খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলসহ বিভিন্ন ভবনের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৩টি ভবন ও স্থাপনা আগের নামে ফিরিয়ে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এতে ভবনগুলো থেকে খুলনার কৃতি সন্তান বিজ্ঞানী আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় (পিসি রায়), লালন সাঁই, কবি জীবননান্দ দাশসহ শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নাম বাদ পড়েছে। গত ১২ ফেব্রুয়ারি নাম পরিবর্তন সংক্রান্ত অফিস আদেশ জারি করা হয়। এর আগে ৮ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের ২৩০তম সভায় নামকরণের বিষয়টি অনুমোদন দেওয়া হয়। 

বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থীদের অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নামের পাশাপাশি কবি, শিল্পী, বিজ্ঞানী ও বুদ্ধিজীবীদের নাম পরিবর্তনের সমালোচনা করেছেন অনেকে।

তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী কয়েকটি ভবনের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। বাকিগুলো আগে যে নামে পরিচিত ছিল, সেই নামেই ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নাম পরিবর্তনের সঙ্গে বেশকিছু বিষয় জড়িত রয়েছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র রাজনীতিমুক্ত। স্থাপনার রাজনৈতিক নামকরণ না করার বিষয়ে সবার মধ্যে ঐক্যমত ছিল। ১৯৯১ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ের কোনো স্থাপনাই রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নামে হয়নি। ২০১৬ সালে এই ধারার ছন্দপতন ঘটান তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ফায়েক উজ জামান। তিনি ছাত্রদের নতুন হল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে এবং ছাত্রীদের নতুন হল বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব নামকরণ করেন।

পরবর্তীতে ২০১৬ সালের ২২ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের ১৮৮তম সভায় ১৯টি ভবন ও স্থাপনার নতুন নামকরণ করা হয়। ওই বছরের ৬ নভেম্বর অফিস আদেশ জারির পর ভবনগুলোর নাম পরিবর্তন হয়ে যায়। তখন একাডেমিক ভবন-১ কে ড.

সত্যেন্দ্র নাথ বসুর নামে, একাডেমিক ভবন-২ কে আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসুর নামে, একাডেমিক ভবন-৩ কবি জীবনানন্দ দাশের নামে, নির্মাণাধীন ১০ তলা একাডেমিক ভবনকে জয় বাংলা ভবন, প্রশাসনিক ভবনকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদের নামে, পুরাতন প্রশাসনিক ভবন সৈয়দ নজরুল ইসলামের নামে করা হয়।

এছাড়া টিএসসিকে লালন সাঁই মিলনায়তন, অতিথি ভবনকে মাইকেল মধুসূদনের নামে, কেন্দ্রীয় গবেষণাগারকে আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের নামে, মেডিকেল সেন্টারকে শহিদ বুদ্ধিজীবী ডা. আলীম চৌধুরীর নামে, জিনেসিয়ামকে সুলতানা কামালের নামে, আইইআর ভবনকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামে, আবাসিক ভবনগুলোর মধ্যে প্রফেসরস কোয়ার্টারকে শহিদ বুদ্ধিজীবী ড. জোতির্ময় গুহ ঠাকুরতার নামে, এসোসিয়েট প্রফেসরস কোয়ার্টারকে শহীদ বুদ্ধিজীবী ড. সুখরঞ্জন সমাদ্দারের নামে, এসিস্ট্যান্ট প্রফেসরস কোয়ার্টারকে শহিদ বুদ্ধিজীবী ড. গোবিন্দ চন্দ্র দেব এবং লেকচারারস কোয়ার্টারকে শহিদ বুদ্ধিজীবী এস এম এ রাশিদুল হাসানের নামে নামকরণ করা হয়।

এর মধ্যে একাডেমিক ভবন-৪ (জয় বাংলা ভবন), টিএসসি (লালন সাই), আরইআর ভবন ও জিমনেশিয়ামের কাজ এখনও শেষ হয়নি। ভবনের নামগুলো শুধু কাগজেই রয়ে গেছে।

সূত্র জানায়, গতবছর গণঅভ্যুত্থানে খুলনার আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিল খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। অভ্যুত্থানের পর গতবছরের ২৮ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কার ও শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে ৩৭ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়। এর মধ্যে অন্যতম ছিল ক্যাম্পাসের সব স্থাপনা থেকে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নাম পরিবর্তন।

ওই দিন দাবি উত্থাপনকারীদের ছিলেন শিক্ষার্থী আয়মান আহাদ। তিনি সমকালকে বলেন, আমরা ফ্যাসিজম রেজিমের সবার নাম পরিবর্তন চেয়েছি। বিশেষ করে শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম পরিবর্তন করে মুক্তিযুদ্ধে খুলনায় নিহত বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের নামে নামকরণের প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু বিজ্ঞানী, বুদ্ধিজীবীদের নামে করা স্থাপনার বিষয়ে আমাদের কোনো বক্তব্য ছিল না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. এস এম মাহবুবুর রহমান বলেন, ছাত্রদের দাবির মুখে অধ্যাপক ড. এ টি এম জহির উদ্দিনকে প্রধান করে কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি গতবছরের ১২ ডিসেম্বর গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে নামের প্রস্তাব চায়। এরপর কমিটির প্রস্তাব বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটে উত্থাপন করা হলে সিন্ডিকেট সেটি অনুমোদন দিয়েছে।

নতুন আদেশে দেখা গেছে, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের’ নাম পরিবর্তন করে বীর শ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন হল, ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের’ নাম পরিবর্তন করে বিজয়-২৪ হল, সৈয়দ নজরুল ইসলাম ভবনের নাম পরিবর্তন করে খুবির প্রথম উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম রহমান প্রশাসনিক ভবন করা হয়েছে। মাইকেল মধুসূদন দত্ত অতিথি ভবন, কাজী নজরুল ইসলাম গ্রন্থাগার ও রবীন্দ্রনাম ঠাকুর শিক্ষা ভবন (আইইআর) নাম বহাল রেখে অন্য ১৩টি ভবন ও স্থাপনা আগের নামে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

শহীদ বুদ্ধিজীবী, দেশসেরা বিজ্ঞানীদের নাম বাদ দেওয়া নিয়ে সমালোচনা করছেন অনেকে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সৈকত তার ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেন, ‘আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের জন্মভূমি যেখানে, সেই খুলনার বিশ্ববিদ্যালয়ই তার স্মৃতি মনে রাখতে চায় না, আমি হতাশ।’

জহুরুল তানভীর লেখেন, ‘মাথা ব্যথা করতেছে, তাই মাথাটাই কেটে ফেললাম-এই হলো খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ভবনের নাম পরিবর্তনের অবস্থা!’

এদিকে হলের ছাত্রীরাও বিজয় ২৪ হলের নামকরণ নিয়ে গত বুধবার রাতে বিক্ষোভ করেছেন। তাদের দাবি মহয়সী কোনো নারীর নামে হলের নামকরণ হোক।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে নাম পরিবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। বসবাসের কোয়াটারের নাম শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নামে, এটা মানানসই নয়। অন্যান্যদের নামও স্থাপনার সঙ্গে যাচ্ছিল না, এজন্য বেশিরভাগই আমরা আগের নামে ফিরে গেছি। পিসি রায়ের নামে একটি কলেজসহ বহু একক স্থাপনা রয়েছে। ভবিষ্যতে আমরা খুলনা অঞ্চলের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নামে স্থাপনার নামকরণ করব। মেয়েদের হলের নামও পরিবর্তন হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব র রহম ন হল র ন ম র জন ত ক ভবন ও

এছাড়াও পড়ুন:

ইসলাম অনুসারে সন্তানের আধুনিক নাম

সন্তানের নাম দেওয়া একটি পবিত্র ও তাৎপর্যপূর্ণ দায়িত্ব। ইসলামে নামকরণ শুধু একটি সামাজিক রীতি নয়, বরং এটি সন্তানের পরিচয়, যা চরিত্র ও ভবিষ্যৎ জীবনের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত।

আধুনিক যুগে মুসলিম পরিবারগুলো সন্তানের নাম রাখার ক্ষেত্রে এমন নাম খুঁজছে, যা ইসলামি মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, অথচ সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আধুনিক, সংক্ষিপ্ত ও শ্রুতিমধুর।

ফলে ইসলামের আলোকে মুসলিম সন্তানের নামকরণের গুরুত্ব, আধুনিক নামের প্রবণতা এবং কীভাবে ইসলামি ও আধুনিকতার সমন্বয় ঘটানো যায়, তা নিয়ে আলোচনার দাবি রাখে।

ইসলামে নামকরণের গুরুত্ব

ইসলামে সন্তানের নামকরণ একটি ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক দায়িত্ব। রাসুল (সা.) বলেন, ‘প্রত্যেক সন্তানের বেলায় পিতার দায়িত্ব হলো তাকে একটি সুন্দর নাম দেওয়া এবং তাকে ভালো শিক্ষা দেওয়া।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ৪,৯৪৯)

নাম শুধু একটি পরিচয় নয়, বরং এটি সন্তানের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

ইসলামে নামের অর্থের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। রাসুল (সা.) নিজে কিছু নাম পরিবর্তন করে দিয়েছিলেন, যদি সেগুলোর অর্থ ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বা অশোভন হতো। তিনি ‘হারব’ (যুদ্ধ) নামটি পরিবর্তন করে ‘হাসান’ (সুন্দর) রেখেছিলেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,১৯০)

এটি প্রমাণ করে যে নামের অর্থ সুন্দর, ইতিবাচক ও ইসলামি মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া উচিত।

আরও পড়ুনদস্তরখানের নামে সুরার নাম০৪ মার্চ ২০২৫রাসুল (সা.) নিজে কিছু নাম পরিবর্তন করে দিয়েছিলেন, যদি সেগুলোর অর্থ ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বা অশোভন হতো। তিনি ‘হারব’ (যুদ্ধ) নামটি পরিবর্তন করে ‘হাসান’ (সুন্দর) রেখেছিলেন।আধুনিক নামকরণের প্রবণতা

আধুনিক যুগে মুসলিম সমাজে নামকরণের ক্ষেত্রে কিছু নতুন প্রবণতা লক্ষ করা যায়। মা–বাবা এখন এমন নাম পছন্দ করেন, যা সংক্ষিপ্ত, উচ্চারণে সহজ এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে গ্রহণযোগ্য। যেমন ‘আয়ান’, ‘ইয়াসির’, ‘জায়ান’, ‘নুয়াইরা’, ‘আদিয়া’ ইত্যাদি নাম বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম সম্প্রদায়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এই নামগুলোর অর্থও ভালো, যেমন ‘আয়ান’ অর্থ ‘ঐশী উপহার’ এবং ‘নুয়াইরা’ অর্থ ‘আলো’ বা ‘দীপ্তি’।

আধুনিক নামের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো এগুলো প্রায়ই লিঙ্গ-নিরপেক্ষ। ‘রায়ান’, ‘ইমান’ বা ‘নূর’–এর মতো নাম ছেলে ও মেয়ে উভয়ের জন্যই ব্যবহৃত হচ্ছে। এ ছাড়া বাংলা, আরবি, ফারসি ও উর্দু ভাষার শব্দের পাশাপাশি কিছু নাম স্থানীয় সংস্কৃতি থেকেও গৃহীত হচ্ছে, যা ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়।

ইসলামি ও আধুনিক নামের সমন্বয়

ইসলামি নাম বলতে শুধু আরবি নাম বোঝায় না। ইসলাম যেকোনো ভাষার নাম গ্রহণ করতে উৎসাহিত করে, যতক্ষণ তা অর্থপূর্ণ ও ইতিবাচক। শায়েখ উসাইমিন (রহ.) বলেন, ‘নাম যেকোনো ভাষার হতে পারে, যদি তা শরিয়াহের সঙ্গে সাংঘর্ষিক না হয় এবং অর্থে কোনো নেতিবাচকতা না থাকে।’ (ফাতাওয়া নূর আলা আদ-দারব, পৃষ্ঠা: ১২৫, দারুল ইফতা প্রকাশনী: ১৯৯৮)

আধুনিক নামকরণে এই নীতি মেনে চলা যায়। যেমন ‘তাহা’ (কোরআনের সুরার নাম), ‘ইলিয়াস’ (একজন নবীর নাম), ‘আমিনা’ (রাসুলের মায়ের নাম) ইত্যাদি নাম ইসলামি মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং আধুনিক পরিবেশেও গ্রহণযোগ্য।

নাম যেকোনো ভাষার হতে পারে, যদি তা শরিয়াহের সঙ্গে সাংঘর্ষিক না হয় এবং অর্থে কোনো নেতিবাচকতা না থাকে।শায়েখ সালেহ উসাইমিন (রহ.), ফাতাওয়া নূর আলা আদ-দারব

এ ছাড়া ‘জায়নাব’, ‘ফাতিমা’, ‘আলি’, ‘ওমর’ ইত্যাদি ঐতিহ্যবাহী নাম আজও জনপ্রিয় এবং সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছে।

আরও পড়ুনপাপ থেকে প্রত্যাবর্তন করার নাম তওবা২৮ জানুয়ারি ২০২৫নামকরণে সতর্কতা

নামকরণের ক্ষেত্রে কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরি।

প্রথমত, নামের অর্থ যেন ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক না হয়। কোনো দেব-দেবীর নাম বা শিরকের সঙ্গে সম্পৃক্ত নাম ব্যবহার করা উচিত নয়।

দ্বিতীয়ত, জটিল বা উচ্চারণে কঠিন নাম এড়িয়ে চলা ভালো।

তৃতীয়ত, নামটি এমন হওয়া উচিত, যা সন্তানের জন্য গর্বের এবং সমাজে তার পরিচয়কে ইতিবাচকভাবে উপস্থাপন করে।

অনেক মা–বাবা পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রভাবে এমন নাম রাখেন, যা ইসলামি মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ‘ডায়ানা’র মতো নাম অর্থের দিক থেকে সুন্দর হলেও ইসলামি পরিচয়ের সঙ্গে সব সময় মানানসই না–ও হতে পারে। এই ক্ষেত্রে মা–বাবাকে নামের অর্থ ও সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট সম্পর্কে সচেতন হতে হবে।

মা–বাবার করণীয় অনেক মা–বাবা পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রভাবে এমন নাম রাখেন, যা ইসলামি মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

ইসলামে নামকরণের জন্য কিছু নির্দেশনা রয়েছে।

প্রথমত, সন্তান জন্মের পর সপ্তম দিনে নামকরণ করা সুন্নাহ। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ২,৮৩২)

এই সময়ে আকিকা দেওয়ার রীতিও রয়েছে।

দ্বিতীয়ত, নাম রাখার আগে পরিবারের সদস্য, আলেম বা বিজ্ঞ ব্যক্তিদের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত।

তৃতীয়ত, নামটি এমন হওয়া উচিত, যা সন্তানের জন্য আত্মবিশ্বাসের উৎস হয়।

আধুনিক যুগে নামকরণের ক্ষেত্রে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, বই ও অ্যাপের সাহায্য নেওয়া যায়। তবে এসব ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, কারণ, অনেক সময় ভুল অর্থ বা অপ্রমাণিত তথ্য দেওয়া হতে পারে।

নাম শুধু একটি শব্দ নয়, এটি সন্তানের পরিচয়, চরিত্র ও সমাজে তার অবস্থানের প্রতিফলন। তাই মা–বাবার উচিত এমন নাম নির্বাচন করা, যা ইসলামি মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ও শ্রুতিমধুর।

আরও পড়ুন‘আল-ওয়াহিদ’ আল্লাহর অনন্য নাম২৩ জুন ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইসলাম অনুসারে সন্তানের আধুনিক নাম
  • মেয়াদোত্তীর্ণ অগ্নিনির্বাপকে চলছে বেরোবি