আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে এবার মাঠে নামতে পারেননি মিচেল স্টার্ক। প্রাথমিক স্কোয়াডে নাম থাকলেও টুর্নামেন্ট শুরুর আগে সরে দাঁড়ান এই বাঁহাতি পেসার। সরে যাওয়ার কারণ তখন প্রকাশ করেননি এই ৩৫ বছর বয়সী অজি। তাতে তৈরী হয়েছিল ধোঁয়াশা। তবে অনেক ক্রিকেট বিজ্ঞই ধারণা করেছিলেন চোটের কারণেই সরে যেতে হয়েছিল স্টার্ককে। অবশেষে স্টার্ক এক পডকাস্টে কথা বলায়, সেই ধারনা সত্য হলো।  তবে সঙ্গে দিয়ে গেল কিছু প্রশ্নের জন্ম!

স্টার্ক ছাড়াও এবারের আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে নেই অস্ট্রেলিয়ার অন্য দুই পেসার প্যাট কামিন্স ও জশ হ্যাজেলউড। চোটের কারণে অধিনায়ক কামিন্স ও হ্যাজলউডের না খেলা মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায় বেশ আগেই। সেটা আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে দেয় ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়াও। তবে স্টার্ক ব্যক্তিগত কারণের সরে যাওয়ার কথা বলেছিলেন।

অবশেষে এক পডকাস্টে নিজের অনুপস্থিতির কারণ নিয়ে কথা বলেছেন স্টার্ক। বলেন, গোড়ালির ইনজুরিতে আছেন তিনি। ভারতের বিপক্ষে বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির সময় ব্যথা সত্ত্বেও খেলেছিলেন। পডকাস্টে স্টার্ক বলেন, “কয়েকটি কারণ আছে না খেলার। কিছু ব্যক্তিগত কারণও আছে। বোর্ডার-গাভাস্কার টেস্ট সিরিজ চলার সময়েই আমার গোড়ালিতে কিছুটা ব্যথা ছিল। সেটা ঠিক করা দরকার। সামনে আমাদের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল এবং তারপর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর রয়েছে।”

আরো পড়ুন:

পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ পরিত্যক্ত, বাংলাদেশের পকেটে ১ পয়েন্ট

নিয়ম রক্ষার ম্যাচে বাংলাদেশ যেখানে এগিয়ে!

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল বেশ গুরুত্বপূর্ণ অস্ট্রেলিয়ার জন্য। সাদা পোষাকে সেরা হতে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে না খেলার যুক্তিটা শক্তিশালী। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাপারটা এনে কিছুটা লেজে গোবর করে ফেললেন স্টার্ক। ঢাল হিসেবেই এই সফরকে টেনে আনা। কারণ, বর্তমানের খর্ব শক্তির ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে যে অজি সেরা দলটা না খেললেও চলে।

স্টার্ক এর পর যা বললেন তাতেই বের হয়ে আসে থলের বিড়াল। এই বাঁহাতি পেসার জানান আইপিএলের আগে নিজেকে তিন ফিট করতে চেয়েছিলেন! স্টার্ক বলে, “আইপিএলের কিছু ম্যাচও আছে, তবে আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো টেস্ট ফাইনাল। শরীর ঠিক রাখা, আগামী কয়েক মাস কিছু ম্যাচ খেলা এবং টেস্ট ফাইনালের জন্য প্রস্তুত হওয়া। আমরা পরপর দ্বিতীয়বার এটি জয়ের সুযোগের সামনে রয়েছি।”

ঢাকা/নাভিদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চ য ম প য়নস ফ ইন ল

এছাড়াও পড়ুন:

জামিন দেওয়াকে কেন্দ্র করে আদালতে হাতাহাতি, স্টেনোগ্রাফার আহত

লক্ষ্মীপুরে আদালতে একটি জামিনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে একজন বিচারকের আদালত বর্জন করেছে আইনজীবীরা। এ সময় আইনজীবীদের সাথে আদালতের কর্মচারীদের হাতাহাতি ও এজলাসে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এতে আহত হন ওই এজলাসের স্টেনোগ্রাফার আশরাফুজ্জামান। 

রবিবার (১৫ জুন) দুপুর ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আদালত বর্জন করায় ভোগান্তিতে পড়েন বিচারপ্রার্থীরা। 

জানা গেছে, রায়পুর প্রিন্সিপাল কাজী ফারুকী স্কুল অ্যান্ড কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক আহম্মেদ কাউসার উদ্দিন জামান (৩৫) এর বিরুদ্ধে গত ৬ জুন সদর থানায় চুরির মামলা দায়ের করেন তারই প্রতিবেশি জেলা জজ আদালতের আইনজীবী আবু তৈয়ব। মামলায় আরও দুইজনকে আসামি করা হয়। ওই মামলায় আসামি কাউসার ও রুবেল গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন। এরপর গত ১০ জুন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এর বিচারক এম সাইফুল ইসলাম তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। এ নিয়ে তাৎক্ষণিক ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায় আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দসহ আইনজীবীরা। 

মামলায় অভিযোগ আনা হয়, বাদী এবং আসামিদের মধ্যে পূর্ব বিরোধ রয়েছে। ৫ জুন দিবাগত গভীর রাতে আসামিরা পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডে বাদীর ভবনের সামনে থাকা একটি লোহার গেট কেটে নিয়ে এবং গেটের পিলার ভেঙে একটি পিক-আপ গাড়িতে করে রায়পুরের দিকে নিয়ে যায়। রায়পুর বাসাবাড়ি এলাকায় গেলে পিকআপ গাড়িটি টহল পুলিশ আটক করে। পরে গাড়িটি জব্দ ও চালক রুবেলকে আটক করে পুলিশ। মামলায় বাদী আড়াই লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে উল্লেখ করেন।

আদালত সূত্র জানায়, গত ৯ জুন আসামিদের জামিন প্রার্থণা করা হয়। এতে আসামিপক্ষ উল্লেখ করেন, মামলার বাদি আইনজীবী হওয়ায় আদালতে তাদের পক্ষে কোন আইনজীবী জামিন শুনানিতে অংশ নিতে ইচ্ছুক নয়। আসামিরা তাদের পক্ষে আইনজীবী না পেয়ে জামিন শুনানির জন্য লক্ষ্মীপুর লিগ্যাল এইড অফিসে আইনি সহায়তা চান। সেখান থেকে দুইজন আইনজীবীকে শুনানি করতে বলা হলেও তারা অন্য আইজীবীদের দ্বারা হেনস্তার ভয়ে জামিন শুনানিতে অংশ নেননি। অন্যদিকে বাদী পক্ষের আইনজীবী আসামিদের বিরুদ্ধে জামিনের বিরোধিতা করেন। 

আদালত সূত্র আরও জানায়, আসামিরা ৯ জুন জামিনের জন্য আবেদন করলে পরদিন ১০ জুন নথি প্রাপ্ত সাপেক্ষে জামিন শুনানির জন্য রাখা হয় এবং তদন্তকারী কর্মকর্তা ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। 

বিষয়টি নিয়ে আদালতের পর্যালোচনায় উঠে আসে, ঈদুল আজহার বন্ধে আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় এবং গ্রেপ্তারের পর থেকে আসামিরা জামিনের শুনানির সুযোগ পাননি। চারদিন তাদের হাজতবাস হয়েছে। ৬ জুন আসামি গ্রেপ্তার হলেও বাদী একজন আইনজীবী হওয়ায় আসামিরা জামিন শুনানির জন্য কোন আইনজীবী পাননি এবং লিগ্যাল এইড অফিসের আইনজীবীরাও শুনানিতে অংশ নিতে অনীহার বিষয়টি পরিষ্কার হওয়ায় ১৪ জুন পর্যন্ত ঈদের ছুটিতে আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় জামিন অযোগ্য ধারায় গুরুতর অভিযোগ না থাকায় উভয় পক্ষের শুনানি অন্তে উভয় দরখাস্ত নিষ্পত্তি করা হলো। 

আদালত আসামিদের রিমান্ড না মঞ্জুর করে চারদিনের হাজতবাস ও ঈদ বিবেচনা করে আসামি কাউসার ও রুবেলকে ১০০ টাকা বন্ডে একজন গণ্যমান্য ব্যক্তির জিম্মায় জামিন মঞ্জুর করেন। তাদের জামিন হওয়ায় পর থেকেই আইনজীবীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করে। এ ঘটনায় তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করে বিচারকের অপসারণের দাবি জানান।

ঈদের বন্ধ শেষে রবিবার (১৫ জুন) আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হয়। আইনজীবী সমিতি বৈঠক করে ওই আদালতের বিচারক এম সাইফুল ইসলামের আদালতের বর্জনের ঘোষণা দেন। এদিন সকাল থেকে ওই বিচারকের কক্ষে বিচারপ্রার্থীরা এসে উপস্থিত হয়। 

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বিচারপ্রার্থী জানান, আদালতের বিচারক এজলাসে বসা ছিলেন। এ সময় ৭-৮ জন আইনজীবী কক্ষে ঢুকে আদালত বর্জনের ঘোষণা দেন। এতে হট্টগোল দেখা দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিচারক আদালত কর্মচারীদের দরজা বন্ধ করে দিতে বলেন। এ সময় আইনজীবী ও কর্মচারীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। আহত হন এজলাসের স্টেনোগ্রাফার আশরাফুজ্জামান। এতে বিচারকার্য সম্পন্ন না করেই এজলাস থেকে নেমে যান বিচারক। 

আহত আশরাফুজ্জামান বলেন, ‘‘আইনজীবীরা হট্টগোল করায় বিচারকের নির্দেশে আমি দরজা বন্ধ করতে গেলে আমার ওপর আইনজীবীরা হামলা করে। এতে আমার বাম চোখের পাশে রক্তাক্ত জখম হয়।’’  

উপস্থিত আইনজীবীদের মধ্যে অ্যাডভোকেট আশিকুর রহমান জানান, কয়েকজন আইনজীবী এজলাসে গিয়ে আদালত বর্জনের বিষয়টি জানিয়ে দিতে গিয়েছেন। আদালত কর্মচারীরা উল্টো তাদের ওপর হামলা করেছে। এতে তিনি নিজেও আহত হন।

ঢাকা/লিটন/টিপু 

সম্পর্কিত নিবন্ধ