হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে ঘরেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন স্ট্রোকের রোগী নাজমা বেগম (৫০)। সেখানে অসুস্থ নাজমাকে চিকিৎসার নামে দেওয়া হয় পরপর চারটি ইনজেকশন। মুহূর্তেই ছটফট করে মারা যান ওই নারী। এ ঘটনার নিহত নাজমা বেগমের সাবেক স্বামী আক্তার হোসেন (৬৫) ও ইদ্রিস চৌধুরী নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট এলাকায় পুরোনো দাইয়া বাড়িতে বোনের বাসায় ছিলেন নাজমা বেগম। ইনজেকশন প্রয়োগের ফলে সেখানেই তাঁর মৃত্যু ঘটে। এরপর গতকাল রাতে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে নিহত নাজমার বর্তমান স্বামী সাহাব উদ্দিন বাদী হয়ে তিনজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় আজ সকালে পুলিশ দুজনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার আক্তার হোসেনের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর থানার দশদনা গ্রামে। তিনি চট্টগ্রাম নগরের আগ্রাবাদের হাজীপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন। গ্রেপ্তার অপর ব্যক্তি ইদ্রিস চৌধুরীর বাড়ি কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম। তিনিও আগ্রাবাদ এলাকায় থাকতেন। ইদ্রিস নিজেকে পল্লিচিকিৎসক বলে দাবি করেন। নাজমাকে ইনজেকশনও দিয়েছিলেন তিনি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফৌজদারহাট পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, নাজমা বেগম ২ ফেব্রুয়ারি স্ট্রোক করেন। তাঁর শরীরের ডান পাশ অবশ হয়ে পড়েছিল। পরে তাঁর স্বামী সাহাব উদ্দিন তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। এক সপ্তাহ চিকিৎসাধীন থাকার পর চিকিৎসক নাজমা বেগমকে বাসায় নিয়ে পরবর্তী চিকিৎসা করাতে বলেন। এরপর ছাড়পত্র নিয়ে নাজমা সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট এলাকায় তাঁর বোনের বাড়িতে গিয়ে ওঠেন। সেখানেই তাঁর চিকিৎসা চলছিল।

গতকাল শনিবার দুপুরে নাজমার সাবেক স্বামী আক্তার হোসেন ইদ্রিস চৌধুরী নামের একজন পল্লিচিকিৎসককে নিয়ে ফৌজদারহাটের বাড়িতে যান। এরপর পল্লিচিকিৎসক নামধারী ইদ্রিস চৌধুরী তাঁকে পরপর চারটি ইনজেকশন দেন। এতে নাজমার মৃত্যু হলে স্থানীয় বাসিন্দারা আক্তার ও ইদ্রিসকে আটক করে পুলিশে খবর দেন।

এসআই আমিনুল ইসলাম আরও বলেন, খবর পেয়ে তাঁরা ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহত নারীর লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন। পরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

এসআই আমিনুল ইসলাম আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইদ্রিস চৌধুরী নিজেকে পল্লিচিকিৎসক দাবি করলেও কোনো ধরনের সনদ দেখাতে পারেননি। ফার্মেসিতে কাজ করে তিনি চিকিৎসা করা শিখেছেন বলে দাবি করেন। সেই আলোকে তিনি নাজমা বেগমের শরীরে ইনজেকশন প্রয়োগ করেছিলেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইনজ কশন

এছাড়াও পড়ুন:

যে জীবন মানুষের উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়: ববিতা

চিরসবুজ অভিনেত্রী ফরিদা আক্তার ববিতা। ১৯৫৩ সালের ৩০ জুলাই বাগেরহাটে জন্মগ্রহণ করেন। আজ ৭১ বছর পূর্ণ করলেন সত্তরের দশকের অন্যতম সেরা এই অভিনেত্রী। জন্মদিন উপলক্ষে গত বছর একটি সাক্ষাৎকার দেন ববিতা। এ আলাপচারিতায় জীবনবোধ নিয়ে কথা বলেন এই শিল্পী।

জীবন নিয়ে ববিতা বলেন, “যে জীবন মানুষের কোনো উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়। মরে গেলে আমার ছেলে অনিক আমাকে অনেক মিস করবে। একমাত্র ছেলে তো, ওর কথা খুব ভাবি। ভক্তরা আমাকে কতটুকু মনে রাখবেন, জানি না।”

একটি ঘটনা উল্লেখ করে ববিতা বলেন, “এই জীবনে একটা জিনিস খুব ভালো লেগেছে। অনেক শিল্পীকে তা দেওয়া হয়নি, হোক তা ভারতে কিংবা বাংলাদেশ। ২০২৩ সালে আমাকে যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসের মেয়র আজীবন সম্মাননা দিয়েছেন। সেদিন আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ সম্মান দিয়েছেন, ৬ আগস্টকে ‘ববিতা ডে’ ঘোষণা করেছেন। তার মানে আমি বেঁচে না থাকলেও দিনটা উদযাপিত হবে। এটা আমার ভীষণ ভালো লেগেছে।”  

আরো পড়ুন:

বধূবেশে অভিষেক কন্যা

জসীম পুত্রের মৃত্যু: ভাই রাহুলের আবেগঘন পোস্ট

মৃত্যুর কথা স্মরণ করে ববিতা বলেন, “তবে কবরে একা থাকার কথা ভাবলে হঠাৎ কেমন যেন লাগে। আরেকটা বিষয়, আমি অনেক দিন বেঁচে থাকতে চাই না। অসুখ–বিসুখে কষ্ট পেয়ে, বিছানায় পড়ে বাঁচতে চাই না। আমি কারো বোঝা হয়ে বাঁচতে চাই না।” 

কারণ ব্যাখ্যা করে ববিতা বলেন, “চারপাশে অনেক আত্মীয়স্বজনকে দেখেছি, দিনের পর দিন বিছানায় অসুস্থ হয়ে কষ্ট পেয়েছেন। যারা একা থাকেন, তাদের জন্য এই কষ্ট যেন আরো বেশি। তাই সব সময় এটা ভাবি, কখনোই যেন অন্যের বোঝা না হই।” 

সিনেমায় অভিনয়ের ইচ্ছা ববিতার কখনো ছিল না। পরিচালক জহির রায়হানের ‘সংসার’ সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব পেলেও প্রথমে রাজি হননি। পরে মা আর বোনের পীড়াপীড়িতে অভিনয় করেন। তখন তিনি ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়েন। মুক্তির পর সিনেমাটি সুপারফ্লপ হয়। 

পরিচালক জহির রায়হান আবারো ‘জ্বলতে সুরজ কে নিচে’ উর্দু সিনেমার নায়িকা চরিত্রে অভিনয় করতে বললে প্রথমে রাজি হননি ববিতা। তখন বয়স মাত্র ১৪। কিন্তু সিনেমার বেশির ভাগ শুটিং হওয়ার পরও শিল্পীদের শিডিউল মেলাতে না পারায় সিনেমাটি আর শেষ করা হয় না। 

এরপর জহির রায়হান ববিতাকে নিয়ে বাংলা সিনেমা বানান। মুক্তির পর সিনেমাটি সুপারহিট হয়। অভিনয় করার ইচ্ছা না থাকলেও সিনেমা হিট হওয়ায় আবারো ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান তিনি। এরপর ‘স্বরলিপি’, ‘পিচঢালা পথ’, ‘টাকা আনা পাই’ সিনেমায় জুটি বাঁধেন রাজ্জাক-ববিতা। প্রতিটি সিনেমাই সুপারহিট।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সিরাজ–কৃষ্ণাতে ম্যাচে ফিরল ভারত
  • ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আবারও হতাশায় ডুবিয়ে এগিয়ে গেল পাকিস্তান
  • জুলাই অভ্যুত্থানের সময় ভিপিএনও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল
  • রূপ নয়, সাহস দিয়ে জয় করা এক নায়িকা
  • টানা দুই জয়ের পর এবার হার বাংলাদেশের যুবাদের
  • ভারতের অর্থনীতি মৃত, ট্রাম্প ঠিকই বলেছেন: রাহুল
  • হেনরির ৬ উইকেটের পর দুই ওপেনারে নিউজিল্যান্ডের দিন
  • অসুখবিসুখে কষ্ট পেয়ে, বিছানায় পড়ে বাঁচতে চাই না: ববিতা
  • নিশ্ছিদ্র দাপটে উরুগুয়েকে উড়িয়ে ফাইনালে ও অলিম্পিকে ব্রাজিল
  • যে জীবন মানুষের উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়: ববিতা