অমর একুশে বইমেলায় চায়না বুক হাউজ নামে চীনা স্টল পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশের সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী এবং ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।

শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টার দিকে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গনে এই বুক স্টল পরিদর্শন করেন তারা।

এ সময় আগামী বছর দশটি বই যৌথভাবে প্রকাশ করার ব্যাপারে কাজ করছে বাংলাদেশ, এমনটা জানিয়ে সংস্কৃতি উপদেষ্টা বলেন, “এর মধ্যে পাঁচটি চীনা ভাষার ক্লাসিক বাংলায় অনুবাদ হবে এবং বাংলা ভাষার পাঁচটি ক্লাসিক চীনা ভাষায় অনুবাদ করা হবে। আমরা দশটা বই দিয়ে শুরু করছি, সামনে আরো বাড়বে।”

আরো পড়ুন:

বইমেলায় ভ্রমণগদ্য ‘পূর্ব আফ্রিকার তিনকাহন’

বইমেলায় ‘আবৃত্তির কলাকৌশল ও নির্বাচিত কবিতা’

চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের আরও সাংস্কৃতিক বিনিময়ের কাজ চলমান থাকবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “চীনা দূতাবাসের সহযোগিতায় আমরা সিনেমা নিয়েও একটি কাজ করতে যাচ্ছি, যা বাংলাদেশের সিনেমাপ্রেমী সবাইকে আনন্দিত করবে।”

এ সময় চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, “বাংলাদেশের মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিতে চীন সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিতে চায়। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টার চীন সফরে আমরা দুপক্ষ একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐক্যে পৌঁছেছি। এরই মধ্যে ইয়ুননান প্রদেশের কুনমিংয়ে তিনটি হাসপাতাল মনোনীত করা হয়েছে এবং এ হাসপাতালগুলোতে সুযোগ-সুবিধা, ডাক্তার ও সেবা অনেক উন্নত।”

তিনি আরো বলেন, “চিকিৎসা নিতে বাংলাদেশের মানুষ যেন সহজে ভিসা, টিকিট এবং কম খরচে চিকিৎসা সেবা পেতে পারে, সে জন্য চীন সরকার উদ্যোগ নিয়েছে।”

এবারের চীনা বইয়ের স্টলটিতে চীনা সংস্কৃতি, ইতিহাস, লোককাহিনি, পর্যটন, রন্ধনপ্রণালী, অর্থনীতি, রাজনীতি এবং চীনা ভাষা শেখাসহ চীন বিষয়ক বিভিন্ন বইয়ের প্রদর্শনী চলছে।

চীনা দূতাবাস তৃতীয়বারের মতো এই বুকস্টলের আয়োজন করেছে এবং এর সহযোগী হিসেবে কাজ করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট।

ঢাকা/হাসান/এসবি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বইম ল

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ