গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে শয়ন কক্ষ থেকে হৃদয় মিয়া (২৫) নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মৃত হৃদয় পার্বতীপুর গ্রামের আনারুল ইসলামের ছেলে।

শনিবার (১৫ মার্চ) সকালে উপজেলার মহদীপুর ইউনিয়নের পার্বতীপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, হৃদয় মিয়া আজ থেকে ১০ দিন আগে আগে তার বন্ধুর স্ত্রী লামিয়াকে স্ত্রী হিসেবে বিয়ে করে বাড়িতে নিয়ে আসেন। পরে লামিয়া জানতে পারে তার আগের একজন স্ত্রী রয়েছে। এরপর থেকেই লামিয়া বাবার বাড়ি ফিরে যেতে চাইছিলেন। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনমালিন্য সৃষ্টি হয়। গতকাল রাতে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। সকালে হৃদয়ের স্ত্রী লামিয়ার চিৎকারে বাড়ির লোকজন ছুটে এসে দেখতে পায় গলায় ওড়না পেচিয়ে ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ঘরের ধর্ণার সঙ্গে হৃদয়ের মরদেহ ঝুলে আছে। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।

হৃদয়ের স্ত্রী লামিয়া বলেন, “আমাদের সম্পর্ক করে বিয়ে হয়েছে। সে আমার স্বামীর বন্ধু। তার ঘরে স্ত্রী আছে, আমাকে সেটা জানায়নি। আমারও আগের ঘরে স্বামী-সন্তান আছে। একারণে আমি বাবার বাড়ি ফিরে যেতে চেয়েছিলাম। এ নিয়ে কাল রাতে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে হৃদয় গলায় ফাঁসি দেয়ার চেষ্টা করেছিল। আমি তাকে বাঁচিয়েছি। আমি ঘুমানোর পরে আবার সে কখন ফাঁস দিয়েছে, সেটা টের পাইনি।”

পলাশবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুলফিকার আলী ভুট্টো বলেন, “হৃদয় নামে এক যুবক গত ৪ মার্চ তার এক বন্ধুর স্ত্রীকে ফুসলিয়ে এনে বিয়ে করে। আজ ভোরে সে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্নহত্যা করেছে বলে জানতে পারি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। নিহতের স্ত্রী ও পরিবারের লোকজন থানায় এসেছিল। তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/মাসুম/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার

অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’

সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।

সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।

এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’

অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি‌ বরাবর অভিযোগ করেন।

এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ