তিস্তা শুধু একটি নদী নয়, এটি আমাদের সংস্কৃতি ও জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় করতে হবে। বিএনপি জনগণের দাবি থেকে পিছিয়ে যায়নি। দাবি আদায় করেই ছেড়েছে। সে কারণে আমি রংপুর বিভাগবাসীকে বলি—জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তিস্তা ব্রিজ পয়েন্টে আয়োজিত একটি প্রস্তুতিমূলক সভায় তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব এসব কথা বলেন। তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় ও মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবিতে এ সভার আয়োজন করা হয়। তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন এ সভার আয়োজন করে।

সাবেক উপমন্ত্রী আসাদুল হাবিব আরও বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে যেমন পরাজিত করেছি, তেমনি তিস্তাকে শাসন করে মানুষের কল্যাণে প্রতিষ্ঠিত করব, ইনশা আল্লাহ। যারা দীর্ঘ ১৬ বছর রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল, তারা শুধু নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করেছে, জনগণের দিকে তাকায়নি। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে আট হাজার কোটি টাকা দিতে চেয়েছিল চীন। তারা সমীক্ষা ও ডিজাইনও করেছিল। কিন্তু সরকার ভারতের পররাষ্ট্রনীতির কাছে নতজানু হওয়ার কারণে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হয়নি। এখন আর আমরা ভারতের কথা শুনব না। বিদেশ যদি সাহায্য না করে, বাংলাদেশের অর্থেই এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব।’

আসাদুল হাবিব আরও বলেন, তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় ও মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবিতে ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি তিস্তা নদীর ১৭টি পয়েন্টে অবস্থান কর্মসূচি পালিত হবে। ১৭ ফেব্রুয়ারি বিএনপির মহাসচিব অবস্থান কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন। এই দাবির সঙ্গে তারেক রহমান ইতিমধ্যে একমত প্রকাশ করেছেন। তারেক রহমানের ১৮ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় বক্তব্য দেওয়ার কথা আছে বলে জানান আসাদুল হাবিব।

প্রস্তুতিমূলক সভায় সভাপতিত্ব করেন গাইবান্ধা জেলা বিএনপির সভাপতি মইনুল হাসান। বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির রংপুর বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুন্নবী, সহসভাপতি শহীদুজ্জামান, আইনজীবী জাহাঙ্গীর আলম, সুন্দরগঞ্জ পৌর বিএনপির আহ্বায়ক ইখতিয়ার উদ্দিন ভূঁইয়া প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র

এছাড়াও পড়ুন:

অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে: ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। আমরা যে বিশ্বাসযোগ্যতা আশা করেছিলাম, তারা তা রাখেনি। তাই, বর্তমান রাজনৈতিক সংকটের দায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের।”

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) ৫৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

আরো পড়ুন:

ঐক্যের মাধ্যমে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাই: ফখরুল

জনগণ আর সেই পুরোনো রাজনীতির ফাঁদে পা দেবে না: ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব বলেন, “নির্বাচনের আগে গণভোটের কোনো সুযোগ এখন আর নেই। নির্বাচনের দিনই গণভোট হবে। দুটি ব্যালট থাকবে— একটি গণভোটের জন্য, আরেকটি জাতীয় সংসদের জন্য। এই বিষয়ে কারো দ্বিমত থাকার কথা নয়।”

তিনি বলেন, “যেদিন ঐকমত্যের নথি জমা দেওয়া হলো, মনে আছে, সেদিন বৃষ্টি হচ্ছিল, ১৭ তারিখ। তার আগে আবার সবকিছু এলোমেলো হয়ে গিয়েছিল। আমরা আবার ঠিকঠাক করে সব রাজনৈতিক দল একমত হয়ে বৃষ্টির মধ্যে ছাতা ধরে সেখানে স্বাক্ষর করলাম। কিন্তু, যখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে সেটা উপস্থাপন করা হলো, তখন দেখা গেল অনেক পার্থক্য। বিশেষ করে, আমরা যে নোট অব ডিসেন্টগুলো দিয়েছিলাম, সেগুলো উল্লেখ করা হয়নি। আমরা বলছি, ইটস অ্যা ব্রিজ অব ট্রাস্ট। অথচ, তারা সেই আস্থার সেতু ভেঙে দিয়েছে। জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।”

মির্জা ফখরুল বলেন, “আপনারা যে কমিশন তৈরি করেছেন, সেই কমিশন প্রায় এক বছর আট-নয় মাস ধরে ঐকমত্যের নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছে। সংস্কার ও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমরা অনেক ক্ষেত্রে একমত হয়েছিলাম। কয়েকটি বিষয়ে মতভেদ থাকায় আমরা ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়েছিলাম। অর্থাৎ, আমাদের মধ্যে মতভেদ থাকলেও মূল বিষয়ে আমরা ঐকমত্যে পৌঁছেছিলাম, এটাই নিয়ম। যখন আমরা নির্বাচনে যাব, তখন ম্যানিফেস্টোতে এই বিষয়গুলো থাকবে। জনগণ যদি আমাদের ভোট দেয়, তাহলে আমরা সেসব বিষয় সামনে আনব, পার্লামেন্টে পাস করে দেশের পরিবর্তন ঘটাব। আর যদি ভোট না দেয়, তাহলে সেটি বাদ পড়বে।”

মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা একটা কথা খুব পরিষ্কার করে বলতে চাই, বিএনপি সংস্কারের দল। বিএনপির জন্মই হয়েছে সংস্কারের মধ্য দিয়ে। ১৯৭৯ সালে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন একদলীয় শাসনব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য। তখন সব পত্রিকা বন্ধ ছিল, তিনি সেগুলো খুলে দিয়েছিলেন। মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।”

নির্বাচন ও গণভোট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা নির্বাচন করব, নির্বাচন করতে চাই। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণার সঙ্গে আমরা একমত। কিন্তু, আজকে সেই নির্বাচন বানচাল করার জন্য একটি মহল উঠে-পড়ে লেগেছে, তারা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।”

জামায়াতে ইসলামীর উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “যারা এই নিয়ে রাস্তায় নেমে গোলমাল করছেন, তাদের অনুরোধ করব, জনগণকে আর বিভ্রান্ত করবেন না। একসময় আপনারা পাকিস্তানের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিলেন। আজকে জনগণ যে নির্বাচন চায়, তার বিরোধিতা করবেন না। এই দেশের মানুষ দেশ বিক্রির রাজনীতি ক্ষমা করে না।”

তিনি আরো বলেন, “আমরা আমাদের মিত্রদের সঙ্গে নিয়ে সরকার গঠন করতে চাই। যাদের সঙ্গে আমরা দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে লড়েছি, একসঙ্গে কাজ করেছি, তাদের নিয়েই আমরা জাতীয় সরকার গঠন করতে চাই। এক্ষেত্রে আমাদের বক্তব্য খুবই স্পষ্ট—আসুন, সবাই মিলে নির্বাচনের সুযোগকে কাজে লাগাই। সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করে জনগণের পার্লামেন্ট, জনগণের সরকার গঠন করি।”

জেএসডি সিনিয়র সহ-সভাপতি তানিয়া রবের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন— সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম স্বপন, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান মঞ্জু, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুব্রত চৌধুরী প্রমুখ।

ঢাকা/রায়হান/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী
  • ভুল শুধরে জনগণের আস্থা ফেরানোর সুযোগ এই নির্বাচন: আইজিপি
  • ইরান পারমাণবিক স্থাপনাগুলো আরো শক্তিশালী করে পুনর্নির্মাণ করবে
  • সাঁকো বিড়ম্বনার ৪০ বছর 
  • জ্বালানি সুবিচার নিশ্চিতে সংগ্রাম, শপথ যুব সংসদের সদস্যদের
  • গাইবান্ধায় চোর সন্দেহে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা, নারী আটক
  • গাইবান্ধায় চোর সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা
  • বন্দরে বিএনপি নেতা তাওলাদের উপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে আল্টিমেটাম
  • বিএনপি ও জামায়াত কে কোন ফ্যাক্টরে এগিয়ে
  • অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে: ফখরুল