মহাসড়ক অবরোধ করে দোষীদের গ্রেপ্তার দাবি
Published: 25th, January 2025 GMT
মহাসড়ক অবরোধ করে বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলায় ছাত্রদল কর্মী রাব্বি হত্যা মামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী। দোষীদের গ্রেপ্তারে ২৪ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়েছেন তারা। এর তিন ঘণ্টার মধ্যেই মামলার এজাহারভুক্ত এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের রহমতপুর বাসস্ট্যান্ডে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে প্রায় ১২টা পর্যন্ত অবরোধ করা হয়। এতে ছাত্রদলের নেতাকর্মীসহ পূর্ব রহমতপুর গ্রামবাসী অংশ নেন।
বিক্ষোভ-অবরোধের কারণে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের দু’দিকে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। রহমতপুর বাসস্ট্যান্ডের তিন রাস্তার মুখে অবরোধের কারণে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের পাশাপাশি বরিশাল থেকে বাবুগঞ্জ-মুলাদী-হিজলার আঞ্চলিক সড়কেও যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে সড়ক ও মহাসড়কে সহস্রাধিক যানবাহন আটকা পড়ায় সীমাহীন ভোগান্তির শিকার হন যাত্রীরা। মহাসড়কের উভয় দিকে প্রায় ৫-৬ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
পুলিশ অবরোধকারীদের সরিয়ে দিতে চাইলে তারা আসামি গ্রেপ্তারে ২৪ ঘণ্টার সময় দিয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে বিভিন্ন স্লোগান দেন। পরে এয়ারপোর্ট থানার ওসি জাকির শিকদার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই জড়িতদের গ্রেপ্তারের কথা মাইকে ঘোষণা করলে মহাসড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেন বিক্ষোভকারীরা। দুপুর ১২টার পর সড়ক-মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়। অবরোধ কর্মসূচির নেতৃত্ব দেন বরিশাল জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি সবুজ আকন এবং নিহত রাব্বির বড় ভাই জেলা ছাত্রদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সাব্বির রহমান।
সবুজ আকন অবরোধ কর্মসূচিতে বলেন, রাব্বি ছাত্রদলের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তাঁকে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে
খুনিদের গ্রেপ্তার করা না হলে সারাদেশ থেকে দক্ষিণাঞ্চলকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে এয়ারপোর্ট থানার ওসি জাকির শিকদার বলেন, রাব্বি হত্যার ঘটনায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট। এজাহারভুক্ত ৩ নম্বর আসামি পূর্ব রহমতপুর গ্রামের সাকিবকে (২৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদেরও গ্রেপ্তারের জন্য বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চলছে।
গত ২২ জানুয়ারি রহমতপুর-মোহনগঞ্জ সড়কে একটি পরিত্যক্ত গুদামের পাশ থেকে রাব্বির ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ছ ত রদল র
এছাড়াও পড়ুন:
ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে গুরুত্ব আরোপ
কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কার্যত সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। এ পরস্থিতিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে ফোন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। বুধবার দুজনকে করা এ ফোন কলে তিনি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া উত্তেজনা কমানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এছাড়া দুই
ফোনালাপের বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে দেওয়া পৃথক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় মার্কো রুবিও বলেন, তিনি পেহেলগাম হামলায় নিহতদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছেন এবং যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তবে তিনি আরও বলেন, ভারত যেন পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করার আগে সতর্ক থাকে, কারণ এখনও পর্যন্ত ভারত এই হামলায় পাকিস্তানের সম্পৃক্ততার কোনও প্রমাণ প্রকাশ করেনি।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক বিবৃতিতে বলেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণহানির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা কমাতে এবং শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে ভারতকে পাকিস্তানের সঙ্গে কাজ করার জন্য বলেছেন।
পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে ফোনালাপে রুবিও- ২২ এপ্রিল ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পর্যটন কেন্দ্র পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন।
তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, রুবিও এই অযৌক্তিক হামলার তদন্তে পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ বলেন, ভারতের উস্কানিমূলক আচরণ শুধু উত্তেজনাই বাড়াচ্ছে এবং পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টাকে বিভ্রান্ত করছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা ভারতের ওপর দায়িত্বশীল আচরণ ও ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করতে চাপ প্রয়োগ করে।
এর আগে গত ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে কাশ্মীরের পেহেলগাম জেলার বৈসরণ তৃণভূমিতে বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন, যাদের প্রায় সবাই পর্যটক। হামলার দায় স্বীকার করে রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট নামে একটি সংগঠন। এটিকে পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়্যেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে মনে করা হয়।
এ ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজনকে আহত হন। যাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, তারা সবাই পুরুষ। বস্তুত, ২২ এপ্রিলের হামলা ছিল ২০১৯ সালের পুলোয়ামা হামলার পর জম্মু ও কাশ্মীরে সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী হামলা। বর্তমানে এ ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
পেহেলগামের ভয়াবহ ওই হামলার জেরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান।
তাছাড়া, হামলার পরে দুই দেশই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। সূত্র-এএফপি