কেন উইলিয়ামসনের সেঞ্চুরির ওপর ভর করে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৬ উইকেটে হারিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনাল নিশ্চিত করেছে নিউজিল্যান্ড। লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে ৩০৪ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করে ৮ বল হাতে রেখেই জয় তুলে নেয় ব্ল্যাক ক্যাপসরা।  

দক্ষিণ আফ্রিকার ওপেনার ম্যাথিউ ব্রিটজকে ওয়ানডে অভিষেকেই বিশ্বরেকর্ড গড়লেও তার দুর্দান্ত ১৫০ রানের ইনিংস শেষ পর্যন্ত দলের জয়ে যথেষ্ট হয়নি। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ওয়ানডে অভিষেকে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস খেলার কীর্তি গড়েছেন তিনি, ভেঙেছেন ৪৭ বছর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজ কিংবদন্তি ডেজমন্ড হেইন্সের করা ১৪৮ রানের রেকর্ড।  

টস জিতে বোলিং নেওয়া নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ধীরগতির শুরু করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে ব্রিটজকে ও জেসন স্মিথের ১০৫ বলে ৯৩ রানের জুটিতে ভালো অবস্থানে পৌঁছায় দলটি। ১২৮ বলে শতক স্পর্শ করার পর ব্রিটজকে আরও আগ্রাসী হয়ে ওঠেন, পরের ৫০ রান করেন মাত্র ১৯ বলে। তার ১১ চার ও ৫ ছক্কার ইনিংসে ভর করে প্রোটিয়ারা ৩০৪ রান সংগ্রহ করে।  

তবে উইলিয়ামসন-কনওয়ের জুটিতে এই রানও পর্যাপ্ত প্রমাণিত হয়নি। নিউজিল্যান্ডের ওপেনিং জুটি ভাঙে দলীয় ৫০ রানের মাথায়। দ্বিতীয় উইকেটে ডেভন কনওয়ে ও কেইন উইলিয়ামসন মিলে গড়েন ১৫৫ বলে ১৮৭ রানের জুটি। সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে ছিলেন দুজনই। তবে উইলিয়ামসন শতকের দেখা পেলেও ৩ রানের আক্ষেপ নিয়ে ফিরেছেন কনওয়ে। ২০১৯ সালের পর ওয়ানডেতে উইলিয়ামসনের প্রথম সেঞ্চুরিটি আসে মাত্র ৭২ বলে, যা তার ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় দ্রুততম শতক। শেষ পর্যন্ত ১১৩ বলে ১৩৩ রান করে অপরাজিত থাকেন কিউই অধিনায়ক, নিশ্চিত করেন দলের সহজ জয়।  

এই জয়ের ফলে নিউজিল্যান্ড ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে। পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে আসন্ন ম্যাচটি কার্যত নকআউট লড়াই হয়ে দাঁড়িয়েছে, যেখানে বিজয়ী দল ফাইনালে কিউইদের মুখোমুখি হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ফ ইন ল

এছাড়াও পড়ুন:

বছরে ৬ লাখ অপরিণত শিশুর জন্ম

দেশে বছরে গড়ে জন্ম নিচ্ছে প্রায় ৬ লাখ অপরিণত (প্রিম্যাচিওর) শিশু। জন্মের সময় গর্ভকাল পূর্ণ না হওয়ায় এসব নবজাতকের ঝুঁকি থাকে নানা জটিলতায় পড়ার, এমনকি মৃত্যুর আশঙ্কাও থাকে বেশি। তাই নবজাতকদের মৃত্যু হ্রাসে অপরিণত নবজাতক জন্ম প্রতিরোধে সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। 

সোমবার শহীদ ডা. মিল্টন হলে বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিওন্যাটোলজি বিভাগ ও সেভ দ্যা চিলড্রেন আয়োজিত সভায় এই তথ্য জানানো হয়। 

স্বাগত বক্তব্য রাখেন সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাদেকা চৌধুরী মনি। সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সহযোগী অধ্যাপক ডা. ইসমত জাহান। তিনি বলেন, মা ও অপরিণত নবজাতকদের জীবন রক্ষাকারী প্রকল্প সেভিং উইমেন এন্ড প্রিমেচিউর বেবিজ বা সোয়াপের মাধ্যমে দেশের পাচঁটি হাসপাতাল  মা ও নবজাতক সেবা দেওয়া হচ্ছে। এই প্রকল্পের আওতায় ১ লাখ ৬৫ হাজার গর্ভবতী মা ও ৮৭ হাজার নবজাতককে সেবা পেয়েছে। দেড় হাজার স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের উল্লেখযোগ্য অর্জন হলো ভায়ু বাবল সিপ্যাপ, ফ্যামিলি সেন্টার কেয়ার, ক্যাঙ্গারু মাদার কেয়ার, নিওনেটালি লাইভ ইত্যাদিকে সফলভাবে প্রয়োগ করে নবজাতকদের জীবন রক্ষায় ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া গেছে।

বিএমইউর নিওনাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল মান্নান বলেন, বাংলাদেশে বছরে ৩০ লাখ নবজাতকের জন্ম হয়। যার মধ্যে শতকরা ২০ শতাংশই অপরিণত নবজাতক এবং বিশ্বের মধ্যে এই হার সর্বোচ্চ। সেই হিসেবে বছরে অপরিণত ৬ লাখ শিশু জন্মায়। নবজাতকের মৃত্যুহার হ্রাস পেলেও লক্ষ্যমাত্রা পূরণ অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। বিশেষ করে ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতি হাজার জীবিত জন্মে বর্তমানে নবজাতকের মৃত্যুহার ২০ জন থেকে ১২ জনে কমিয়ে আনা। যদিও এই প্রকল্পের কার্যক্রমসহ সামগ্রিক প্রচেষ্টায় নবজাতকের মৃত্যুহার ২০ জনে কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।

বিএমইউর ফিটোম্যাটার্নাল মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. তাবাসসুম বলেন, নবজাতকের মৃত্যুর অন্যতম কারণ হলো অপরিণত নবজাতকের জন্ম দান। বাংলাদেশে প্রতি বছর ৩০ লাখ নবজাতকের জন্ম হয়। যার মধ্যে শতকরা ২০ শতাংশই অপরিণত নবজাতক এবং বিশ্বের মধ্যে এই হার সর্বোচ্চ। গত ১০ বছর ধরে এমন পরিস্থিতি দেখা যায়। এটি প্রতিরোধে আমাদের উদ্যোগ নেই। কেনো কমানো যাচ্ছে না এবিষয়েও কোনো গবেষণা হয় না। তবে সচেতনতা, প্রসূতি সেবা এবং মাতৃস্বাস্থ্য কার্যক্রম জোরদার করলে এ সমস্যা অনেকাংশে কমানো সম্ভব। অপরিণত শিশুর জন্মের পেছনে রয়েছে মাতৃস্বাস্থ্যের অবনতি, অপুষ্টি, সময়মতো প্রসবপরিচর্যার অভাব, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও প্রসবকালীন জটিলতা। এ ছাড়া ধূমপান, অনিয়ন্ত্রিত ওষুধ সেবন এবং অল্প বয়সে গর্ভধারণও অন্যতম কারণ।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) এর ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম বলেন, সোয়াপের মাধ্যমে নবজাতকদের পরিবার কেন্দ্রিক চিকিৎসা (ফ্যামিলি সেন্টারড কেয়ার-এফসিসি) মা ও শিশুর জীবন রক্ষায় বিরাট অবদান রাখছে। এই পদ্ধতিকে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে বৃহৎ আকারে কাজে লাগাতে পারলে সমগ্র স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় ইতিবাচক পরিবর্তনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর  অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর গবেষণা ও উন্নয়ন অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার, শিশু অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মো. আতিয়ার রহমান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ