খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মো. ফিরোজ সরকার বলেছেন, “বই হলো জোনাকি পোকার মতো, যা অন্ধকারে আলো ছড়ায়। যারা লেখক তারা সেই আঙ্গিকেই বই লিখে থাকেন। এ থেকে বিচ্যুত হলে পাঠক মানসম্মত বই থেকে বঞ্চিত হবেন। রাজধানী ঢাকার পরেই খুলনায় আয়োজিত বইমেলাটি অনন্য, যা এই অঞ্চলের পাঠকদের চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হবে বলে আশা করছি।”

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে খুলনা নগরীর বয়রাস্থ বিভাগীয় সরকারি গণগ্রন্থাগার চত্বরে মাসব্যাপী একুশে বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

মো.

ফিরোজ সরকার বলেন, “বইয়ের মতো বিশ্বস্ত বন্ধু আর নেই। কেউ যদি বই পড়ে আনন্দ না পান তবে ধরে নিতে হবে যে, উপযুক্ত বা সঠিক বইটি তিনি নিজের জন্য খুঁজে পাননি। অনেক বইয়ের ভিড়ে সঠিক বই খুঁজে নেওয়ার গুরুত্ব অনেক। এখন সবকাজে প্রযুক্তি ব্যবহার হয়। কাগজে মুদ্রিত বই পড়ার আনন্দ ডিজিটাল বা ই-বুকে পাওয়া যায় না।” 

আরো পড়ুন:

মধুসূদনের জন্মদিন উপলক্ষে ৭ দিনব্যাপী মধুমেলার উদ্বোধন

লক্ষ্মীপুরে তথ্য মেলা উদ্বোধন 

খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তৃতা দেন সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সাইদুর রহমান খান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন- খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দার এবং সরকারি বি এল কলেজের অধ্যক্ষ সেখ হুমায়ুন কবীর। 

বিভাগীয় সরকারি গণগ্রন্থাগারের ব্যবস্থাপনায় ও খুলনা জেলা প্রশাসন আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত জানান বিভাগীয় সরকারি গণগ্রন্থাগারের প্রিন্সিপাল লাইব্রেরিয়ান-কাম-উপপরিচালক মোহাম্মদ হামিদুর রহমান।

খুলনা জেলা প্রশাসনের সূত্র জানায়, বইমেলা ফেব্রুয়ারি মাস জুড়ে চলবে। মেলা ছুটির দিন ব্যাতীয় প্রতিদিন বিকাল ৪টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকবে। সরকারি ছুটির দিন সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলবে। মেলায় খুলনা-ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার প্রকাশনী ও বই বিক্রেতা, সাহিত্য সংগঠন ও সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্টল থাকছে। মেলা চলাকালে মেলা প্রাঙ্গণে অবস্থিত মঞ্চে আলোচনা সভা, সেমিনার, নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন, বিষয়ভিত্তিক প্রবন্ধ পাঠ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও শিশু-কিশোরদের জন্য কুইজসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে।

ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম ল র খবর বইম ল সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ