বিয়ের ৩ দিনের মাথায় নববধূকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ, স্বামী আটক
Published: 10th, March 2025 GMT
দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে ৩ দিন আগে বিয়ে হওয়া স্ত্রীকে গলাটিপে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় নিহতের স্বামীকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী।
রোববার দিবাগত রাত ২টার দিকে উপজেলার পুনট্টি ইউনিয়নের দক্ষিণ হযরতপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত গৃহবধূ তানিয়া আক্তার (১৮) পার্বতীপুর উপজেলার কুড়িয়াইল গ্রামের আবু তালেবের মেয়ে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার রাতে দুই পরিবারের আলোচনার মাধ্যমে তানিয়ার (১৮) সঙ্গে চিরিরবন্দর উপজেলার পুনট্টি ইউনিয়নের দক্ষিণ হযরতপুর গ্রামের আজাহার আলীর ছেলে আব্দুর রহিমের (২৪) বিয়ে হয়। বিয়ের পর শনিবার নতুন স্ত্রীকে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসেন আব্দুর রহিম।
রোববার দিবাগত রাত ২টা হতে আড়াইটার দিকে ঘরে গলাটিপে ও বালিশ চাপা দিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠে আব্দুর রহিমের বিরুদ্ধে। প্রতিবেশীরা এসময় আব্দুর রহিমকে আটক করে পুলিশে সংবাদ দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার ও ঘাতককে গ্রেপ্তার করে।
এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূর বাবা আবু তালেব বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।
নিহত গৃহবধূর মা মনজিলা বেগম জানান, গত ৬ মার্চ বৃহস্পতিবার রাতে তার মেয়ে তানিয়া আক্তারের বিয়ে হয়েছে। গত ৮ মার্চ শনিবার জামাইসহ মেয়ে শ্বশুরবাড়িতে গেছে। তার মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে তার অভিযোগ।
মামলার বাদী নিহত গৃহবধূর বাবা আবু তালেব জানান, তার মেয়েকে আব্দুর রহিম হত্যা করেছে। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে চিরিরবন্দর থানার ওসি (তদন্ত) এস এম আহসান হাবীব জানান, নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। আটক স্বামী প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। এ ব্যাপারে মেয়ের বাবা বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। সেই মামলায় আসামিকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ও ঘটনার অধিকতর তদন্ত করে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
করিডোরের জন্য দু’দেশের সম্মতি লাগবে: জাতিসংঘ
রাখাইন রাজ্যের বেসামরিক নাগরিকের জন্য মানবিক সহায়তা পাঠাতে করিডোরের বিষয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সম্মতি প্রয়োজন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
ঢাকার জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয় সমকালকে এক বিবৃতিতে জানায়, বাংলাদেশে জাতিসংঘ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা অব্যাহত রেখেছে। একই সঙ্গে রাখাইনে মানবিক পরিস্থিতির অবনতি নিয়েও উদ্বিগ্ন তারা।
জাতিসংঘ অন্য অংশীদারকে সঙ্গে নিয়ে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দাতা হিসেবে বাংলাদেশের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন জোরদার করবে। বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমার সীমান্ত পেরিয়ে যে কোনো মানবিক সহায়তা বা সরবরাহের জন্য প্রথমে দুই সরকারের মধ্যে সম্মতি প্রয়োজন। সীমান্ত অতিক্রম করে সহায়তা দেওয়ার জন্য জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সরকারগুলোর অনুমতি নেওয়ার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এটি ছাড়া জাতিসংঘের সরাসরি ভূমিকা সীমিত।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গত রোববার এক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছিলেন, ‘নীতিগতভাবে আমরা রাখাইন রাজ্যে মানবিক করিডোরের ব্যাপারে সম্মত। কারণ এটি একটি মানবিক সহায়তা সরবরাহের পথ হবে। তবে আমাদের কিছু শর্ত আছে। সেই শর্ত যদি পালন করা হয়, অবশ্যই আমরা জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সহযোগিতা করব।’
এ খবর চাউর হলে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। সরকারের এমন সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নের শঙ্কা করছে রাজনৈতিক দলগুলো। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ছাড়া সরকার কীভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
তথাকথিত মানবিক করিডোর স্থাপন নিয়ে জাতিসংঘ বা অন্য কারও সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনা হয়নি বলে দাবি করছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
গত অক্টোবরে জাতিসংঘের উন্নয়ন প্রকল্প (ইউএনডিপি) রাখাইন পরিস্থিতি নিয়ে ১২ পাতার একটি প্রতিবেদন তৈরি করে। প্রতিবেদনে রাখাইনের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির অবনতির কথা উল্লেখ করা হয়। রাখাইনের পণ্য প্রবেশের জন্য আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ সীমান্ত বন্ধ রয়েছে, আয়ের কোনো উৎস নেই। ভয়াবহ মূল্যস্থিতি, অভ্যন্তরীণ খাদ্য উৎপাদনে ধস, জরুরি সেবা এবং সামাজিক সুরক্ষায় ঘাটতি দেখা দিয়েছে। কয়েক মাসের মধ্যে সেখানে ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর পরিস্থিতি আরও অবনতির শঙ্কা করছে জাতিসংঘ।