তিস্তা নিয়ে বিএনপি নেতা আসাদুল হাবিব, ‘এখন আর আমরা ভারতের কথা শুনব না’
Published: 11th, February 2025 GMT
তিস্তা শুধু একটি নদী নয়, এটি আমাদের সংস্কৃতি ও জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় করতে হবে। বিএনপি জনগণের দাবি থেকে পিছিয়ে যায়নি। দাবি আদায় করেই ছেড়েছে। সে কারণে আমি রংপুর বিভাগবাসীকে বলি—জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তিস্তা ব্রিজ পয়েন্টে আয়োজিত একটি প্রস্তুতিমূলক সভায় তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব এসব কথা বলেন। তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় ও মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবিতে এ সভার আয়োজন করা হয়। তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন এ সভার আয়োজন করে।
সাবেক উপমন্ত্রী আসাদুল হাবিব আরও বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে যেমন পরাজিত করেছি, তেমনি তিস্তাকে শাসন করে মানুষের কল্যাণে প্রতিষ্ঠিত করব, ইনশা আল্লাহ। যারা দীর্ঘ ১৬ বছর রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল, তারা শুধু নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করেছে, জনগণের দিকে তাকায়নি। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে আট হাজার কোটি টাকা দিতে চেয়েছিল চীন। তারা সমীক্ষা ও ডিজাইনও করেছিল। কিন্তু সরকার ভারতের পররাষ্ট্রনীতির কাছে নতজানু হওয়ার কারণে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হয়নি। এখন আর আমরা ভারতের কথা শুনব না। বিদেশ যদি সাহায্য না করে, বাংলাদেশের অর্থেই এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব।’
আসাদুল হাবিব আরও বলেন, তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় ও মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবিতে ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি তিস্তা নদীর ১৭টি পয়েন্টে অবস্থান কর্মসূচি পালিত হবে। ১৭ ফেব্রুয়ারি বিএনপির মহাসচিব অবস্থান কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন। এই দাবির সঙ্গে তারেক রহমান ইতিমধ্যে একমত প্রকাশ করেছেন। তারেক রহমানের ১৮ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় বক্তব্য দেওয়ার কথা আছে বলে জানান আসাদুল হাবিব।
প্রস্তুতিমূলক সভায় সভাপতিত্ব করেন গাইবান্ধা জেলা বিএনপির সভাপতি মইনুল হাসান। বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির রংপুর বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুন্নবী, সহসভাপতি শহীদুজ্জামান, আইনজীবী জাহাঙ্গীর আলম, সুন্দরগঞ্জ পৌর বিএনপির আহ্বায়ক ইখতিয়ার উদ্দিন ভূঁইয়া প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এনপ র
এছাড়াও পড়ুন:
যেকোনো মূল্যে ধানের শীষকে জেতাতে হবে: তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, “যেকোনো মূল্যে ধানের শীষকে জেতাতে হবে।”
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) রাজধানীর ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের মিলনায়তনে ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এই মন্তব্য করেন।
আরো পড়ুন:
নির্বাচন ঘিরে সরগরম কেরাণীগঞ্জের রাজনীতি
হেভিওয়েটদের বিপক্ষে এনসিপির প্রার্থী হচ্ছেন যারা
তারেক রহমান বলেন, “সামনের নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই নির্বাচনে যেকোনো মূল্যে ধানের শীষকে জেতাতে হবে। জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে বিএনপির পরিকল্পনা তুলে ধরতে হবে।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের প্রত্যেকটা মানুষের মানবাধিকার নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব। এই দেশ কারো ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়-মানুষের অধিকার, মর্যাদা ও নিরাপত্তা রক্ষাই আজ সবচেয়ে বড় প্রতিশ্রুতি।”
তারেক রহমান বলেন, “দীর্ঘ সময় ধরে স্বৈরাচারী শাসনের অধীনে দেশের মানুষের মৌলিক অধিকার হরণের ঘটনা ঘটেছে।”
তিনি বলেন, “শত শত মানুষ হত্যা, গুম ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। সাদা পোশাকে তুলে নেওয়া হয়েছে বহু মানুষকে। অনেকে ফিরে আসেনি। যারা ফিরেছে, তাদের শরীরে নির্যাতনের নির্মমতা লেগে রয়েছে।”
বিগত সরকারের উন্নয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আইটি পার্ক ও অবকাঠামোর নামে যেসব প্রকল্প হয়েছে, তার অনেকগুলোই আজ অব্যবহৃত পড়ে আছে—সেখানে গরু-ছাগল চরে বেড়াচ্ছে।”
তিনি বলেন, “আমরা সরকার পরিচালনার দায়িত্ব পেলে দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরব। প্রয়োজনে এ দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধও করব।”
তিনি আরো বলেন, “আমরা চাই না আর কোনো আবরার নির্মম হত্যার শিকার হোক। আমরা চাই না শহিদুল আলমের মতো কাউকে রাজনৈতিকভাবে নির্যাতনের মুখে পড়তে হোক। বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের জীবন ও সম্মান রক্ষাই আমাদের প্রথম কাজ।”
তারেক রহমান জানান, জাতীয়তাবাদী দর্শনই মানুষের সম্মান, নিরাপত্তা ও সমতার অধিকার নিশ্চিত করে। মানুষের মর্যাদার সঙ্গে বেঁচে থাকার অধিকার প্রতিষ্ঠাই বিএনপির রাজনীতির মূল ভিত্তি।
নারীর ক্ষমতায়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আগামী নির্বাচনে জনগণ আমাদের পক্ষে রায় দিলে ‘ফ্যামিলি কার্ড’ চালুর মাধ্যমে নারীদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করব। নারীসমাজকে শক্তিশালী না করলে দেশ এগোবে না।”
শিক্ষা ব্যবস্থা সংস্কারের পরিকল্পনা তুলে ধরে তিনি বলেন, “দ্বিতীয় ও তৃতীয় ভাষা শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা হবে, যাতে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা শেষে কর্মসংস্থানে সংকটে না পড়ে। দেশের ডাটাবেইস ধরে বিদেশে কর্মসংস্থানের পথও উন্মুক্ত করা হবে।”
তিনি বলেন, “আমাদের খাল খনন করতে হবে, পরিবেশ রক্ষায় ২৫ কোটি গাছ লাগাতে হবে।”
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর সভাপতিত্বে এতে আরো উপস্থিত ছিলেন হাবিব উন নবী খান সোহেল, ড. জিয়াউদ্দিন হায়দার, আমিনুল হক, হাসান জাফির তুহিন, আব্দুল মোনায়েম মুন্না, এস এম জিলানী প্রমুখ।
ঢাকা/আলী/সাইফ