ইউনেসকো ও উইন্ডমিল অ্যাডভারটাইজিংয়ের সমঝোতা চুক্তি
Published: 6th, March 2025 GMT
রিকশা পেইন্টিংকে বিশ্বদরবারে অনন্যভাবে উপস্থাপনের জন্য জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা (ইউনেসকো) এবং উইন্ডমিল অ্যাডভারটাইজিং লিমিটেডের মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ইউনেসকোর ঢাকার সদর দপ্তরে চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়।
ইউনেসকো ঢাকার হেড অব অফিস অ্যান্ড রিপ্রেজেনটেটিভ সুশান ভাইজ এবং উইন্ডমিল অ্যাডভারটাইজিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাব্বির রহমান নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
সম্প্রতি রিকশা পেইন্টিংকে বিমূর্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ইউনেসকো। এরই ধারাবাহিকতায় রিকশা পেইন্টিং এবং এর সঙ্গে যুক্ত চিত্রশিল্পীদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করা, তাঁদের টেকসই আয় নিশ্চিতকরণ এবং রিকশা পেইন্টিংয়ের ইতিহাস ও সংস্কৃতিকে সংরক্ষণ করতে ইউনেসকো এবং উইন্ডমিল অ্যাডভারটাইজিং লিমিটেড একত্রে কাজ করবে।
‘রিকশা পেইন্টিং: এক্সপ্যান্ডিং দ্য ক্যানভাস’ শীর্ষক এ প্রকল্পে রিকশা পেইন্টিংয়ের চিত্রশিল্পীদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ, প্রদর্শনী, রিকশা পেইন্টের সার্বিক বাণিজ্যিকীকরণ, খ্যাতনামা ব্র্যান্ডগুলোর সঙ্গে সংযুক্তিকরণসহ বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। চিত্রশিল্পীদের আর্থিক উন্নয়নের পাশাপাশি রিকশা পেইন্টিংকে বিশ্বজুড়ে সমাদৃত করে তোলাই এ প্রকল্পের মূল লক্ষ্য।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ইউনেসকো ঢাকার সংস্কৃতি প্রধান কিযী তাহনিন এবং উইন্ডমিল অ্যাডভারটাইজিং লিমিটেডে হেড অব স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যানিং সুমন পাটওয়ারী।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প ইন ট
এছাড়াও পড়ুন:
শুধু ঘোষণা নয়, বাস্তবে প্রতিফলিত হোক
রাজধানী শহরসহ দেশের বড় শহরগুলোয় শব্দদূষণের অসহনীয় মাত্রার বিষয়টি কারও অজানা নয়। এটি এখন শুধু শব্দদূষণ নয়, শব্দসন্ত্রাস বলেও অভিহিত হচ্ছে। অতীতে ও বর্তমানে সরকারগুলো বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও কার্যকর হচ্ছে না। অতীতের ধারাবাহিকতায় রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান, বনানী, বারিধারা ও নিকেতনকে ‘নীরব এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সিদ্ধান্তটি নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য। এখন এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করাই হচ্ছে বড় চ্যালেঞ্জ।
শহরের শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে নীরব এলাকা ঘোষণা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি অবশ্যই সরকারের সদিচ্ছার প্রকাশ। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই ঘোষণা বাস্তবে কার্যকর হবে, নাকি এটিও অতীতের মতো কেবল কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থাকবে? এর আগে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং এর আশপাশের এলাকাকে নীরব এলাকা ঘোষণা করা হয়েছিল, কিন্তু তার ফল তেমন একটা ভালো পাওয়া
যায়নি। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ঘোষণার পর কিছু এলাকায় শব্দ কিছুটা কমলেও সার্বিকভাবে পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। এই অভিজ্ঞতা থেকে বোঝা যায়, শুধু ঘোষণা যথেষ্ট নয়, বরং এর কঠোর বাস্তবায়ন অপরিহার্য।
শব্দদূষণের ক্ষেত্রে আগের তুলনায় সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে বলতেই হয়। যার কারণে সাউন্ডবক্স বা মাইক বাজানোর বিষয়গুলো তুলনামূলকভাবে কমে এসেছে। তবে গাড়ির হর্ন এতটা বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তৈরি করছে, যা অকল্পনীয়। এটিই এখন রাজধানীসহ বড় শহরগুলোর শব্দদূষণের সবচেয়ে বড় আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, অতিরিক্ত শব্দ হৃদ্রোগ, উচ্চ রক্তচাপ এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। চিকিৎসকেরা বলছেন, এটিতে শ্রবণশক্তি হ্রাস পায়, মেজাজ খিটখিটে হয়, মানুষ অনিদ্রায় ভোগে এবং শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় বিঘ্ন ঘটায়। তাই শুধু অভিজাত এলাকা নয়, পুরো শহরে ধাপে ধাপে কীভাবে নীরব এলাকা ঘোষণা করা যায়, সেই লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে এগোতে হবে।
তবে এ উদ্যোগ সফল করতে হলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে কঠোর হতে হবে। হর্ন বাজানোর বিরুদ্ধে আইন আছে। তা যদি আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে প্রয়োগ না করা হয়, এ ঘোষণা কখনোই সফল হবে না। কেবল প্রশাসনের ওপর নির্ভর না করে নীরব এলাকা–ঘোষিত এলাকাগুলোর বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, যেমন মসজিদ, মন্দির এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকেও এখানে গণসচেতনতার কাজে যুক্ত করতে হবে।
গাড়ির হর্ন বাজানো সীমিত করতে পরিবহনের বিভিন্ন ধরনের সমিতি–সংগঠনগুলোর যুক্ততাও এখানে গুরুত্বপূর্ণ। গাড়ির চালকদের অভ্যাসগত পরিবর্তনের জন্য শব্দদূষণের ক্ষতিকর দিকটি নিয়মিতভাবে তাঁদের কাছে উপস্থাপন করতে হবে। হাইড্রোলিক হর্নসহ উচ্চমাত্রার যেকোনো হর্ন উৎপাদন, আমদানি ও ব্যবহারের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে। এ ব্যাপারে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।