বিএনপির হুমকি উপেক্ষা করে শিবগঞ্জে সমাবেশ করলেন মান্না
Published: 1st, March 2025 GMT
বগুড়ার শিবগঞ্জে বিএনপির হুমকি উপেক্ষা করে সমাবেশ করলেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। শুক্রবার উপজেলার শহীদ মুগ্ধ স্কয়ারে নাগরিক সমাবেশে মান্না বলেন, দেড় হাজার মানুষকে হত্যা করেও শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকতে পারেননি। ২০ দিনের আন্দোলনে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন। এ থেকে রাজনীতিবিদদের শিক্ষা নেওয়া উচিত। কেউ মন্দ কাজ করলে এমন পরিণতিই হবে।
মান্না বলেন, প্রশাসন জনগণের সেবক, অথচ থানা পুলিশ এখনও কোনো বিনিময় ছাড়া মামলা নেয় না। ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে শিবগঞ্জে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে উপজেলা নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম বাড়ি ফেরার সময় তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ ঘটনায় ওসি মামলা নেননি। অথচ অন্য একটি ঘটনায় নাগরিক ঐক্যের নেতাদের নামে মামলা নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমাকে শিবগঞ্জে আসতে দেওয়া হবে না এমন হুংকার দেওয়া হয়েছে। আমার বাড়ি শিবগঞ্জ, আমি এখানে এসেছি। আমি যদি হুংকার দিই, তাহলে এলাকায় ভূমিকম্প হবে।’ মান্না আরও বলেন, ‘দেশে সঠিক সময়ে নির্বাচন না হলে মার্শাল ল হবে। তাই সবাইকে ভেদাভেদ ভুলে জাতীয় স্বার্থে এক হয়ে কাজ করতে হবে।’
পৌর নাগরিক ঐক্যের সভাপতি রুহুল আমিনের পরিচালনায় ও তোফাজ্জল হোসেন তোফার সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আনোয়ার।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার
অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’
সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’
অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি বরাবর অভিযোগ করেন।
এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।