সড়ক বিভাজকে ধাক্কার পর উল্টে গেল ট্রাক, মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
Published: 12th, February 2025 GMT
দ্রুতগতির একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা দেয় সড়ক বিভাজকে। এরপর ট্রাকটি উল্টে পড়ে পাশে থাকা একটি লেগুনা ও একটি মোটরসাইকেলের ওপর। এতে ঘটনাস্থলে নিহত হন মোটরসাইকেলের এক আরোহী। আজ বুধবার সকাল সাতটার দিকে চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার নিজামপুর বাজারে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখী লেনে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
নিহত মোটরসাইকেল আরোহীর নাম মো.
দুর্ঘটনাকবলিত লেগুনার চালক নুরুল মোস্তফা প্রথম আলোকে বলেন, সকালে সড়কের একপাশে দাঁড়িয়ে গাড়িতে যাত্রী নিচ্ছিলেন তিনি। এ সময় মোটরসাইকেল আরোহী আক্তার হোসেন লেগুনার পাশে আসেন। জানতে চান বাজার থেকে কেনা তাঁর কিছু পণ্য রেস্তোরাঁয় নিয়ে যেতে কত টাকা ভাড়া দিতে হবে। ভাড়া নিয়ে দরদাম করার সময় কয়লাবোঝাই ট্রাকটি পাশের সড়ক বিভাজকে ধাক্কা দেয়। এরপর উল্টে লেগুনা ও মোটরসাইকেলের ওপর পড়ে। নুরুল মোস্তফা বলেন, ‘ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে মোটরসাইকেলে থাকা আক্তার হোসেন ঘটনাস্থলে মারা যান। আমার লেগুনা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও আমি অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেয়েছি।’
জানতে চাইলে ঘটনাস্থলে থাকা কুমিরা হাইওয়ে থানা-পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) শামসুল হক প্রথম আলোকে বলেন, নিহত ব্যক্তির লাশ স্বজনেরা নিয়ে গেছেন। দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাক ও লেগুনাটি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তবে ট্রাকচালক ও সহকারী পালিয়ে গেছেন। তিনি আরও বলেন, ‘ধারণা করছি, চালক ঘুম নিয়ে গাড়ি চালানোর কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। তদন্ত করে এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দ র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
কমিটি নেই, সবাই নেতা
কয়রা উপজেলা বিএনপির কমিটি নেই একযুগ। দীর্ঘদিন ধরে চলেছে আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে। সেটিও ভেঙে দেওয়া হয়েছে ৪ মাস আগে। কমিটি না থাকায় দলের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা বাড়ছে। ভেঙে পড়ছে সাংগঠনিক শৃঙ্খলাও। কেউ কারও কথা শুনছেন না। অবস্থা এমন, যেন সবাই নেতা– অভিযোগ স্থানীয় নেতাকর্মীর।
কমিটি না থাকলেও উপজেলার একশ মিটারের মধ্যে পৃথক দুটি কার্যালয় রয়েছে। একটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক (বর্তমানে বহিষ্কৃত) নুরুল আমিন বাবুল। আরেকটি কার্যালয় চলছে খুলনা জেলা বিএনপির সদস্য এম এ হাসানের নেতৃত্বে। নেতৃত্বের এ দ্বন্দ্বের কারণে দীর্ঘদিন ধরে উপজেলায় সাংগঠনিক কার্যক্রমে গতি নেই। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ছাড়া অন্যান্য কর্মসূচিতে কার্যক্রমও সীমিত। এ অবস্থায় দ্রুত কমিটি দেওয়ার দাবি দলীয় নেতাকর্মীর।
পৃথক কার্যালয়ের বিষয়ে জেলা বিএনপির সদস্য এম এ হাসান বলেন, উপজেলায় একটি দলীয় কার্যালয় ছিল। পরে স্থানীয় একজন নেতা তাঁর অনুসারীদের নিয়ে আরেকটি কার্যালয় খুলেছেন; যা সংগঠনবিরোধী কাজ। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ওই নেতাকে বহিষ্কার করা হলেও এখন পর্যন্ত তিনি কার্যালয়টি বন্ধ করেননি।
দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি মনজুর আলম বলেন, ৫ আগস্টের পর দুই নেতার বিরোধ স্পষ্ট হয়েছে। আগে দলে বিভক্তি থাকলেও আলাদা কার্যালয় ছিল না। এখন দুটি কার্যালয় থাকায় বিভ্রান্ত হচ্ছেন কর্মী-সমর্থকরা।
২০১৩ সাল পর্যন্ত উপজেলায় বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি ছিল। এরপর দুই দফায় আহ্বায়ক কমিটি করা হয়। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ২৪ মার্চ মোমরেজুল ইসলামকে আহ্বায়ক ও নুরুল আমিন বাবুলকে সদস্য সচিব করে আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেয় জেলা বিএনপি। এরপর থেকে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের অনুসারীদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। গত ২১ সেপ্টেম্বর দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে নুরুল আমিনকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় বিএনপি। এ অবস্থায় চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি সম্মেলনের মাধ্যমে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলা কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু।
এদিকে কমিটি না থাকায় বেশির ভাগ নেতা স্বার্থের দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছেন। কয়েকজনের বিরুদ্ধে হাট, ঘাট, খাল দখলের অভিযোগ রয়েছে। সরকারি সুবিধায় হস্তক্ষেপেরও অভিযোগ আছে। এতে দলের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এ অবস্থায় দ্রুত কমিটি গঠন করা জরুরি বলে মনে করেন বিএনপির সাবেক নেতা আব্দুস সামাদ।
সাবেক আহ্বায়ক নুরুল আমিন বলেন, ভিত্তিহীন অভিযোগে আমাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। বর্তমানে দলীয় কোনো কার্যক্রমে অংশ নিতে পারছি না। আশা করছি খুব দ্রুতই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার হবে। তখন গ্রহণযোগ্য কমিটি গঠনের চেষ্টা করব।
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোমরেজুল ইসলাম বলেন, এ মুহূর্তে কয়রায় বিএনপির কোনো কমিটি নেই। কমিটি হলে দলীয় সব বিরোধ মিটে যাবে বলে আশা করছি।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু বলেন, কয়রায় কমিটি গঠনের জন্য জেলা বিএনপি থেকে ৫ সদস্যের সার্চ কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। ওই কমিটি নেতাকর্মীর বিরোধও নিষ্পত্তি করবে। দ্রুতই ঐক্যবদ্ধ একটি কমিটি উপহার দেওয়া হবে।