ফরিদপুরে এক্সপ্রেসওয়ের ওয়ালে বাসের ধাক্কা, ছিটকে পড়ে সুপারভাইজার নিহত
Published: 18th, February 2025 GMT
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় এক্সপ্রেসওয়েতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যাত্রীবাহী একটি বাস থেকে ছিটকে সড়কে পড়ে এক সুপারভাইজার নিহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার রাত নয়টার দিকে উপজেলার চান্দ্রা ইউনিয়নের পুলিয়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তির নাম জুবায়ের শেখ (৩৫)। তিনি খুলনা সদরের তুতপাড়া মহল্লার আবুল হাসানের ছেলে।
শিবচর হাইওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত নয়টার দিকে ঘটনাস্থলে খুলনা থেকে ঢাকাগামী জি এম এস পরিবহনের একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এক্সপ্রেসওয়ের সাইড ওয়ালে ধাক্কা দেয়। এ সময় বাসের দরজার কাছে দাঁড়িয়ে ছিলেন সুপারভাইজার জুবায়ের শেখ। বাস থেকে ছিটকে পড়ে তিনি কংক্রিটের সঙ্গে ধাক্কা খান। এতে মাথায় আঘাত পেয়ে গুরুতর আহত হন তিনি। পরে উদ্ধার করে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে শিবচর হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক তমাল সরকার জানান, দুর্ঘটনাকবলিত বাসটি জব্দ করে থানায় নেওয়া হয়েছে। তবে চালক পালিয়ে গেছেন। এ ঘটনায় জুবায়েরের বাবা আবুল হাসান বাদী হয়ে সড়ক দুর্ঘটনা আইনে শিবচর হাইওয়ে থানায় একটি মামলা করেছেন। ওই বাসের চালককে আসামি করা হয়েছে। পরে পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?