ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্কন ও চিত্রায়ণ বিভাগের উদ্যোগে বার্ষিক শিল্পকর্ম প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) চারুকলা অনুষদের জয়নুল গ্যালারিতে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।

অঙ্কন ও চিত্রায়ণ বিভাগের বিএফএ এবং এমএফএ এর ৮১জন শিক্ষার্থীর শিল্পকর্ম নিয়ে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। চলবে আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।  

অনুষদের ওসমান জামান মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড.

মামুন আহমেদ।

অঙ্কন ও চিত্রায়ণ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইকবাল আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আজহারুল ইসলাম শেখ। স্বাগত বক্তব্য দেন প্রদর্শনীর আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. দুলাল চন্দ্র গাইন।

এ সময় উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ বলেন, “দেশ ও সমাজের ইতিবাচক পরিবর্তনে শিল্পী সমাজের ভূমিকা রাখতে হবে। শিল্পীরা শিল্পকর্মের মাধ্যমে সমাজের নানা অসংগতি ও চারপাশের অদৃশ্য বিষয় আমাদের সামনে তুলে ধরেন। সৃজনশীল শিল্পকর্মের মাধ্যমে দেশের শিল্প জগৎকে সমৃদ্ধ করার জন্য তরুণ শিল্পীদের ভূমিকা রাখতে হবে।”

তিনি বলেন, “তরুণ শিল্পীদের আকর্ষণীয় ও বৈচিত্র্যময় শিল্পকর্ম নিয়ে আয়োজিত এ প্রদর্শনীর একটি ভিন্ন মাত্রা রয়েছে। আগামী দিনের শিল্প জগৎ এ তরুণ শিল্পীদের হাত ধরেই সমৃদ্ধ হবে।”

বার্ষিক শিল্পকর্ম প্রদর্শনীতে ১১ জন শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কৃত করা হয়। উপ-উপাচার্যসহ অন্য অতিথিরা শিল্পীদের মাঝে সনদ ও পুরস্কার বিতরণ করেন।

পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে রয়েছেন- এমএফএ দ্বিতীয় পর্বের শিক্ষার্থী রাকিন নাওয়ার (আনোয়ারুল হক পুরস্কার, সব মাধ্যমে শ্রেষ্ঠ), বিএফএ চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী দেওয়ান মো. ফয়সাল হাসান পাশা (রফিকুন নবী বিশেষ পুরস্কার), এমএফএ দ্বিতীয় পর্বের শিক্ষার্থী বনানী সিমলাই (শ্রেষ্ঠ পুরস্কার, নিরীক্ষাধর্মী কাজ), বিএফএ চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মামুন অর রশিদ লিয়ন (মাধ্যম শ্রেষ্ঠ পুরস্কার, তেলরং), বিএফএ তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ঐশী রানী মন্ডল (মাধ্যম শ্রেষ্ঠ পুরস্কার, পেন), বিএফএ দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী অভিজিৎ চন্দ্র দে (মাধ্যম শ্রেষ্ঠ পুরস্কার, পেন্সিল), এমএফএ দ্বিতীয় পর্বের শিক্ষার্থী অরৈনি হোসেন অথৈ (কাজী আব্দুল বাসেত স্মৃতি পুরস্কার), এমএফএ দ্বিতীয় পর্বের শিক্ষার্থী কৌস্তভ মানি পাঠক (দেলোয়ার হোসেন স্মৃতি পুরস্কার), এমএফএ দ্বিতীয় পর্বের শিক্ষার্থী ঝলক সাহা (মাহবুবুল আমিন স্মৃতি পুরস্কার), বিএফএ প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী তানজিলা ইসলাম (শহীদ শাহনেওয়াজ স্মৃতি পুরস্কার) এবং বিএফএ দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সমুদ্র সাহা (বিশেষ পুরস্কার, পেন্সিল)।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বর ষ র শ ক ষ র থ শ ল পকর ম ব এফএ

এছাড়াও পড়ুন:

অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার

অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’

সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।

সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।

এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’

অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি‌ বরাবর অভিযোগ করেন।

এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ