সিলেট মুরারিচাঁদ কলেজের (এমসি কলেজ) দুই শিক্ষার্থীর উপর হামলার প্রতিবাদে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাতে শিক্ষার্থীরা এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতাদের পাঠানো খবরে থাকছে বিস্তারিত-

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি)

দুই শিক্ষার্থীর উপর হামলার প্রতিবাদে রাত সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্টে বিক্ষোভ মিছিল করেন চবির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ইনকিলাব মঞ্চ। 

মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘শিক্ষা-সন্ত্রাস, একসাথে চলে না’, ‘এমসি কলেজে হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘এমসি কলেজে হামলা হলে, আবরার তোমায় মনে পড়ে’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘এমসি কলেজে হামলা হলে, আবরার তোমায় মনে পড়ে’, ‘সন্ত্রাসীদের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক আরিয়ান রাকিব বলেন, “এমসি কলেজে যে ঘটনা ঘটেছে তার তীব্র নিন্দা জানাই। হামলায় শিবিরের নাম এসেছে। তদন্ত সাপেক্ষে যারা দোষী, তাদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। তামিরুল মিল্লাত মাদরাসায়ও শিক্ষার্থীদের উপর হামলার খবর এসেছে। রাজনৈতিক দলগুলোকে বলবো, অপরাধ করলে কোন নেতাকর্মীকে ছাড় দেবেন না। সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করার চেষ্টা করলে শক্তহাতে, তা প্রতিরোধ করা হবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সবসময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে।”

চবি ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক রাফসান রাকিব বলেন, “এমসি কলেজ, কুয়েট, মিল্লাতসহ সব হামলায় যারা জড়িত, প্রত্যেকের আইনের আওতায় এনে বিচার নিশ্চিত করতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোকে অপরাজনীতির সিস্টেম থেকে বের হতে হবে। যেখানে অন্যায় সেখানেই আমাদের প্রতিবাদ। অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে দখলদারত্বি, সন্ত্রাসের রাজনীতি আর চলতে দেওয়া যাবে না।”

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)

শিক্ষার্থীদের শিবিরের মারধরের প্রতিবাদ এবং আওয়ামী দোসরদের বিচার ও কার্যক্রম নিষিদ্ধকরণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন ইবি শিক্ষার্থীরা।

রাত সোয়া ৯টায় ক্যাম্পাসের জিয়া মোড় থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে তারা। পরে মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রশাসন ভবন চত্বরে এসে সমাবেশে মিলিত হয়। 

সমাবেশে আন্দোলনকারীরা বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সভা সেমিনারে আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মারা উপস্থিত থেকে বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করছে। ফ্যাসিবাদের দোসররা ক্যাম্পাসে এখনো দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে। প্রশাসন এখনো ফ্যাসিবাদের দোসর এসব শিক্ষকদের বিরূদ্ধে কোনো ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারেনি। অনতিবিলম্বে প্রশাসনকে আওয়ামী দোসরদের বিচার ও ক্যাম্পাসে তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে।

তারা বলেন, সিলেটের এমসি কলেজে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলার যে ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সন্ত্রাসীদের কোন দল হয় না, পরিচয় হয় না। একজন সাধারণ শিক্ষার্থীর উপর যে ন্যাক্কারজনক হামলা হয়েছে, অতিদ্রুত সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবির সমন্বয়ক এস এম সুইট, সহ-সমন্বয়ক সায়েম আহমেদসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা বক্তব্য প্রদান করেন।

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি)

শিক্ষার্থীর উপর এ ন্যাক্কারজনক হামলা ও ক্যাম্পাসগুলোতে অরাজকতা সৃষ্টির প্রতিবাদে রাতে মশাল মিছিল করেছে নোবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়।

সমাবেশে বক্তরা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান।

ঢাকা/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ ক ষ র থ র উপর র জন ত

এছাড়াও পড়ুন:

ওসমান হাদির ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে তল্লাশি অভিযান চলছে: ডিএমপি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদিকে গুলি করার সঙ্গে জড়িতদের ধরতে পুলিশ বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে।

শুক্রবার ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শুক্রবার বেলা ২টা ২৫ মিনিটে মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তরা রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট এলাকায় ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে লক্ষ্য করে গুলি করে পালিয়ে যায়। এতে তিনি গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ডিএমপি এই ন্যক্কারজনক ও কাপুরুষোচিত হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে।

ডিএমপি জানায়, ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। পুলিশ ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে আন্তরিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। থানা-পুলিশের পাশাপাশি ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও স্থানগুলোতে তল্লাশি অভিযান পরিচালনা করছে। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর ঘটনার মতো এই ন্যক্কারজনক হামলার ঘটনায় জড়িতদেরও দ্রুত গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে বলে ডিএমপি আশা করে।

বিজ্ঞপ্তিতে নগরবাসীকে আতঙ্কিত না হয়ে এ ঘটনায় জড়িতদের সম্পর্কে কোনো তথ্য থাকলে তা নিকটস্থ থানা অথবা জাতীয় জরুরি সেবা ‘৯৯৯’–এর মাধ্যমে পুলিশকে অবহিত করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখা এবং নগরবাসীর জানমালের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য ডিএমপি আন্তরিকভাবে কাজ করছে বলেও জানানো হয়।

ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ প্রথম আলোকে বলেন, থানা-ডিবির পাশাপাশি পুলিশের সব ইউনিট হামলাকারীদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারে কাজ করছে। এ ঘটনায় পল্টন থানায় কোনো মামলা হয়নি।

রাত সাড়ে ১১টার দিকে যোগাযোগ করা হলে ডিবির যুগ্ম কমিশনার মো. নাসিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্‌ঘাটনে এখন পর্যন্ত বলার মতো কোনো অগ্রগতি হয়নি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ওসমান হাদির ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে তল্লাশি অভিযান চলছে: ডিএমপি
  • শরীয়তপুরে বেড়ানোর সময় বন বিভাগের কার্যালয়ে আটকে নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ