রাজধানীর খিলগাঁওয়ে কথা-কাটাকাটি থেকে মারধরে এক হকার নিহত
Published: 17th, February 2025 GMT
রাজধানীর খিলগাঁওয়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে মারধরের শিকার হয়ে মো. মইজ উদ্দিন (৪৪) নামের এক হকার নিহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
খিলগাঁও থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রেজাউল করিম মুগদা জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে গতকাল দিবাগত রাতে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করেন। পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায় পুলিশ।
পুলিশ জানায়, মইজ উদ্দিনের কপাল, মুখমণ্ডল, গলাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আঘাতজনিত কারণে তাঁর মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে বলে সুরতহাল প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এর বাইরে অন্য কোনো কারণ আছে কি না, তা তদন্ত সাপেক্ষে ও ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে জানা যাবে।
খিলগাঁও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গোলাম মোস্তফা বলেন, রোববার সন্ধ্যায় নন্দিপাড়া এলাকায় চা, সিগারেট খাওয়াকে কেন্দ্র করে স্থানীয় সুজন ও মনিরের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয় মইজ উদ্দিনের। একপর্যায়ে তাঁরা তাঁকে ব্যাপক মারধর করেন। পরে মুগদা হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় মইজ উদ্দিনের বোন নয়নতারা বাদী হয়ে মামলা করেছেন।
নিহত মইজ উদ্দিনের ভাতিজা আব্দুল মান্নান বলেন, মহিজ উদ্দিন ফুটপাতে কাপড়ের ব্যবসা করতেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মেঘনা উপজেলায়। থাকতেন খিলগাঁওয়ের নন্দিপাড়া এলাকায়। স্ত্রী অন্যত্র থাকতেন। পরিবারের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ছিল না। তাঁর এক ছেলে মোহন মালয়েশিয়াতে থাকেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানে ইসরায়েলের হামলার পর তেলের দামে অস্থিরতা
ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় আজ শুক্রবার ইসরায়েল হামলা চালানোয় মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা নাটকীয়ভাবে বেড়ে গেছে। এতে জ্বালানির তেলের জোগানে বিঘ্ন ঘটতে পারে, এমন আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ফলে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ছে। খবর বিবিসি ও রয়টার্সের।
অপরিশোধিত তেল ব্রেন্ট ক্রুড ফিউচারস ৯ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ বা ৬ দশমিক ২৯ মার্কিন ডলার বেড়ে প্রতি ব্যারেলের দাম ৭৫ দশমিক ৬৫ ডলারে উঠেছে। একপর্যায়ে দাম ৭৮ দশমিক ৫০ ডলারে পৌঁছায়, যা গত ২৭ জানুয়ারির পর সর্বোচ্চ। এ ছাড়া মার্কিন ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ৬ দশমিক ৪৩ ডলার বা ৯ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেড়ে ৭৪ দশমিক ৪৭ ডলারে উঠেছে। একপর্যায়ে দাম ৭৭ দশমিক ৬২ ডলারে উঠেছিল, যা কিনা ২১ জানুয়ারির পর সর্বোচ্চ।
অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির মানে হচ্ছে দুনিয়াজুড়ে সুপারমার্কেটে খাবারের দাম, গাড়িতে তেল ভরার খরচ, পরিবহন ব্যয়—সবকিছুর দাম বাড়বে। এতে নিম্ন আয়ের মানুষের জীবনযাত্রার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার বিষয়ে একজন ব্যবসায়ী রয়টার্সকে বলেন, ‘এখনই বলা কঠিন, তবে সম্ভবত হরমুজ প্রণালি বন্ধ হওয়ার আশঙ্কায় সবাই উদ্বিগ্ন।’
হরমুজ প্রণালি বিশ্বে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জাহাজ চলাচলের পথ। বিশ্বের মোট জ্বালানির প্রায় ২০ শতাংশ এই পথ দিয়েই সরবরাহ হয়। মূলত মধ্যপ্রাচ্যের তেল ও গ্যাস উৎপাদক দেশগুলো এই পথ দিয়েই তাদের জ্বালানি বিশ্ববাজারে পাঠায়। উত্তরে ইরান, দক্ষিণে ওমান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে ঘেরা হরমুজ প্রণালি উপসাগরীয় অঞ্চলকে আরব সাগরের সঙ্গে যুক্ত করে।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এমএসটি মারকুইয়ের জ্যেষ্ঠ জ্বালানি বিশ্লেষক সল কাভোনিক বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ইরান যদি আঞ্চলিক জ্বালানি তেল পরিকাঠামোতে পাল্টা হামলা চালায়, তাহলে তেলের সরবরাহে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে। তিনি আরও জানান, চরম পরিস্থিতিতে ইরান অবকাঠামোতে হামলা বা হরমুজ প্রণালি দিয়ে জাহাজ চলাচলে বাধা দিলে প্রতিদিন প্রায় দুই কোটি ব্যারেল তেল সরবরাহ ব্যাহত করতে পারে।
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাসহ দেশটির বিভিন্ন স্থানে ইসরায়েলের প্রাণঘাতী হামলার কঠোর জবাব দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে তেহরান। ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেন, ইসরায়েলকে এ হামলার জন্য কঠোর শাস্তি পেতে হবে।
এদিকে ইরানে ইসরায়েলের হামলা একতরফা পদক্ষেপ হিসেবে মন্তব্য করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেন, এতে ওয়াশিংটনের কোনো অংশগ্রহণ নেই। তবে তেহরানকে সতর্ক করে তিনি বলেন, তারা (তেহরান) যেন মার্কিন স্বার্থ বা ব্যক্তিদের লক্ষ্য না করে।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ফিলিপ নভার জ্যেষ্ঠ বাজার বিশ্লেষক প্রিয়াঙ্কা সচদেবা বলেন, ইরান পাল্টা হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এতে শুধু তেলের সরবরাহ বিঘ্ন ঘটাবে না, আশপাশের অন্যান্য তেল উৎপাদকদের দেশগুলোতেও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি তৈরি করছে।