বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি নায়করাজ রাজ্জাক। চলচ্চিত্র শিল্পে প্রায় অর্ধশতাব্দী পার করেছেন। এই সময়ে ভক্তদের কাছে হয়ে উঠেন ‘নায়করাজ’।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) এই কিংবদন্তির জন্মদিন। বেঁচে থাকলে আজ ৮৩ বছরে পা রাখতেন রাজ্জাক। ২০১৭ সালের ২১ আগস্ট সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান তিনি।
কখনো নীল আকাশের নিচে হেঁটেছেন রোমান্টিক নায়ক হয়ে, কখনো হাজির হয়েছেন পিতার বেশে, কখনো বা আবার হয়েছেন সংগ্রামী যোদ্ধা। ভিন্ন ভিন্ন চরিত্র পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে কোনো জুড়ি ছিল না তার।
আরো পড়ুন:
‘ঈশ্বরের কাছে যাওয়ার আগে, আমি আমার বাবা-মায়ের কাছে যাই’
ঢাকায় নায়িকাকে অপহরণ চেষ্টা, গাড়ি থেকে লাফ দিয়ে রক্ষা
এবার রাজ্জাকের জন্মদিন ঘিরে বিশেষ কোনো আয়োজন থাকছে না বলে জানিয়েছেন তার পরিবারের সদস্যরা। অভিনেতার ছোট ছেলে সম্রাট জানান, তার বাবার কবর জিয়ারত, কোরআন তেলাওয়াত ও দোয়া মাহফিলের মধ্য দিয়ে জন্মদিন পালন করবেন তারা।
১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি ভারতের কলকাতার একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন রাজ্জাক। চলচ্চিত্রে নায়করাজ নামে পরিচিত হলেও তার পারিবারিক নাম আবদুর রাজ্জাক। কলকাতার থিয়েটারে অভিনয় করার মাধ্যমে রাজ্জাক নিজের অভিনয় জীবন শুরু করেন।
১৯৫৯ সালে ভারতের মুম্বাইয়ের ফিল্মালয়তে সিনেমার ওপর পড়াশোনা ও ডিপ্লোমা শেষ করেন রাজ্জাক। এরপর কলকাতায় ফিরে ‘শিলালিপি’ ও আরো একটি সিনেমায় অভিনয় করেন। ১৯৬৪ সালে কলকাতায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার কবলে পড়ে রাজ্জাক তার পরিবারপরিজন নিয়ে ঢাকায় চলে আসতে বাধ্য হন।
ঢাকায় এসেও চলচ্চিত্রের নায়ক হওয়ার সুযোগ খুঁজতে থাকেন রাজ্জাক। প্রথমে এতে সফলতা না পেয়ে ‘উজালা’ সিনেমায় পরিচালক কামাল আহমেদের সহকারী হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি। ষাটের দশকে সালাউদ্দিন পরিচালিত ‘তেরো নম্বর ফেকু ওস্তাগার লেন’ সিনেমায় একটি পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে ঢাকায় তার অভিনয় জীবনের সূচনা।
এরপর প্রতিভাবন নির্মাতা জহির রায়হানের ‘বেহুলা’ সিনেমায় রাজ্জাককে লখিন্দরের ভূমিকায় অভিনয় করার সুযোগ করে দেন। আর এই সিনেমার মাধ্যমে প্রথম নায়ক হিসেবে অভিনয় শুরু তার। ‘বেহুলা’ সিনেমায় সুচন্দার সঙ্গে জুটি বেঁধে নায়ক হিসেবে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেন রাজ্জাক। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে।
সত্তর ও আশির দশকে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে ওঠেন রাজ্জাক। ক্যারিয়ারে তিনশ’র বেশি চলচ্চিত্রে নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করেন তিনি। রাজ্জাক অভিনীত দর্শকনন্দিত সিনেমাগুলোর মধ্যে রয়েছে— ‘নীল আকাশের নিচে’, ‘ময়নামতি’, ‘মধু মিলন’, ‘পীচ ঢালা পথ’, ‘যে আগুনে পুড়ি’, ‘জীবন থেকে নেওয়া’, ‘কী যে করি’, ‘অবুঝ মন’, ‘রংবাজ’, ‘বেঈমান’, ‘আলোর মিছিল’, ‘অশিক্ষিত’, ‘অনন্ত প্রেম’, ‘বাদী থেকে বেগম’ ইত্যাদি।
দীর্ঘ ও বর্ণাঢ্য অভিনয় জীবনে রাজ্জাক-সুচন্দা, রাজ্জাক-কবরী ও রাজ্জাক-শাবানা ও রাজ্জাক-ববিতার অনেক সিনেমা দর্শক হৃদয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। পাশাপাশি ঢালিউডের ‘নায়ক রাজ’ উপাধিতে ভূষিত করা হয় রাজ্জাককে। কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ একাধিক জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র চলচ চ ত র কলক ত
এছাড়াও পড়ুন:
মেয়েকে নিয়ে টিকে থাকতে না পেরে বিদেশ চলে যান পিয়া বিপাশা
লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বিনোদন অঙ্গনে পা রাখেন পিয়া বিপাশা। এরপর অভিনয় করেছেন মিউজিক ভিডিও, নাটক ও সিনেমায়। কিন্তু হুট করেই নাই হয়ে গেলেন। পরে জানা গেল অভিনেত্রী আমেরিকায়। গেল পাঁচ বছর সেখানেই বাস করছেন তিনি। সম্প্রতি দেশের একটি গণমাধ্যমে প্রবাসজীবনসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।
পিয়া বিপাশা জানান, একমাত্র মেয়েকে নিয়ে নিউইয়র্কে বসবাস শুরু করেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের এক নাগরিকের সঙ্গে তাঁর প্রেম ও ভালোবাসা তৈরি হয়। তারপর তাঁরা বিয়ে করেন। দুজনে মিলে বিয়ে করলেও আনুষ্ঠানিকতা সারেননি। চলতি বছরের শেষ দিকে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সেরে নেওয়ার ইচ্ছা।
পিয়া বিপাশা বলেন, ‘বাংলাদেশে ভালো লাগত না। কারণ, লবিং ছাড়া কাজ হতো না। ভালো একটা সিনেমা করার কথা ছিল। কিন্তু সেটা আর হয়নি। এরপর আমার মিডিয়ায় কাজ করার ইচ্ছাই নষ্ট হয়ে যায়। আমি আসলে কাজ করতে চেয়েছিলাম টাকা কামানোর জন্য। কাজ না করতে পারলে টাকা কামাব কী করে। তাই সিদ্ধান্ত নিই অন্য কিছু করার।’
বিপাশার কথায়, ‘টাকা রোজগারের জন্য আমি বিনোদন অঙ্গনে কাজ করেছিলাম। কারণ, আমার একটা মেয়ে ছিল। মেয়েকে নিয়ে টিকে থাকার বিষয় ছিল। পরে দেখলাম, যেভাবে কাজ হয়, আমাকে দিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকা সম্ভব নয়। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম, আমেরিকায় চলে আসার। এখানে এসে বাংলাদেশের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দিই। অনেক টাকাও আয় করছি।’
পিয়া বিপাশা বলেন, ‘সত্যি বলতে এখন আমার এমন অবস্থা, টাকা ইনকাম না করলেও হয়। যতটুকুই করি, আমার মেয়ে ও হাজব্যান্ড ওরাই বলে। আমার এখন আর কোনো স্বপ্ন নেই। যা চেয়েছি, গত পাঁচ বছরে সবই পেয়েছি। টাকাপয়সা, সুন্দর জীবন, প্রতিষ্ঠিত হওয়া, ভালো স্বামী—সবই আমার হয়েছে। টাকা নিয়ে এখন কোনো চিন্তা নেই আমার—যা আয় করি, তা ব্যয় করার সময় পাই না।’
পিয়া বিপাশা জানান, ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুকে বিভিন্ন পণ্যের যেসব পোস্ট করেন, তার জন্য বেশ ভালো সম্মানী পান। তাঁর দাবি, এই সম্মানী কখনো দুই হাজার ডলার, আবার কখনো তিন হাজার ডলারের মধ্যে।
২০১৩ সালে ‘দ্বিতীয় মাত্র’ নাটকে তাহসান খানের বিপরীতে অভিনয় করেন। ছোটবেলায় রূপকথার বই পড়তে পছন্দ করতেন। বই পড়ার সময় গল্পের নায়িকার চরিত্রে নিজেকে কল্পনাও করতেন। বড় পর্দায়ও অভিনয় করেছিলেন। ‘রুদ্র: দ্য গ্যাংস্টার’ নামের সেই ছবি মুক্তি পায়। এরপর ‘রাজনীতি’ ছবিতে শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয়ের কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি। পরে সেই ছবিতে পিয়া বিপাশার পরিবর্তে অপু বিশ্বাস অভিনয় করেন।