জামায়াত কর্মী হত্যার ১২ বছর পর আ.লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা
Published: 4th, February 2025 GMT
সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী ওয়ারেছ আলী (৫৫) হত্যার ঘটনায় দীর্ঘ ১২ বছর পর মামলা হয়েছে। এ মামলায় এনায়েতপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী আহম্মেদ মোস্তফা খান বাচ্চু, সহ-সভাপতি রাসেদুল ইসলাম সিরাজ, সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী বিএসসি ও জয়নাল আবেদীনসহ আওয়ামী লীগের ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এতে আরও ৩৫ থেকে ৩৬ জন আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
সোমবার নিহতের ছেলে সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে এনায়েতপুর থানা আমলি আদালতে মামলাটি করেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী আবু তালেব আকন্দ মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে সমকালকে জানান, এনায়েতপুর থানা আমলী আদালতের বিচারক ওমর ফারুক মামলাটি আমলে নিয়েছেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, জামায়াতে ইসলামীর এনায়েতপুর থানার একজন সক্রীয় কর্মী ওয়ারেছ আলী। তিনি ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর ভোরে এনায়েতপুর হাটে কাপড় বিক্রয়ের উদ্দেশে ভ্যানে করে রওনা হন। এই হাটের মধ্যে হাফেজ আল-আমিনের সঙ্গে তার দেখা হয়। পরবর্তীতে তারা দুজন একত্রে বাড়ির উদ্দেশে বের হন। এরই এক পর্যায়ে সকাল ১১টার দিকে এনায়েতপুর থানার দক্ষিণ পাশের সোনালী ব্যাংকের সামনে পৌঁছালে আসামিরা হত্যার উদ্দেশে তার ওপর আতংকিত হামলা চালায়। এতে রক্তাক্ত অবস্থায় ওয়ারেছ আলী মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে তার সঙ্গে থাকা কাপড় বিক্রির ৫০ হাজার টাকা ও মোবাইন ফোন নিয়ে নেয় অভিযুক্তরা। এরপর ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে হাফেজ আল-আমিনকে কিল-ঘুষি মেরে এনায়েতপুর থানার দিকে নিয়ে যায়। এরপর স্থানীয়রা রক্তাক্ত অবস্থায় ওয়ারেছ আলীকে উদ্ধার করে খাজা ইউনুস আলী হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মামলার বাদী সাইফুল ইসলাম বলেন, আমার বাবাকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছিল তারা। এই হত্যার পর আমাদেরকে তারা সতর্ক করে দেয়, এটা নিয়ে যেন কোনো প্রকার মামলা করা না হয়। পরে আমার পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের পরামর্শ অনুযায়ী এতদিন মামলা করা হয়নি। কিন্তু সেই সময় সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর অবশ্যই মামলা করব। এখন তাই করলাম।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স র জগঞ জ র ছ আল ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
প্রেমের টানে চীনা যুবকের বাংলাদেশে এসে বিয়ে
মাদারীপুরে মেয়ে সুমাইয়া আক্তারের প্রেমের টানে চীনের নাগরিক শি তিয়ান জিং বাংলাদেশে এসেছেন। বিয়ে করে বর্তমানে মাদারীপুরে শশুরবাড়িতে আছেন। ভিনদেশি যুবককে দেখার জন্য ওই বাড়িতে মানুষ ভিড় করছেন।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুরের সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের উত্তর মহিষেরচর এলাকার বাসিন্দা সাইদুল হোসেনের মেয়ে সুমাইয়া আক্তার (১৯)। সুমাইয়া মাদারীপুর শহরের সরকারি সুফিয়া মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। তারা তিন বোন। সুমাইয়া বড়। মেঝ সাদিয়া আক্তার (১২) মাদ্রাসায় পড়ে। ছোট বোন আরিফা (৬)।
চীনের সাংহাই শহরের সি জিং নিং এর ছেলে শি তিয়ান জিং (২৬)। তারা দুই ভাই। বড় শি তিয়ান জিং। তার চীনের সাংহাই শহরে রেস্টুরেন্টের ব্যবসা আছে।
আরো পড়ুন:
‘একজন ছেলে মানুষ আমাদের পরিবারের বৌ হয়েছিল’
এক বিয়ের বরযাত্রী খেয়ে ফেলল অন্য বিয়ের খাবার
শি তিয়ান জিংকে টিকটকে দেখেন সুমাইয়া। এরপর ইউচ্যাটের মাধ্যমে কথা আদান-প্রদান হয়। উভয়ই গুগলের মাধ্যমে লেখা অনুবাদ করে মনের ভাব আদান- প্রদান করেন। এক পর্যায় তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়। মাত্র চার মাসের প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে গত ২৪ জুলাই চীন থেকে বাংলাদেশ আসেন শি তিয়ান জিং। এরপর এক দিন ঢাকার একটি হোটেলে থাকেন। ২৬ জুলাই মাদারীপুর সদর উপজেলার মহিষেচরের সুমাইয়ার বাড়িতে আসেন।
সুমাইয়া, সুমাইয়ার বাবা সাইদুল ইসলাম ও তার দুইজন আত্মীয় মিলে ঢাকা থেকে শি তিয়ান জিংকে মাদারীপুরে নিয়ে আসেন। বাংলা ভাষায় কথা বলতে না পারায় মোবাইলে অনুবাদ করে কথা আদান-প্রদান করেন শি তিয়ান জিং। এরপর ২৭ জুলাই তারা বিয়ে করেন। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে সুমাইয়ার বাড়িতে মানুষ ভিড় করতে থাকে।
সুমাইয়া আক্তার বলেন, ‘‘টিকটক দেখে আমি ওর ভক্ত হই। এরপর ইউচ্যাটের মাধ্যমে কথা হয়। পরে দুজনেই প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ি। মাত্র চার মাসের প্রেমের সূত্র ধরে চীন থেকে বাংলাদেশ আমার কাছে চলে আসবে, তা কখনো ভাবিনি। ও প্লেনে উঠার সময় বলেছে, আমি বাংলাদেশে আসছি। আমি বিশ্বাস করিনি। যখন ইন্ডিয়া এসে আমাকে জানায়, তখন বিশ্বাস করেছি।’’
সুমাইয়া আক্তার আরো বলেন, ‘‘ও ওর মা-বাবাকে আমার কথা বলেছে। তারাও মুসলিম। ওর মা বলেছেন, আমাকে বিয়ে করে চীনে নিয়ে যেতে। তাই শি তিয়ান জিং বাংলাদেশে এসে আমাকে বিয়ে করেছেন।’’
সুমাইয়া বলেন, ‘‘এরই মধ্যে পাসপোর্ট করতে দিয়েছি। শি তিয়ান জিং এক মাস বাংলাদেশে থাকবে। এর মধ্যে আমার কাগজপত্র রেডি করা হবে। তারপর ও আমাকে চীনে নিয়ে যাবে। আমিও চীনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’’
শি তিয়ান জিং বলেন, ‘‘বাংলাদেশ আমার ভালো লেগেছে। তবে অনেক গরম। আর অনেক মানুষ আমাকে দেখতে আসে। তাই আমার ভয় লাগে। আমি ভালোবেসে চীন থেকে এখানে এসেছি। সুমাইয়াকে বিয়ে করেছি। এখন ওর কাগজপত্র রেডি করে চীনে নিয়ে যাবো। আমার পরিবার সব জানে। তারাই সুমাইয়াকে চীনে নিয়ে যেতে বলেছেন।’’
সুমাইয়ার বাবা সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘‘শি তিয়ান জিং আমাদের এখানে আছে। ও খুব ভালো ছেলে। খুবই অমায়িক। কোনো অহংকার নেই। এক মাস থাকবে এবং আমার মেয়েকে নিয়ে যাবে। আমরা খুব খুশি।’’
পাঁচখোলা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রুবেল হাওলাদার জানান, প্রথমে আদালতের মাধ্যমে তাদের বিয়ে হয়। পরে সামাজিকভাবে গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বিয়ে হয়। চীনে ওই ছেলের ব্যবসা আছে। কিছু দিনের মধ্যে সুমাইয়াকে চীনে নিয়ে যাবে।
ঢাকা/বকুল