বাকৃবিতে শেষ হলো ২১ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ
Published: 28th, January 2025 GMT
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের ২৫ ও ২৬তম বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কর্মশালার সমাপনী এবং সনদ বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বিকাল ৪টায় বাকৃবির গ্রাজুয়েট ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের (জিটিআই) প্রশিক্ষণ কক্ষে এ সমাপনী অনুষ্ঠিত হয়।
পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষ্যে আয়োজিত ২৫ দিনব্যাপী এই প্রশিক্ষণে ২১টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ জন কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) এবং জিটিআই যৌথভাবে এ প্রশিক্ষণের আয়োজন করে।
প্রশিক্ষণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন, বাকৃবির নয়জন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ প্রফেশনালসের একজন, নেত্রকোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন, খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন, মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের একজন, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন, হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন, গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন এবং গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে জিটিআই-এর পরিচালক অধ্যাপক ড.
এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. কে. ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেন, “নিজেকে এমনভাবে যোগ্য করে তুলুন, যাতে কর্মক্ষেত্রে ঊর্ধ্বতনরা আপনাকে খোঁজে, ভরসা রাখে ও প্রশংসা করে। সততা, পরিশ্রম ও আচার-আচরণ মানুষের প্রকৃত পরিচয়। নিজেকে এমন অবস্থানে নিয়ে যান, যেখানে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ও আপনাকে কাজের জন্য খুঁজবে। সর্বাবস্থায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন, রাস্তাঘাট নোংরা করবেন না এবং অন্যদেরও সচেতন হতে উৎসাহ দিন।”
তিনি বলেন, “ছাত্র সংগঠনগুলো শিক্ষার্থীদের জোর না করে আচরণ দিয়ে আকৃষ্ট করার পরামর্শ দেন। টাকার পিছনে না ছুটে নিজেকে এমনভাবে গড়ুন, যাতে টাকা আপনার পিছনে ছোটে।”
অনুষ্ঠান শেষে সেরা প্রশিক্ষণার্থীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিরা।
ঢাকা/লিখন/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ত নজন র দ ইজন
এছাড়াও পড়ুন:
দারফুরে ধর্ষণ-মুক্তিপণ-হত্যা: আরএসএফের ভয়াবহ নিপীড়নের বর্ণনা দিলেন পালিয়ে আসা মানুষেরা
সুদানের পশ্চিমাঞ্চলীয় দারফুর শহরে আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স (আরএসএফ)–এর কাছ থেকে পালিয়ে আসা ক্ষুধার্ত এবং নির্যাতিত মানুষেরা বিভিন্ন সংস্থা ও সংবাদমাধ্যমের কাছে তাঁদের ভয়ংকর অভিজ্ঞতাগুলো বর্ণনা করছেন। তবে তাঁরা পালাতে পারলেও হাজার হাজার মানুষ এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।
উত্তর দারফুরের রাজধানী এল-ফাশের শহর ছিল রাজ্যটিতে সুদানি সেনাবাহিনীর সর্বশেষ ঘাঁটি। গত রোববার আরএসএফ বাহিনী এটির দখল নেয়। এরপর থেকে জাতিসংঘ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা স্থানীয় মানুষের পরিণতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। এরই মধ্যে দারফুরে ধর্ষণ, মুক্তিপণ ও গণহত্যাসহ অন্যান্য নির্যাতনের কথা সামনে আসছে।
আলখেইর ইসমাইল নামের এক সুদানি তরুণ দারফুর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার (৩১ মাইল) দূরের তাবিলা শহরে পালিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, রোববার এল-ফাশের থেকে পালানোর চেষ্টার সময় ৩০০ জনকে আটক করে আরএসএফ। তিনিও ওই দলে ছিলেন। তবে আটককারীদের একজন তাঁর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পরিচিত হওয়ায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ইসমাইল বলেন, ‘খার্তুমের বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার সঙ্গে পড়াশোনা করেছেন এমন একজন তরুণ সেখানে ছিলেন। তিনি তাঁদের বললেন, “ওকে হত্যা করো না”। এরপর তাঁরা আমার সঙ্গে থাকা সব তরুণ ও আমার বন্ধুদের হত্যা করেন।’
তাবিলা এলাকায় পালিয়ে আসা অন্য নাগরিকেরাও তাঁদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। তেমনই একজন তাহানি হাসান। তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করেই তাঁরা সেখানে হাজির হলেন। কোথা থেকে এলেন জানি না। ভিন্ন ভিন্ন বয়সী তিন তরুণকে দেখা গেল। তাঁরা আকাশে গুলি ছুড়লেন এবং বললেন, ‘থামো, থামো’। তাঁরা আরএসএফের পোশাকে ছিলেন।’
আলখেইর ইসমাইল নামের এক সুদানি তরুণ দারফুর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার (৩১ মাইল) দূরের তাবিলা শহরে পালিয়ে এসেছেন। আলখেইর বলেছেন, রোববার এল-ফাশের থেকে পালানোর চেষ্টা করার সময় ৩০০ জনকে আটক করে আরএসএফ। তিনিও ওই দলে ছিলেন। তবে আটককারীদের একজন তাঁর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পরিচিত ব্যক্তি হওয়ায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।তাহানি হাসান বলেন, ‘এই তরুণেরা আমাদের বেধড়ক মারধর করেছেন। আমাদের পোশাক মাটিতে ছুড়ে ফেলেছেন। এমনকি আমি একজন নারী হওয়ার পরও আমাকে তল্লাশি করা হয়েছে। হামলাকারীরা সম্ভবত বয়সে আমার মেয়ের চেয়েও ছোট হবে।’
ফাতিমা আবদুলরহিম তাঁর নাতি–নাতনিদের সঙ্গে তাবিলাতে পালিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, পাঁচ দিন ধরে অনেক কষ্ট করে হেঁটে তাবিলাতে পৌঁছাতে পেরেছেন।
ফাতিমা বলেন, ‘তাঁরা (আরএসএফের সদস্যরা) ছেলেশিশুগুলোকে মারলেন এবং আমাদের সব সম্পদ কেড়ে নিলেন। আমাদের কিছুই রাখা হলো না। আমরা এখানে পৌঁছানোর পর জানতে পারলাম, আমাদের পর যেসব মেয়ে এসেছে, তাদের ধর্ষণ করা হয়েছে। তবে আমাদের মেয়েরা বেঁচে গেছে।’
পালিয়ে আসা তরুণী রাওয়া আবদাল্লা বলেছেন, তাঁর বাবা নিখোঁজ।
গত বুধবার রাতে দেওয়া এক বক্তৃতায় আরএসএফের প্রধান মোহাম্মদ হামদান দাগালো বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য তাঁর যোদ্ধাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটলে বিচারের মুখোমুখি করা হবে। হামদান ‘হেমেদতি’ নামেও পরিচিত।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানি সেনাদের সঙ্গে আরএসএফ সদস্যদের লড়াই চলছে। গত বৃহস্পতিবার আরএসএফ দাবি করে, নির্যাতনের অভিযোগে বেশ কয়েকজন যোদ্ধাকে আটক করেছে তারা।
তবে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তাবিষয়ক প্রধান টম ফ্লেচার সাধারণ নাগরিকদের ওপর আরএসএফ সদস্যদের নিপীড়নের অভিযোগ তদন্তে বাহিনীটির দেওয়া প্রতিশ্রুতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আরএসএফের একজন উচ্চপদস্থ কমান্ডার এই ঘটনাগুলো ‘গণমাধ্যমের অতিরঞ্জন’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তাঁর দাবি, এল–ফাশেরে নিজেদের পরাজয় ও ক্ষয়ক্ষতি আড়াল করতে সেনাবাহিনী এবং তাদের মিত্ররা এমন অপপ্রচার চালাচ্ছে।
জাতিসংঘের তথ্য বলছে, এ সংঘাত চলাকালে আরএসএফ ও সেনাবাহিনী—দুই পক্ষের বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠেছে। সংঘাতে কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। সংঘাতকে কেন্দ্র করে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় তৈরি হয়েছে। বিরাজ করছে ব্যাপক দুর্ভিক্ষের অবস্থা। পাশাপাশি কলেরা ও অন্যান্য প্রাণঘাতী রোগের সংক্রমণ বাড়ছে।
দারফুর থেকে পালিয়ে আসা লোকজন তাবিলা এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন। ২৯ অক্টোবর, ২০২৫