খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে লালন, পিসি রায় ও শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নাম বাদ, সমালোচনা
Published: 15th, February 2025 GMT
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলসহ বিভিন্ন ভবনের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৩টি ভবন ও স্থাপনা আগের নামে ফিরিয়ে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এতে ভবনগুলো থেকে খুলনার কৃতি সন্তান বিজ্ঞানী আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় (পিসি রায়), লালন সাঁই, কবি জীবননান্দ দাশসহ শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নাম বাদ পড়েছে। গত ১২ ফেব্রুয়ারি নাম পরিবর্তন সংক্রান্ত অফিস আদেশ জারি করা হয়। এর আগে ৮ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের ২৩০তম সভায় নামকরণের বিষয়টি অনুমোদন দেওয়া হয়।
বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থীদের অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নামের পাশাপাশি কবি, শিল্পী, বিজ্ঞানী ও বুদ্ধিজীবীদের নাম পরিবর্তনের সমালোচনা করেছেন অনেকে।
তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী কয়েকটি ভবনের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। বাকিগুলো আগে যে নামে পরিচিত ছিল, সেই নামেই ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নাম পরিবর্তনের সঙ্গে বেশকিছু বিষয় জড়িত রয়েছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র রাজনীতিমুক্ত। স্থাপনার রাজনৈতিক নামকরণ না করার বিষয়ে সবার মধ্যে ঐক্যমত ছিল। ১৯৯১ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ের কোনো স্থাপনাই রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নামে হয়নি। ২০১৬ সালে এই ধারার ছন্দপতন ঘটান তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ফায়েক উজ জামান। তিনি ছাত্রদের নতুন হল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে এবং ছাত্রীদের নতুন হল বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব নামকরণ করেন।
পরবর্তীতে ২০১৬ সালের ২২ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের ১৮৮তম সভায় ১৯টি ভবন ও স্থাপনার নতুন নামকরণ করা হয়। ওই বছরের ৬ নভেম্বর অফিস আদেশ জারির পর ভবনগুলোর নাম পরিবর্তন হয়ে যায়। তখন একাডেমিক ভবন-১ কে ড.
এছাড়া টিএসসিকে লালন সাঁই মিলনায়তন, অতিথি ভবনকে মাইকেল মধুসূদনের নামে, কেন্দ্রীয় গবেষণাগারকে আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের নামে, মেডিকেল সেন্টারকে শহিদ বুদ্ধিজীবী ডা. আলীম চৌধুরীর নামে, জিনেসিয়ামকে সুলতানা কামালের নামে, আইইআর ভবনকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামে, আবাসিক ভবনগুলোর মধ্যে প্রফেসরস কোয়ার্টারকে শহিদ বুদ্ধিজীবী ড. জোতির্ময় গুহ ঠাকুরতার নামে, এসোসিয়েট প্রফেসরস কোয়ার্টারকে শহীদ বুদ্ধিজীবী ড. সুখরঞ্জন সমাদ্দারের নামে, এসিস্ট্যান্ট প্রফেসরস কোয়ার্টারকে শহিদ বুদ্ধিজীবী ড. গোবিন্দ চন্দ্র দেব এবং লেকচারারস কোয়ার্টারকে শহিদ বুদ্ধিজীবী এস এম এ রাশিদুল হাসানের নামে নামকরণ করা হয়।
এর মধ্যে একাডেমিক ভবন-৪ (জয় বাংলা ভবন), টিএসসি (লালন সাই), আরইআর ভবন ও জিমনেশিয়ামের কাজ এখনও শেষ হয়নি। ভবনের নামগুলো শুধু কাগজেই রয়ে গেছে।
সূত্র জানায়, গতবছর গণঅভ্যুত্থানে খুলনার আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিল খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। অভ্যুত্থানের পর গতবছরের ২৮ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কার ও শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে ৩৭ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়। এর মধ্যে অন্যতম ছিল ক্যাম্পাসের সব স্থাপনা থেকে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নাম পরিবর্তন।
ওই দিন দাবি উত্থাপনকারীদের ছিলেন শিক্ষার্থী আয়মান আহাদ। তিনি সমকালকে বলেন, আমরা ফ্যাসিজম রেজিমের সবার নাম পরিবর্তন চেয়েছি। বিশেষ করে শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম পরিবর্তন করে মুক্তিযুদ্ধে খুলনায় নিহত বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের নামে নামকরণের প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু বিজ্ঞানী, বুদ্ধিজীবীদের নামে করা স্থাপনার বিষয়ে আমাদের কোনো বক্তব্য ছিল না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. এস এম মাহবুবুর রহমান বলেন, ছাত্রদের দাবির মুখে অধ্যাপক ড. এ টি এম জহির উদ্দিনকে প্রধান করে কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি গতবছরের ১২ ডিসেম্বর গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে নামের প্রস্তাব চায়। এরপর কমিটির প্রস্তাব বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটে উত্থাপন করা হলে সিন্ডিকেট সেটি অনুমোদন দিয়েছে।
নতুন আদেশে দেখা গেছে, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের’ নাম পরিবর্তন করে বীর শ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন হল, ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের’ নাম পরিবর্তন করে বিজয়-২৪ হল, সৈয়দ নজরুল ইসলাম ভবনের নাম পরিবর্তন করে খুবির প্রথম উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম রহমান প্রশাসনিক ভবন করা হয়েছে। মাইকেল মধুসূদন দত্ত অতিথি ভবন, কাজী নজরুল ইসলাম গ্রন্থাগার ও রবীন্দ্রনাম ঠাকুর শিক্ষা ভবন (আইইআর) নাম বহাল রেখে অন্য ১৩টি ভবন ও স্থাপনা আগের নামে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী, দেশসেরা বিজ্ঞানীদের নাম বাদ দেওয়া নিয়ে সমালোচনা করছেন অনেকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সৈকত তার ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেন, ‘আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের জন্মভূমি যেখানে, সেই খুলনার বিশ্ববিদ্যালয়ই তার স্মৃতি মনে রাখতে চায় না, আমি হতাশ।’
জহুরুল তানভীর লেখেন, ‘মাথা ব্যথা করতেছে, তাই মাথাটাই কেটে ফেললাম-এই হলো খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ভবনের নাম পরিবর্তনের অবস্থা!’
এদিকে হলের ছাত্রীরাও বিজয় ২৪ হলের নামকরণ নিয়ে গত বুধবার রাতে বিক্ষোভ করেছেন। তাদের দাবি মহয়সী কোনো নারীর নামে হলের নামকরণ হোক।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে নাম পরিবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। বসবাসের কোয়াটারের নাম শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নামে, এটা মানানসই নয়। অন্যান্যদের নামও স্থাপনার সঙ্গে যাচ্ছিল না, এজন্য বেশিরভাগই আমরা আগের নামে ফিরে গেছি। পিসি রায়ের নামে একটি কলেজসহ বহু একক স্থাপনা রয়েছে। ভবিষ্যতে আমরা খুলনা অঞ্চলের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নামে স্থাপনার নামকরণ করব। মেয়েদের হলের নামও পরিবর্তন হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব র রহম ন হল র ন ম র জন ত ক ভবন ও
এছাড়াও পড়ুন:
জনবল নিয়োগ দিচ্ছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী, পদ ৪৩০
বিভিন্ন পদে লোকবল নিয়োগ দেবে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। নাবিক, মহিলা নাবিক ও এমওডিসি (নৌ) পদে ৪৩০ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে এ–সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে। এর মধ্যে ৪০০ জন পুরুষ ও ৩০ জন নারী। সব জেলার প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।
পদের নাম ও বিবরণ
১. ডিই/ইউসি (সিম্যান, কমিউনিকেশন ও টেকনিক্যাল)
পদসংখ্যা: ২৮০ (পুরুষ)।
শিক্ষাগত যোগ্যতা: ন্যূনতম এসএসসি (বিজ্ঞান)/সমমান [মাদ্রাসা (বিজ্ঞান), জোকেশনালসহ], জিপিএ–৩.৫০ ও তদূর্ধ্ব।
শারীরিক যোগ্যতা: উচ্চতা ১৬৭.৫ সেন্টিমিটার।
২. রেগুলেটিং
পদসংখ্যা: ১২ (পুরুষ), ৮ (মহিলা)।
শিক্ষাগত যোগ্যতা: ন্যূনতম এসএসসি (বিজ্ঞান)/সমমান [মাদ্রাসা (বিজ্ঞান), ভোকেশনালসহ], জিপিএ–৩.০০ ও তদূর্ধ্ব।
শারীরিক যোগ্যতা: উচ্চতা ১৭২.৫ (পুরুষ), ১৬০.০২ (মহিলা)।
৩. রাইটার
পদসংখ্যা: ১৮ (পুরুষ), ৪ (মহিলা)।
শিক্ষাগত যোগ্যতা: ন্যূনতম এসএসসি (বিজ্ঞান)/সমমান [মাদ্রাসা (বিজ্ঞান), ভোকেশনালসহ], জিপিএ–৩.০০ ও তদূর্ধ্ব।
শারীরিক যোগ্যতা: উচ্চতা ১৬২.৫ (পুরুষ), ১৫৭.৪৮ (মহিলা)।
৪. স্টোর
পদসংখ্যা: ১৪ (পুরুষ), ৪ (মহিলা)।
শিক্ষাগত যোগ্যতা: ন্যূনতম এসএসসি (বিজ্ঞান)/সমমান [মাদ্রাসা (বিজ্ঞান), ভোকেশনালসহ], জিপিএ–৩.০০ ও তদূর্ধ্ব।
শারীরিক যোগ্যতা: উচ্চতা ১৬২.৫ (পুরুষ), ১৫৭.৪৮ (মহিলা)।
৫. মিউজিশিয়ান
পদসংখ্যা: ৮ (পুরুষ)।
শিক্ষাগত যোগ্যতা: ন্যূনতম এসএসসি (বিজ্ঞান)/সমমান [মাদ্রাসা (বিজ্ঞান), ভোকেশনালসহ], জিপিএ–৩.০০ ও তদূর্ধ্ব।
শারীরিক যোগ্যতা: উচ্চতা ১৬২.৫ (পুরুষ)।
আরও পড়ুনবিমানবাহিনী নেবে অফিসার ক্যাডেট, দেখুন চাকরির বিস্তারিত১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫৬. মেডিকেল
পদসংখ্যা: ১০ (পুরুষ), ৬ (মহিলা)।
শিক্ষাগত যোগ্যতা: জীববিজ্ঞানসহ ন্যূনতম এসএসসি (বিজ্ঞান)/সমমান, জিপিএ–৩.৫০ ও তদূর্ধ্ব।
শারীরিক যোগ্যতা: উচ্চতা ১৬২.৫ (পুরুষ), ১৫৭.৪৮ (মহিলা)
৭. কুক
পদসংখ্যা: ২৫ (পুরুষ)।
শিক্ষাগত যোগ্যতা: ন্যূনতম এসএসসি/সমমান (মাদ্রাসা, ভোকেশনালসহ), জিপিএ–২.৫০ ও তদূর্ধ্ব।
শারীরিক যোগ্যতা: উচ্চতা ১৬২.৫ (পুরুষ)
৮. স্টুয়ার্ড
পদসংখ্যা: ১০ (পুরুষ), ৮ (মহিলা)।
শিক্ষাগত যোগ্যতা: ন্যূনতম এসএসসি/সমমান (মাদ্রাসা, ভোকেশনালসহ), জিপিএ–২.৫০ ও তদূর্ধ্ব।
শারীরিক যোগ্যতা: উচ্চতা ১৬২.৫ (পুরুষ), ১৫৭.৪৮ (মহিলা)
৯. টোপাস
পদসংখ্যা: ১৫ (পুরুষ)।
শিক্ষাগত যোগ্যতা: ন্যূনতম অষ্টম শ্রেণি পাস।
শারীরিক যোগ্যতা: উচ্চতা ১৬২.৫ (পুরুষ)।
আরও পড়ুনপ্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে বড় নিয়োগ, পদ ৪৭০১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫১০. এমওডিসি (নৌ)
পদসংখ্যা: ৮ (পুরুষ)।
শিক্ষাগত যোগ্যতা: ন্যূনতম এসএসসি/সমমান (মাদ্রাসা, ভোকেশনালসহ), জিপিএ–৩.০০ ও তদূর্ধ্ব।
শারীরিক যোগ্যতা: উচ্চতা ১৬৭.৫ (পুরুষ)
বেতন ও ভাতা
সশস্ত্র বাহিনীর বেতনকাঠামো অনুযায়ী।
বয়সসীমা১ জানুয়ারি ২০২৬ তারিখে—
১. নাবিক: ১৭ থেকে ২০ বছর।
২. এমওডিসি (নৌ): ১৭ থেকে ২২ বছর।
আরও পড়ুনটিআইবিতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ, নেবে ১২৫ জন১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫অন্যান্য শর্ত (সব পদের জন্য)১. সাঁতার জানা অত্যাবশ্যক।
২. অবিবাহিত (বিপত্নীক/তালাকপ্রাপ্ত নয়)।
৩. চাকরিরত প্রার্থীদের নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র আনতে হবে।
আবেদনের নিয়ম
www.joinnavy.navy.mil.bd ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে।
আবেদন ফি
৩০০ টাকা (বিকাশ/নগদ/রকেট/TAP/Ok Wallet)।
আবেদনের শেষ সময়
৫ অক্টোবর ২০২৫।
আরও পড়ুন১২ দিনের ছুটিতে যাচ্ছে সরকারি নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫আরও পড়ুনসিনিয়র অফিসার নেবে বেসরকারি ব্যাংক, বেতন ৪০০০০১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫