‘সর্বজনীন স্বাস্থ্য ও সুস্থ পরিবেশ জনগনের অধিকার—আমাদের অঙ্গীকার’  প্রতিপাদ্যে গত শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) প্রগতিশীল চিকিৎসকদের সংগঠন ‘ডক্টরস ফর হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট’–এর দ্বাদশ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজধানীর পরিকল্পনা ও উন্নয়ন একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সাবেক সাধারণ সম্পাদক সারওয়ার আলী প্রধান অতিথি এবং চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিম্যাল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক নীতিশ দেবনাথ বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন।

সম্মেলনে চক্ষু চিকিৎসক অধ্যাপক মো.

শফিকুল ইসলাম সভাপতি, শিশু অর্থোপেডিক সার্জন অধ্যাপক সারওয়ার ইবনে সালামকে সাধারণ সম্পাদক, লিভারের চিকিৎসক গোলাম আজমকে অর্থ সম্পাদক এবং অধ্যাপক রোকসানা দিল আফরোজ সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত করে ৪৫ সদস্যবিশিস্ট কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ গঠন করা হয়।

সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক আবু সাঈদের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক এম এইচ ফারূকীর পরিচালনায় সারা দেশ থেকে আগত চিকিৎসকেরা সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। শুরুতে  বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সাবেক সভাপতি অধ্যাপক রশীদ ই মাহবুব, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, ডাকসুর সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুশতাক হোসেন, মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বেগম ও ফওজিয়া মোসলেম শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন। বক্তারা জনগণের সর্বজনীন স্বাস্থ্য ও সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্যব্যবস্থার সংস্কার এবং এতে পেশাজীবী হিসেবে চিকিৎসকদের কার্যকর ভূমিকার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। বিজ্ঞপ্তি

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলিম নারী চিকিৎসকেরা হারিয়ে গেলেন কেন

কর্দোভার সংকীর্ণ গলিতে এক নারী দ্রুত পা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর হাতে একটি কাঠের বাক্স, ভেতরে হাতে তৈরি মলম ও ঔষধি গাছ। তিনি আল-জাহরাভির কন্যা, একজন ধাত্রী, যিনি প্রসূতি মায়েদের সেবা করছেন। তাঁর কাজ শুধু শারীরিক নিরাময় নয়, বরং একটি সম্প্রদায়ের আস্থা ও আশার প্রতীক।

মধ্যযুগের মুসলিম বিশ্বে মুসলিম নারী চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা এমন অগণিত গল্প রচনা করেছেন, যা চিকিৎসাবিজ্ঞান ও সমাজের ওপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলেছে। তৃতীয় ও শেষ পর্বে আমরা তাঁদের প্রভাব, আধুনিক স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে তুলনা এবং তাদের ঐতিহাসিক স্বীকৃতির চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করব।

চিকিৎসাবিজ্ঞানে নারীদের ছাপ

মুসলিম নারী চিকিৎসকদের কাজ মুসলিম বিশ্বের চিকিৎসাব্যবস্থাকে একটা কাঠামো দিয়েছে। রুফায়দা আল-আসলামিয়া (রা.)-এর মোবাইল হাসপাতালের ধারণা আধুনিক ফিল্ড হাসপাতালের পূর্বসূরি। তাঁর তাঁবু যা মদিনার মসজিদে নববিতে স্থাপিত হয়েছিল, স্বাস্থ্যসেবার মডেল হিসেবে কাজ করেছে।

২০২০ সালে কোভিড-১৯ মহামারিতে মসজিদগুলো চিকিৎসা ও টিকাকরণ কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যা রুফায়দার মসজিদভিত্তিক তাঁবুর সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।

এই মডেল পরবর্তী সময়ে আব্বাসীয় যুগের বিমারিস্তানে (হাসপাতাল) প্রতিফলিত হয়, যেখানে শিহাবুদ্দিন আল-সায়িগের (মৃ. ১৬২৭ খ্রি.) কন্যার মতো নারীরা নেতৃত্ব দিয়েছেন। (আল-সাঈদ, আত-তিব ওয়া রায়িদাতুহু আল-মুসলিমাত, পৃ. ১৮৯, আম্মান: দারুল ফিকর, ১৯৮৫)

নারীদের ওষুধ তৈরি ও শল্যচিকিৎসার কাজ চিকিৎসাবিজ্ঞানে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। আল-জাহরাভির (৯৩৬-১০১৩ খ্রি.) গ্রন্থ আত-তাসরিফ নারী চিকিৎসকদের জন্য শিক্ষার ভিত্তি ছিল, বিশেষ করে প্রসূতি ও গাইনোকোলজিতে। এই গ্রন্থ ইউরোপে অনূদিত হয়ে রেনেসাঁসের চিকিৎসাবিজ্ঞানে প্রভাব ফেলেছে। ১৯০৮ সালে গ্রন্থটির আধুনিক সংস্করণ প্রকাশ পেয়েছে কায়রো ‘দারুল কুতুব’ থেকে।

আন্দালুসে উম্ম হাসান বিনত কাজি তানজালি (১৪ শতক) চিকিৎসাশিক্ষার মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম তৈরি করেন, যা শিক্ষার ক্ষেত্রে নারীদের ভূমিকাকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। (আবু বকর ও আল-সাদি, আন-নিসা ওয়া মিহনাত আল-তিব, পৃ. ২১২, কায়রো: দারুল কুতুব, ১৯৯৯)

এই কাজগুলো আধুনিক পাবলিক হেলথ সিস্টেমের পূর্বসূরি হিসেবে বিবেচিত হয়।

আরও পড়ুনযে নারী সাহাবির বিয়ের পরামর্শদাতা ছিলেন রাসুল (সা.)২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩নারীদের ওষুধ তৈরি ও শল্যচিকিৎসার কাজ চিকিৎসাবিজ্ঞানে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • তিন দফা দাবিতে সিলেটের ওসমানী হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতির ডাক
  • উদ্ধার হলো এয়ার ইন্ডিয়ার বিধ্বস্ত উড়োজাহাজের ব্ল্যাক বক্স
  • মুসলিম নারী চিকিৎসকেরা হারিয়ে গেলেন কেন