ভারতে টেসলার কারখানা স্থাপনকে ‘খুবই অন্যায্য’ বললেন ট্রাম্প
Published: 20th, February 2025 GMT
বিশ্বের তৃতীয় বৃহৎ অর্থনীতির দেশ ভারতের বাজার ধরতে চায় বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলা। গত কয়েক বছর ধরেই এ নিয়ে তোড়জোড় দেখা যাচ্ছে। টেসলা ভারতে একটি কারখানাও নির্মাণ করতে চাইছে বলে শোনা যাচ্ছে।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র সফর করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ওয়াশিংটনে তিনি গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার সিইও ইলন মাস্কের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। মাস্ক এখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরকারি দক্ষতাবিষয়ক বিভাগের (ডিওজিই) প্রধান হিসেবে কাজ করছেন।
গত মঙ্গলবার প্রকাশিত বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মোদি-মাস্ক বৈঠকের পর ভারতে জ্যেষ্ঠ কয়েকটি পদে লোক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে টেসলা। ওই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর ভারতের বাজারে টেসলার প্রবেশ ও কারখানা স্থাপন নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।
এ নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও কথা বলেছেন। সম্প্রতি ফক্স নিউজের একটি অনুষ্ঠানে মাস্কের সঙ্গে কথোপকথনের সময় ট্রাম্প বলেছেন, বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটির ভারতে কারখানা স্থাপনের কোনো সম্ভাব্য পরিকল্পনা যদি থাকে তবে সেটা ‘খুবই অন্যায্য’ হবে।
গত মাসে দ্বিতীয়বারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় আসার পরপরই একের পর এক দেশ এবং পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করছেন ট্রাম্প।
বিদেশ থেকে পণ্য আমদানিতে কঠোর শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের পক্ষে ওই সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প আরও বলেন, ‘বিশ্বের সব দেশ আমাদের থেকে সুবিধা নিচ্ছে এবং শুল্ক আরোপের মাধ্যমে তারা এটা করছে। তারা করেছে.
তখন মাস্ক ট্রাম্পের কথায় সায় দিয়ে বলেন, ‘সে দেশে পণ্য আমদানিতে শুল্ক ১০০ শতাংশের মতো।’
ট্রাম্প মাস্কের সঙ্গে একমত পোষণ করেন এবং বলেন, এটা অনেক বেশি শুল্ক।
মাস্ক এবং ট্রাম্প উভয়ই অতীতে ভারতে গাড়ি রপ্তানির ক্ষেত্রে সে দেশের অতি উচ্চ শুল্ক আরোপ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
হোয়াইট হাউস থেকে পাওয়া নথিতে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভারত গাড়ি আমদানিতে ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে রেখেছে। যেখানে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের তৈরি গাড়ি আমদানির শুল্ক মাত্র ২ দশমিক ৪ শতাংশ।
ট্রাম্প এ নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করতে গিয়ে আরও বলেন, ‘এখন, তিনি যদি ভারতে কারখানা নির্মাণ করতে চান, করতে পারেন, কিন্তু আমাদের জন্য তা অন্যায্য হবে। এটা খুবই অন্যায্য।’
আরও পড়ুনভারতে কারখানা করতে চায় টেসলা, তৈরি হবে ২০ লাখ রুপির বৈদ্যুতিক গাড়ি১৩ জুলাই ২০২৩আরও পড়ুনটেসলার নতুন সিদ্ধান্ত, ভারত ও মেক্সিকোতে কারখানা নির্মাণ অনিশ্চয়তায় পড়েছে২৪ এপ্রিল ২০২৪উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ ল ক আর প অন য য য আমদ ন
এছাড়াও পড়ুন:
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার
অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’
সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’
অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি বরাবর অভিযোগ করেন।
এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।