যের দলিল নিবন্ধনে গ্রাহককে ১ শতাংশ হারে উৎকোচ দিতে হয়।
কয়েকজন দলিল লেখকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকারি স্ট্যাম্প চালান ব্যাংকের মাধ্যমে দিতে হয়। দলিলের পর্চা, দাখিলা, পরিচিত দস্তখত দিয়ে দলিল নিবন্ধন করতে পেশকারের মাধ্যমে এজলাসে তোলেন তারা। পরে সাব-রেজিস্ট্রার দলিল খতিয়ে দেখে তাঁর স্বাক্ষর দেন। পেশকার দলিল লেখকদের মধ্যে কে কয়টা এবং কত টাকার দলিল দাখিল করেন তার হিসাব রাখেন। কত টাকার দলিল তার একটি স্লিপ পেশকারকে দেন দলিল লেখকরা। পরে তারা হিসাব অনুযায়ী উৎকোচের অর্থ পেশকারের হাতে তুলে দেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দলিল লেখক জানান, সাব-রেজিস্ট্রার দলিল সঠিকভাবে দেখভাল করলে অধিকাংশ দলিল নিবন্ধন করা সম্ভব নয়। কারণ অনেক দলিলে দাগ ও খতিয়ানে সমস্যা থাকে। ঝামেলা এড়াতে তারা পেশকারের সিদ্ধান্তকেই মেনে নেন।
এ বিষয়ে বাউফল দলিল লেখক সমিতির সভাপতি জালাল আহম্মেদ বলেন, উপজেলায় ৭৩ জন দলিল লেখক ও ১০ জন স্ট্যাম্প ভেন্ডর রয়েছেন। তারা দলিল নিবন্ধন বাবত বছরে ১৫ কোটি ১৬ লাখ টাকা সরকারকে রাজস্ব এনে দেন ব্যাংকের মাধ্যমে। তারা জরাজীর্ণ একটি টিনশেড ঘরে বসে দলিল লেখেন। বর্ষা মৌসুমে তাদের কাগজপত্র ভিজে যায়। দলিল লেখকদের সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের পেশকারদের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে হয়। দলিল সম্পাদনে অনেক ঝামেলা এড়াতে পেশকাররা যে সিদ্ধান্ত দেন, দলিল লেখকদের তা মানতে হয়।
এ বিষয়ে বাউফল সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের পেশকার নাসির উদ্দিন জানান, দলিল মূল্যের ১ বা ২ শতাংশ হারে উৎকোচ দেওয়ার অভিযোগ সত্য নয়। দলিল সম্পাদনের জন্য চা-বিস্কুট খেতে আপ্যায়ন বাবদ কিছু খরচা দেন দলিল লেখকরা।
দলিল নিবন্ধনে উৎকোচ নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বাউফল উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার কাজী নজরুল ইসলাম মোবাইল ফোনে এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘এসব পার্সেন্টেজের আলাপ রাস্তায় হয়, অফিসে নয়। প্রায় ১২০ কোটি টাকার দলিল রেজিস্ট্রিতে সরকারি কোষাগারে প্রায় ১৫ কোটি টাকা জমা দিয়েছি। অফিসে আসেন চায়ের দাওয়াত রইল।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: দল ল ল খ ক র দল ল ন দল ল ল দল ল র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
আফগানিস্তানে মধ্যরাতে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাত
আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় হিন্দুকুশ অঞ্চলে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। যুক্তরাষ্ট্র ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) এ তথ্য জানিয়েছে। দুই মাস আগেই দেশটিতে এক ভূমিকম্পে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।
ইউএসজিএস জানায়, রোববার দিবাগত রাতে আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ অঞ্চলে মাজার-ই-শরিফ শহরের কাছে খোলম এলাকায় ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। স্থানীয় সময় রাত ১২টা ৫৯ মিনিটে আঘাত হানা এই ভূমিকম্পের গভীরতা প্রথমে ১০ কিলোমিটার বলা হয়। পরে তা সংশোধন করে গভীরতা ২৮ কিলোমিটার বলে জানায় সংস্থাটি।
আফগানিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে।
উল্লেখ্য, গত ৩১ আগস্ট আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্পটি আঘাত হেনেছিল। দেশটির পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানা রিখটার স্কেলে ৬ মাত্রার ওই ভূমিকম্পে ২ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারান।
আরও পড়ুনআফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ২২০৫, খোলা আকাশের নিচে মানুষ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫আফগানিস্তানে প্রায়শই ভূমিকম্প আঘাত হানে। বিশেষ করে হিন্দুকুশ পর্বতমালা বরাবর, যেখানে ইউরেশীয় এবং ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটগুলো মিলিত হয়েছে।
ব্রিটিশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার ভূমিকম্পবিদ ব্রায়ান ব্যাপটির দেওয়া তথ্য মতে, ১৯০০ সাল থেকে উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তানে রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রার বেশি ১২টি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
আরও পড়ুন৩৫ বছরে আফগানিস্তানে ভয়াবহ যত ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫