চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হোসেন এবং তাঁর ভাই ও চিৎলা ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিদুল ইসলাম মন্টুর গ্রামের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে চিৎলা ইউনিয়নের হাঁপানিয়া গ্রামে তাঁদের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।

অগ্নিসংযোগের খবর পেয়ে আলমডাঙ্গা থানার পুলিশের সহযোগিতায় চুয়াডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ১২ সদস্যের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে ৩ ঘণ্টার চেষ্টায় গতকাল রাতেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলে দেলোয়ার হোসেন ও তাঁর ভাই মহিদুল ইসলাম রাজনৈতিকভাবে প্রভাব খাঁটিয়ে গ্রামবাসীকে অতিষ্ঠ করে তুলছিলেন। দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতেই গতকাল রাতে তাঁদের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ ঘটায় জনতা। তবে বাড়িতে কেউ ছিলেন না।

জেলার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স উপসহকারী পরিচালক বলেন, ‘গতকাল রাত সোয়া ৯টার দিকে খবর পেয়ে ১২ সদস্যের একটি দল নিয়ে হাঁপানিয়া গ্রামে যাই। পরে দিবাগত রাত সোয়া ১২টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। অগ্নিকাণ্ডে প্রাথমিকভাবে দুটি বাড়ির অন্তত ৩ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।’

হাঁপানিয়া গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেলোয়ার ও তাঁর ভাই মহিদুল চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোলায়মান হক জোয়ারদারের ঘনিষ্ঠজন ছিলেন। তাঁরা সেই প্রভাব খাটাতেন বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।

আগুনের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

মাসুদুর রহমান।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আওয় ম গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

ঘুমের ওষুধ খাইয়ে স্বামীকে হত্যা, ফাঁদ পেতে ধরা হলো প্রেমিককে

পাবনার চাটমোহর উপজেলার কাটেঙ্গা গ্রামে ক্যানসার আক্রান্ত স্বামীকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্ত্রীর বিরুদ্ধে। 
দশদিন পর ঘটনা জানাজানি হলে  অভিযুক্ত স্ত্রী শারমিন খাতুন ও তার প্রেমিককে আটক করে পুলিশ। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে পরিবারের সদস্যরা পুলিশকে ঘটনাটি জানায়। 

এর আগে গত ৩০ নভেম্বর চাটমোহরের দক্ষিণপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মৃত স্বামী শের আলী (৩৫) দক্ষিণপাড়া গ্রামের ভোলা প্রামানিকের ছেলে। শারমিন খাতুন (২৬) কাটেঙ্গা গ্রামের শাহ আলমের মেয়ে। এবং তার প্রেমিক অনিক (২২) একইগ্রামের মহাজন সরকারের ছেলে। 

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ নভেম্বর শের আলীর মৃত্যু হয়। তিনি ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। তার মৃত্যুর পর বিষয়টি স্বাভাবিক হিসেবে শুরুতে মেনে নিলেও সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যুকে ঘিরে পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়দের মধ্যে নানা প্রশ্ন দেখা দেয়।
জানা যায়, শের আলীর চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও ইউটিউবারদের মাধ্যমে চিকিৎসা সহায়তার অর্থ সংগ্রহ করা হয়েছিল। অভিযোগ রয়েছে, সেই অর্থের একটি বড় অংশ শারমিন অনিককে দিয়েছেন। 

মৃত শের আলীর ফুপাতো ভাই এনামুল হোমেনের দাবি, শারমিন ও অনিকের মধ্যে ফেসবুক মেসেঞ্জারে হওয়া কথোপকথন ঘেঁটে টাকা লেনদেনের একাধিক তথ্য পাওয়া গেছে। সেখান থেকেই প্রথম সন্দেহের সূত্রপাত। 

এরপর ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে পরিবারের সদস্যরা কৌশল অবলম্বন করেন। শারমিনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে অনিককে টাকা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে আসতে বলে মেসেজ পাঠানো হয়। অনিক এই ফাঁদে পা দেন।  

শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে অনিকে টাকা নিতে এলে স্থানীয়রা তাকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে অসংলগ্ন বক্তব্য ও পরস্পরবিরোধী তথ্য দিলে সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়। পরে অনিক ও শারমিন স্বীকার করেন, প্রায় চার মাস ধরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। 

শারমিন এ সময় জানান, গত ৩০ নভেম্বর একসঙ্গে দশটি ঘুমের ওষুধ শের আলীকে তিনি খাইয়েছিলেন। এতে শের আলীর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে এবং কিছু সময়ের মধ্যেই তার মৃত্যু হয়। 

শের আলীর মা শিরীনা খাতুন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘‘আমার অসুস্থ ছেলেকে ওর বউ ঘুমের ওষুধ খাইয়েছে। সে সহ্য করতে না পেরে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে এসে দেখি আমার ছেলে আর বেঁচে নেই। আমি এর দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।’’

চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম সরোয়ার হোসেন বলেন, ‘‘মৃত ব্যক্তির পরিবারে পক্ষ থেকে কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি বা মামলা করেনি। যেহেতু ঘটনাস্থল থেকে দুজনকে আটক করা হয়েছে, সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ আইনগত প্রক্রিয়া শেষে তাদের পাবনা আদালতে সোপর্দ করেছে।’’ 

ঢাকা/শাহীন//

সম্পর্কিত নিবন্ধ