যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্প প্রশাসনের স্বেচ্ছা পদত্যাগ কর্মসূচিতে ৭৫ হাজার সরকারি কর্মী যুক্ত
Published: 13th, February 2025 GMT
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের ঘোষিত স্বেচ্ছা পদত্যাগ কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের প্রায় ৭৫ হাজার কর্মী। বুধবার ইউএস অফিস অব পার্সোনেল ম্যানেজমেন্টের একজন মুখপাত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সরকারি ব্যয় কমানো ও কেন্দ্রীয় সরকারের আকার সংকুচিত করার লক্ষ্যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। তার অংশ হিসেবে ২৩ লাখ বেসামরিক সরকারি কর্মীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মীকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। খবর রয়টার্সের।
এ উদ্দেশ্যে ট্রাম্প প্রশাসন প্রণোদনার বিনিময়ে কর্মীদের স্বেচ্ছায় পদত্যাগের প্রস্তাব (বাইআউট কর্মসূচি) দিয়েছে। ট্রাম্প অভিযোগ করেছেন, এই বিপুল জনশক্তির একটি অংশ অকার্যকর এবং তার প্রশাসনের প্রতি পক্ষপাতদুষ্ট।
স্বেচ্ছা পদত্যাগ কর্মসূচির পাশাপাশি ট্রাম্প প্রশাসন বিভিন্ন সরকারি সংস্থাকে কর্মী ছাঁটাইয়ের নির্দেশ দিয়েছে। একাধিক সূত্র জানিয়েছে, কিছু সরকারি সংস্থার ৭০ শতাংশ পর্যন্ত কর্মী ছাঁটাইয়ের প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। এরই মধ্যে কয়েকটি সংস্থা নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মীদের চাকরিচ্যুত করা শুরু করেছে।
সরকারি কর্মীদের স্বার্থ রক্ষায় শ্রমিক ইউনিয়নগুলো ট্রাম্প প্রশাসনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার আহ্বান জানিয়েছে। তারা বলেছে,ট্রাম্পের দেওয়া প্রতিশ্রুতির ওপর আস্থা রাখা যায় না।
প্রস্তাব অনুযায়ী, স্বেচ্ছা পদত্যাগের বিনিময়ে সংশ্লিষ্ট কর্মীরা আগামী অক্টোবর পর্যন্ত কোনো কাজ না করেও নিয়মিত বেতন ও অন্যান্য সুবিধা পাবেন। তবে এটি নিশ্চিত নয়, কারণ বর্তমান সরকারি ব্যয়সংশ্লিষ্ট আইনগুলোর মেয়াদ ১৪ মার্চ শেষ হচ্ছে।
যেসব কর্মী স্বেচ্ছা পদত্যাগ কর্মসূচি গ্রহণ করবেন না, তারা ১৪ মার্চের পর বেতন ও অন্যান্য সুবিধা পাবেন কিনা, সে বিষয়ে কোনো নিশ্চয়তা নেই। এমনকি তাদের চাকরিচ্যুত করার সম্ভাবনাও রয়েছে।
দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ট্রাম্প তার প্রশাসনে নতুন একটি বিভাগ ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট ইফিশিয়েনসি’ গঠন করেছেন এবং এর প্রধান হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন ধনকুবের ইলন মাস্ককে।
ইলন মাস্ক যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় বাজেট থেকে এক লাখ কোটি ডলার সাশ্রয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। গত বছর কেন্দ্রীয় বাজেটের আকার ছিল ৬ লাখ ৭৫ হাজার কোটি ডলার, যার ৫ শতাংশেরও কম সরকারি কর্মচারীদের বেতন বাবদ ব্যয় করা হয়।
ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত মার্কিন কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ তৈরি করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের ছাঁটাই ও প্রশাসনিক পরিবর্তন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি কার্যক্রমের ওপর দীর্ঘমেয়াদে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: পদত য গ কর ম দ র কর ছ ন সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ঘুমের ওষুধ খাইয়ে স্বামীকে হত্যা, ফাঁদ পেতে ধরা হলো প্রেমিককে
পাবনার চাটমোহর উপজেলার কাটেঙ্গা গ্রামে ক্যানসার আক্রান্ত স্বামীকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্ত্রীর বিরুদ্ধে।
দশদিন পর ঘটনা জানাজানি হলে অভিযুক্ত স্ত্রী শারমিন খাতুন ও তার প্রেমিককে আটক করে পুলিশ। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে পরিবারের সদস্যরা পুলিশকে ঘটনাটি জানায়।
এর আগে গত ৩০ নভেম্বর চাটমোহরের দক্ষিণপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মৃত স্বামী শের আলী (৩৫) দক্ষিণপাড়া গ্রামের ভোলা প্রামানিকের ছেলে। শারমিন খাতুন (২৬) কাটেঙ্গা গ্রামের শাহ আলমের মেয়ে। এবং তার প্রেমিক অনিক (২২) একইগ্রামের মহাজন সরকারের ছেলে।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ নভেম্বর শের আলীর মৃত্যু হয়। তিনি ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। তার মৃত্যুর পর বিষয়টি স্বাভাবিক হিসেবে শুরুতে মেনে নিলেও সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যুকে ঘিরে পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়দের মধ্যে নানা প্রশ্ন দেখা দেয়।
জানা যায়, শের আলীর চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও ইউটিউবারদের মাধ্যমে চিকিৎসা সহায়তার অর্থ সংগ্রহ করা হয়েছিল। অভিযোগ রয়েছে, সেই অর্থের একটি বড় অংশ শারমিন অনিককে দিয়েছেন।
মৃত শের আলীর ফুপাতো ভাই এনামুল হোমেনের দাবি, শারমিন ও অনিকের মধ্যে ফেসবুক মেসেঞ্জারে হওয়া কথোপকথন ঘেঁটে টাকা লেনদেনের একাধিক তথ্য পাওয়া গেছে। সেখান থেকেই প্রথম সন্দেহের সূত্রপাত।
এরপর ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে পরিবারের সদস্যরা কৌশল অবলম্বন করেন। শারমিনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে অনিককে টাকা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে আসতে বলে মেসেজ পাঠানো হয়। অনিক এই ফাঁদে পা দেন।
শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে অনিকে টাকা নিতে এলে স্থানীয়রা তাকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে অসংলগ্ন বক্তব্য ও পরস্পরবিরোধী তথ্য দিলে সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়। পরে অনিক ও শারমিন স্বীকার করেন, প্রায় চার মাস ধরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে।
শারমিন এ সময় জানান, গত ৩০ নভেম্বর একসঙ্গে দশটি ঘুমের ওষুধ শের আলীকে তিনি খাইয়েছিলেন। এতে শের আলীর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে এবং কিছু সময়ের মধ্যেই তার মৃত্যু হয়।
শের আলীর মা শিরীনা খাতুন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘‘আমার অসুস্থ ছেলেকে ওর বউ ঘুমের ওষুধ খাইয়েছে। সে সহ্য করতে না পেরে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে এসে দেখি আমার ছেলে আর বেঁচে নেই। আমি এর দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।’’
চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম সরোয়ার হোসেন বলেন, ‘‘মৃত ব্যক্তির পরিবারে পক্ষ থেকে কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি বা মামলা করেনি। যেহেতু ঘটনাস্থল থেকে দুজনকে আটক করা হয়েছে, সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ আইনগত প্রক্রিয়া শেষে তাদের পাবনা আদালতে সোপর্দ করেছে।’’
ঢাকা/শাহীন//