দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে ৩ দিন আগে বিয়ে হওয়া স্ত্রীকে গলাটিপে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় নিহতের স্বামীকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী। 

রোববার দিবাগত রাত ২টার দিকে উপজেলার পুনট্টি ইউনিয়নের দক্ষিণ হযরতপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। 

নিহত গৃহবধূ তানিয়া আক্তার (১৮) পার্বতীপুর উপজেলার কুড়িয়াইল গ্রামের আবু তালেবের মেয়ে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার রাতে দুই পরিবারের আলোচনার মাধ্যমে তানিয়ার (১৮) সঙ্গে চিরিরবন্দর উপজেলার পুনট্টি ইউনিয়নের দক্ষিণ হযরতপুর গ্রামের আজাহার আলীর ছেলে আব্দুর রহিমের (২৪) বিয়ে হয়। বিয়ের পর শনিবার নতুন স্ত্রীকে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসেন আব্দুর রহিম। 

রোববার দিবাগত রাত ২টা হতে আড়াইটার দিকে ঘরে গলাটিপে ও বালিশ চাপা দিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠে আব্দুর রহিমের বিরুদ্ধে। প্রতিবেশীরা এসময় আব্দুর রহিমকে আটক করে পুলিশে সংবাদ দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার ও ঘাতককে গ্রেপ্তার করে।

এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূর বাবা আবু তালেব বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। 

নিহত গৃহবধূর মা মনজিলা বেগম জানান, গত ৬ মার্চ বৃহস্পতিবার রাতে তার মেয়ে তানিয়া আক্তা‌রের বিয়ে হয়েছে। গত ৮ মার্চ শনিবার জামাইসহ মেয়ে শ্বশুরবাড়িতে গেছে। তার মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে তার অভিযোগ। 

মামলার বাদী নিহত গৃহবধূর বাবা আবু তালেব জানান, তার মেয়েকে আব্দুর রহিম হত্যা করেছে। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে গেছে।

এ ব্যাপারে চিরিরবন্দর থানার ওসি (তদন্ত) এস এম আহসান হাবীব জানান, নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। আটক স্বামী প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। এ ব্যাপারে মেয়ের বাবা বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। সেই মামলায় আসামিকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ও ঘটনার অধিকতর তদন্ত করে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার

অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’

সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।

সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।

এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’

অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি‌ বরাবর অভিযোগ করেন।

এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ