জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় (ওএইচসিএইচআর) গত ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘন ও অবমাননা বিষয়ে একটি স্বাধীন ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন পরিচালনা করে। প্রতিবেদনটিতে পতিত সরকারের জুলাই অভ্যুত্থান দমনে কৃত অপরাধের তথ্যভিত্তিক পূর্ণ বিবরণ আছে। তাই তা বিশেষভাবে আলোচিতও হয়েছে।

তবে প্রতিবেদনের আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচনার বাইরে রয়ে গেছে। এমন বিষয়ের মধ্যে আছে ক্রান্তিকালীন বিচারব্যবস্থার একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক মডেল প্রতিষ্ঠা করা এবং ৫ আগস্ট–পরবর্তী সময়ে নারীসহ অন্যান্য নির্দিষ্ট গ্রুপকে টার্গেট করে সংঘটিত অপরাধ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা।

২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসেই মোট ৮৫ জন কন্যা ও ১২০ জন নারী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এ তথ্য মহিলা পরিষদের নারী ও কন্যা নির্যাতনবিষয়ক মাসিক প্রতিবেদন (জানুয়ারি) অনুযায়ী। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৬৭ জন। তার মধ্যে ১৪ জন কন্যাসহ ২০ জন দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন, ১ জন কন্যাসহ ২ জনকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। এ ছাড়া ২ জনকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, ফেব্রুয়ারি মাসে এই নির্যাতনের মাত্রা বেড়েছে বহুগুণে।

গত ফেব্রুয়ারি মাসে সারা দেশে ১৮৯টি নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে; যার মধ্যে ধর্ষণের ঘটনা ৪৮টি। সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে ১১ জন। বিভিন্ন কারণে ১০ জন কন্যাসহ ৪৬ জন হত্যার শিকার হয়েছেন। ১৫টি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে তৈরি হওয়া এই প্রতিবেদনগুলোর চেয়ে প্রকৃত সংখ্যা যে আরও বেশি হবে তা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়।

ওএইচসিএইচআরের প্রতিবেদনে প্যারাগ্রাফ ২৩২-২৩৬–তে ৫ আগস্ট–পরবর্তী সময়ে সংখ্যালঘু, বিশেষ করে হিন্দুধর্মের নাগরিকদের ঘরবাড়ি, ব্যবসাস্থল ও ধর্মীয় উপাসনালয়ে আক্রমণের উল্লেখ রয়েছে। প্রতিবেদনের তথ্যমতে, ৫ থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে ৩৭টি সহিংস ঘটনার তথ্য বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) সরবরাহ করেছে। পুলিশের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই সময়ে ১ হাজার ৭৬৯টি সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটে, যেগুলোর মধ্যে ১ হাজার ২৩৪টি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, ২০টি সাম্প্রদায়িক এবং ১৬১টি অভিযোগ অসত্য ছিল।

হিন্দুধর্মাবলম্বী ছাড়াও হামলা হয়েছে খ্রিষ্টান, আহমদিয়া সম্প্রদায় এবং ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষের ওপর। বাংলাদেশ খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, নওগাঁয় চার্চ অব বাংলাদেশ, দিনাজপুরে ইভ্যানজিলিক্যাল হলিনেস চার্চ, নারায়ণগঞ্জের মদনপুরে দ্য খ্রিষ্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়নের কালেকশন বুথ এবং বরিশালের গৌরনদীতে তিনটি, খুলনা শহরে একটি, ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে একটি ও পার্বতীপুরে একটি খ্রিষ্টানবাড়িতে হামলা হয়েছে। (প্রথম আলো, ১২ আগস্ট ২০২৪)

হঠাৎ রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কালে নানাবিধ অস্থিরতা ও অরাজকতা সৃষ্টি হয়। সার্বিক নিরাপত্তাব্যবস্থা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়। তা বর্তমানে সমাজের বিভিন্ন সহিংস কর্মকাণ্ডের দিকে লক্ষ করলেই বোঝা যায়। এই হঠাৎ বেড়ে যাওয়া সহিংসতার মাত্রা দ্রুত নিয়ন্ত্রণে এনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকারের ওপরই বর্তায়।

বিভিন্ন পটপরিবর্তনের সময় রাজনৈতিক অস্থিরতা সমাজের মধ্যেও সংক্রমিত হয় যখন লিঙ্গ, জাতি বা ধর্ম বিবেচনায় এই টার্গেটেড আক্রমণের ঘটনা বেশি দেখা যায়। শুধু পরিসংখান থেকে মূল বিষয় বোঝা যায় না। তাই গবেষণা করে দেখা দরকার, কেন বিশেষ পরিস্থিতিতে এ ধরনের আক্রমণ হয়, কারা অপরাধ সংঘটন করে আর কারাই–বা অন্যদের তুলনায় অরক্ষিত বোধ করে।

রাষ্ট্র সংস্কারের প্রত্যয় নিয়ে হয়েছে এই গণ–অভ্যুত্থান। আকাঙ্ক্ষা ছিল যেন নতুন বাংলাদেশে লিঙ্গ-ধর্মের ব্যবধান কমে যাবে। কিন্তু গত সাত মাসে, বিশেষ করে নারীদের ওপর বিভিন্ন উপায়ে আক্রমণ ও সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে। একে নিছক ‘মব ভায়োলেন্স’ বলে কাটিয়ে দেওয়ার অবকাশ নেই। গুরুত্বের সঙ্গে এর পেছনের রাজনৈতিক অর্থনীতিকে পর্যালোচনা করতে হবে।

এ বিষয়ে অপরাধবিজ্ঞানের জায়গা থেকে গুরুত্বপূর্ণ হলো ‘টক্সিক মাসকুলিনিটি’ প্রসঙ্গটি। পৌরুষত্বের নামে কিছু ভ্রান্ত ধারণা পুরুষকে মানব থেকে দানবে পরিণত করে। পুরুষকে আগ্রাসী আর কর্তৃত্বপরায়ণ হতে হবে, কিংবা উচ্চতর লিঙ্গ হিসেবে অন্য লিঙ্গকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে—এগুলোই পুরুষকে ক্রমান্বয়ে ‘নারীবিদ্বেষী’ করে তোলে। বিশ্ববিখ্যাত ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট নিকোলাস গ্রোথ ১৯৭৭ সালে মার্কিন জার্নাল অব সাইকিয়াট্রিতে বলেন, ক্ষমতা প্রদর্শন, ক্রোধ ও যৌনতা নারীর প্রতি সহিংসতার অন্যতম কারণ। এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব রাষ্ট্র ও সমাজকে আরও কত বছর পিছিয়ে দিচ্ছে, তা আমরা হয়তো এখনো অনুধাবন করছি না।

আরও পড়ুননারীর প্রতি সহিংসতা ও বৈষম্য অবসানে আমাদের যা করতে হবে৬ ঘণ্টা আগে

হঠাৎ রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কালে নানাবিধ অস্থিরতা ও অরাজকতা সৃষ্টি হয়। সার্বিক নিরাপত্তাব্যবস্থা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়। তা বর্তমানে সমাজের বিভিন্ন সহিংস কর্মকাণ্ডের দিকে লক্ষ করলেই বোঝা যায়। এই হঠাৎ বেড়ে যাওয়া সহিংসতার মাত্রা দ্রুত নিয়ন্ত্রণে এনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকারের ওপরই বর্তায়।

ওএইচসিএইচআর তাই মনে করে, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নির্যাতন, যৌন সহিংসতা এবং অন্যান্য গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন ও অপব্যবহার অবশ্যই স্বাধীন, নিরপেক্ষ, দ্রুত, পুঙ্খানুপুঙ্খ, কার্যকর, বিশ্বাসযোগ্য ও স্বচ্ছ তদন্তের অধীন হতে হবে, যা চিহ্নিত অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে সক্ষম হবে। (প্যারাগ্রাফ ২৪৪) তাদের এসব সুপারিশ বাস্তবায়নে ওএইচসিএইচআর বাংলাদেশ কারিগরি ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে প্রস্তুত বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে।

সবচেয়ে জরুরি হলো, ওএইচসিএইচআর তাদের প্রতিবেদনে সামগ্রিক এবং প্রেক্ষাপটের উপযোগী ক্রান্তিকালীন বিচার মডেল গড়ে তোলার লক্ষ্যে অন্তর্ভুক্তিমূলক সংলাপ ও পরামর্শের সুপারিশ করেছে; এটি আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী অপরাধীদের বিচারপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করাসহ একটি ভিকটিমকেন্দ্রিক পন্থার মাধ্যমে সত্য অনুসন্ধান, ক্ষতিপূরণ, মেমোরিয়ালাইজেশন, নিরাপত্তা খাতের যাচাইকরণ ও অন্যান্য ব্যবস্থা, যা পুনরাবৃত্তি রোধের নিশ্চয়তা দেবে। কারণ, তারা মনে করে, এ ধরনের প্রক্রিয়া সামাজিক সংহতি, জাতীয় নিরাময় বা হিলিং এবং বিভিন্ন গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের মধ্যে সামাজিক সৌহার্দ্য বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। (প্যারাগ্রাফ ৩০৮, পৃ: ৬৯)

রাজনীতিতে ও জনপরিসরে নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ ও নারী-পুরুষ সমতা প্রতিষ্ঠার জন্য তাই অন্তর্ভুক্তিমূলক সংলাপ সাপেক্ষে ভিকটিমকেন্দ্রিক ক্রান্তিকালীন বিচারের মডেল তৈরি করা এখন ভীষণ জরুরি।

উম্মে ওয়ারা সহযোগী অধ্যাপক, ক্রিমিনোলজি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ওএইচস এইচআর র শ ক র হয় ছ ন র জন ত ক ব যবস থ র বর ত আগস ট অপর ধ র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন উপহার দিতে আমরা কাজ করছি: প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “অন্তর্ভুক্তিমূলক, অংশগ্রহণমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে-একটি নতুন ধারার রাজনৈতিক ব্যবস্থার চারপাশে একটি বিস্তৃত জাতীয় ঐকমত্য গড়ে তুলতে আমরা কাজ করছি। লক্ষ্যটা পরিষ্কার-এমন একটি সমাজ প্রতিষ্ঠা করা, যেখানে সব বাংলাদেশি শান্তিতে, গর্বের সঙ্গে, স্বাধীনতা ও মর্যাদার সঙ্গে বসবাস করতে পারবে।”

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে জাতিসংঘ আয়োজিত ‘জুলাই স্মরণ অনুষ্ঠান ও ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং প্রতিবেদনের বাস্তবায়ন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেন,“অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সূচনালগ্ন থেকেই জাতিসংঘ আমাদের রূপান্তরের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হয়ে উঠেছে। আমি জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে তার অকুণ্ঠ সমর্থন ও সংহতি এবং এ বছরের মার্চে বাংলাদেশ সফরের জন্য ধন্যবাদ জানাই।আমি হাইকমিশনার ভোলকার টার্ক, ওএইচসিএইচআর ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং টিমের সদস্য, জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিস গুইন লুইস এবং অবশ্যই আমার বন্ধু সিনিয়র মানবাধিকার উপদেষ্টা মিস হুমা খানকে তাদের অসাধারণ ও ঐতিহাসিক অবদানের জন্য গভীর কৃতজ্ঞতা জানাই।”

আরো পড়ুন:

শুধু প্রলেপ দেওয়া পরিবর্তন নয়, নতুন করে গড়তে হবে দেশ 

মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি: আহতদের দেখতে বার্ন ইনস্টিটিউটে প্রধান উপদেষ্টা

তিনি বলেন, “আমাদের কাজ এখনো শেষ হয়নি। আমাদের সংস্কার এজেন্ডার পাশাপাশি, আমরা গুরুতর লঙ্ঘনের জন্য দায়ীদের জন্য আইনি জবাবদিহি অনুসরণ করছি। কিন্তু বিচার মানে শুধু শাস্তি নয়।ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা, যাতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা আর কখনও তার নিজের জনগণকে দমন, নীরব বা ধ্বংস করার জন্য ব্যবহার করা যাবে না।”

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “এই বিগত বছরের কথা চিন্তা করলে আমরা স্মরণ করি-সেই সব মানুষকে, যারা সেই স্বপ্নের পেছনে ছুটতে গিয়ে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। তাদের আত্মত্যাগ আমাদের ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের পথ প্রশস্ত করেছে।তারা একটি নতুন বাংলাদেশ সৃষ্টি করেছে, যার মূলে রয়েছে আশা, মানবাধিকার এবং গণতান্ত্রিক নবায়ন। আমাদের সবচেয়ে দুঃখময় সময়ে পাশে দাঁড়ানোর জন্য বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে আমি জাতিসংঘকে ধন্যবাদ জানাই এবং আমরা সামনে এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই অব্যাহত অংশীদারত্ব প্রত্যাশা করছি।”

প্রধান উপদেষ্টা বলেন,“গত বছরের আগস্টে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পরপরই আমি মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়কে (ওএইচসিএইচআর) ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তদন্তে একটি স্বাধীন ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন পরিচালনার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ করেছিলাম। আমরা বিশ্বাস করতাম যে, সত্যের একটি নিরপেক্ষ এবং বিশ্বাসযোগ্য হিসাব কেবল ন্যায়বিচারের জন্য নয়, প্রতিকারের জন্যও অপরিহার্য।”

তিনি বলেন,“২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত জাতিসংঘের হাইকমিশনারের প্রতিবেদনে নৃশংসতার বিস্ময়কর-মাত্রা প্রকাশ করা হয়েছে।মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আনুমানিক ১ হাজার ৪০০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। প্রতিবেদনে সহিংসতাকে পূর্ববর্তী সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে পদ্ধতিগত, নির্দেশিত এবং সমন্বিত বলে বর্ণনা করা হয়েছে।এতে সম্ভাব্য মানবতাবিরোধী অপরাধের বিষয়ে জরুরি উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।”

তিনি আরো বলেন, “বিবিসি ও আল-জাজিরার প্রতিবেদনসহ আন্তর্জাতিক অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। আমরা হাইকমিশনারের কার্যালয়ের কাছে কৃতজ্ঞ যে, তারা কেবল এই নির্যাতনগুলো নথিভুক্ত করেনি, বরং এ ধরনের লঙ্ঘন যাতে আর কখনো না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে সহায়তা করতে একটি বিস্তৃত সুপারিশ প্রদানের জন্য।”

মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “আমরা এই সুপারিশগুলো অন্তঃস্থল থেকে গ্রহণ করেছি-অন্যের প্রতি দায়বদ্ধতার জন্য নয়, বরং নিজের প্রতি দায়বদ্ধতার কারণে। দায়িত্বভার গ্রহণের পর থেকেই আমাদের সরকার ব্যাপক সংস্কারমূলক কর্মসূচি বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেছে। আমরা ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধন করেছি এবং জোরপূর্বক গুম থেকে সব ব্যক্তির সুরক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক কনভেনশনে সম্মত হয়েছি। এ মাসের শুরুতে আমরা ঢাকায় একটি মিশন প্রতিষ্ঠার জন্য ওএইচসিএইচআরের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছি। এই মিশন সংস্কার উদ্যোগের জন্য প্রযুক্তিগত সহায়তার পাশাপাশি সরকারী প্রতিষ্ঠান, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এবং সবচেয়ে মূল্যবান জিনিস, মানবাধিকার রক্ষায় কাজ করা নাগরিক সমাজের কর্মীদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।”

ঢাকা/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন উপহার দিতে আমরা কাজ করছি: প্রধান উপদেষ্টা