ঘুমন্ত উজ্জ্বলকে শ্বাসরোধে হত্যা, স্ত্রী-ছোট ভাই আটক
Published: 17th, February 2025 GMT
মৌলভীবাজারের বড়লেখায় স্ত্রী ও ছোট ভাই মিলে উজ্জ্বল বিশ্বাস নামে এক সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালককে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আটক করা হয়েছে নিহতের স্ত্রী ও ভাইকে।
রোববার মধ্যরাতে উপজেলার তালিমপুর ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে আজ সোমবার পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। এই ঘটনায় নিহতের স্ত্রী দিপনা রাণী বিশ্বাস ও ছোট ভাই জন্টু বিশ্বাসকে পুলিশ আটক করে।
উজ্জ্বল বিশ্বাস তালিমপুর ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামের সুবোধ বিশ্বাসের ছেলে। এদিন দুপুরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কুলাউড়া সার্কেল) কামরুল হাসান ও বড়লেখা থানার ওসি আব্দুল কাইয়ুম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, উজ্জ্বল বিশ্বাসের স্ত্রী দিপনা রাণী বিশ্বাসের সঙ্গে তার আপন ছোট ভাই জন্টু বিশ্বাসের সম্পর্ক গড় ওঠে। বিষয়টি জেনে ফেলেন উজ্জ্বল। এনিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ শুরু হয়। একপর্যায়ে স্বামীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন স্ত্রী দিপনা। পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার রাতে দিপনা ও জন্টু ঘুমন্ত উজ্জ্বলের গলায় মাফলার পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে লাশ বাড়ি থেকে নিয়ে রাস্তার পাশে ফেলে দেয়। রাতে বিষয়টি বুঝতে পেরে স্বজনরা উজ্জ্বলকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। ভোরের দিকে বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে রাস্তার পাশে তার লাশ পাওয়া যায়।
বড়লেখা থানার ওসি আব্দুল কাইয়ুম বলেন, নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে দিপনা ও ঝন্টু বিশ্বাসকে আটক করা হয়েছে। নিহত উজ্জ্বলের বাবা থানায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আটক
এছাড়াও পড়ুন:
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার
অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’
সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’
অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি বরাবর অভিযোগ করেন।
এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।