বিক্রয়কর্মীর অগোচরে কেউ কেউ দোকান থেকে পণ্য নিয়ে সটকে পড়েন। অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে দোকান লুট করার ঘটনা তো ঘটেই। কিন্তু সাপ দেখিয়ে পণ্য হাতিয়ে নেওয়ার কথা কে কবে শুনেছে? যুক্তরাষ্ট্রের চার ব্যক্তি এ কাজই করেছেন।
তাঁরা টেনিসি অঙ্গরাজ্যের ম্যাডিসন কাউন্টির একটি পেট্রল পাম্পের কাউন্টারে দুটি অজগর রাখেন। এতে ক্যাশিয়ারের মনোযোগ চলে যায় অজগরের দিকে। এই ফাঁকে ৪০০ ডলারের তেল (সিবিডি) চুরি করেন তাঁরা। পুলিশ তাঁদের খুঁজছে।
দোকানে থাকা সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, একজন নারী ও একজন পুরুষ দোকানে ক্যাশিয়ারের সঙ্গে কথা বলছেন। পুরুষটি দুই হাতে একটি ছোট আকারের অজগর সাপ ধরে আছেন। ‘বল পাইথন’ প্রজাতির অজগর সাপটি তাঁর দুই হাতের তালুতে কুণ্ডলি পাকিয়ে শুয়ে আছে। সঙ্গে থাকা নারী সেটির গায়ে একটু পরপর হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন।
একপর্যায়ে পুরুষটি তাঁর হাতে থাকা সাপটি কাউন্টারে নামিয়ে রাখেন এবং সঙ্গে থাকা নারী সিসিটিভি ক্যামেরার আওতার বাইরে থাকা কারও সঙ্গে কথা বলেন বলে মনে হয়। এরপর পুরুষটি আরেকটি অজগর নিয়ে আসেন, ভিডিওটি এ পর্যন্তই।
বল পাইথনের বিষ নেই। এটি সহজেই পোষ মানে, আদি নিবাস আফ্রিকায়। এই অজগর সর্বোচ্চ ১ দশমিক ৮ মিটারের মতো লম্বা হয়।
টেনেসির অলাভজনক সংস্থা ৭৩১ ক্রাইম স্টপার্স এই সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করেছে।
সংস্থাটি পুলিশকে সন্দেহভাজন অপরাধীদের ধরতে সাহায্য করছে।
৭৩১ ক্রাইম স্টপার্স বলছে, সন্দেহভাজন চারজনের দুজন নারী ও দুজন পুরুষ, সবাই কৃষ্ণাঙ্গ। তাঁরা ৪ মার্চ ওই দোকান থেকে একটি কালো রঙের গাড়িতে চড়ে চলে যাওয়ার আগে ৪০০ মার্কিন ডলারের সিবিডি চুরি করে নিয়ে যান।
সিবিডি (ক্যানাবিডিওল) তেল গাঁজার একটি সক্রিয় উপাদান। যে গাছ থেকে এটি পাওয়া যায়, সেটি আর গাঁজার গাছ একই প্রজাতির। নানা ধরনের চিকিৎসায় এই তেল ব্যবহার করা হয়।
যুক্তরাজ্যে মৃগীরোগ এবং শরীরের ব্যথা ও দুর্বলতা কাটাতে চিকিৎসকেরা ব্যবস্থাপত্রে সিবিডি তেল দেন। এই তেল শরীরে মালিশ করা যায়, নাক-মুখ দিয়ে নিশ্বাসের মতো টেনে গ্রহণ করা যায় বা কয়েক ফোঁটা করে খাওয়াও যায়। উদ্বেগ ও বিষণ্নতার চিকিৎসায় এই তেল ব্যবহার হয় বলে জানা গেছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কুবিতে নতুন ১৮ বিভাগ ও ৪ ইনস্টিটিউট চালুর সুপারিশ
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ৮৯তম একাডেমিক কাউন্সিল মিটিংয়ে সার্বিকভাবে আসন সংখ্যা কমানোসহ অর্গানোগ্রামে আরো ১৮টি নতুন বিভাগের অন্তর্ভুক্তি, চারটি ইনস্টিটিউট চালু এবং ১২টি বিভাগে পিএইচডি ডিগ্রি চালুর সুপারিশ করা হয়েছে।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ল্যাবভিত্তিক বিভাগগুলোতে আসন সংখ্যা ৪০টি এবং ল্যাববিহীন বিভাগগুলোতে ৫০টি আসন রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। নতুন ১৮টি বিভাগ অন্তর্ভুক্তির সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত বিভাগগুলো হলো—পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ, জৈব রসায়ন ও আণবিক জীববিজ্ঞান বিভাগ এবং জৈবপ্রযুক্তি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ। সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত বিভাগগুলো হলো—সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, জনসংখ্যা বিজ্ঞান বিভাগ এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ। কলা ও মানবিক অনুষদভুক্ত গুলো হলো—ইসলামিক স্টাডিজ ও সংস্কৃতি বিভাগ, ইতিহাস বিভাগ এবং দর্শন বিভাগ। ব্যবসায় অনুষদভুক্ত বিভাগগুলো হলো— পর্যটন ও আতিথেয়তা ব্যবস্থাপনা বিভাগ, ব্যবসায়িক তথ্যবিজ্ঞান বিভাগ, আন্তর্জাতিক ব্যবসা বিভাগ এবং লজিস্টিক ও মার্চেন্ডাইজিং বিভাগ। প্রকৌশল অনুষদভুক্ত বিভাগগুলো হলো— বৈদ্যুতিক ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগ, রাসায়নিক প্রকৌশল বিভাগ, পুরকৌশল বিভাগ এবং যন্ত্রকৌশল বিভাগ। আইন অনুষদভুক্ত বিভাগটি হলো— অপরাধবিদ্যা বিভাগ।
পাশাপাশি চারটি ইনস্টিটিউট গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে। সেগুলো হলো—আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় উন্নত গবেষণা কেন্দ্র এবং একাডেমিক মান বৃদ্ধি কেন্দ্র। এগুলোর গঠন কাঠামোও সুপারিশ করা হয়েছে।
এর মধ্যে আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের জন্য পরিচালক হিসেবে একজন অধ্যাপক, নিয়মিত অধ্যাপক দুইজন, তিনজন সহযোগী অধ্যাপক, সেকশন অফিসার বা ম্যানেজার একজন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা একজন, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার টাইপিস্ট একজন, অফিস সহায়ক দুইজন এবং একজন ক্লিনার।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় উন্নত গবেষণা কেন্দ্র এবং একাডেমিক মান বৃদ্ধি কেন্দ্রের জন্য পরিচালক হিসেবে একজন অধ্যাপক, একজন অতিথি অধ্যাপক, অতিরিক্ত পরিচালক হিসেবে একজন অধ্যাপক অথবা সহযোগী অধ্যাপক, সেকশন অফিসার অথবা ম্যানেজার হিসেবে একজন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা একজন, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার টাইপিস্ট একজন, অফিস সহায়ক দুইজন এবং ক্লিনার একজন।
১২টি বিভাগে পিএইচডি ডিগ্রি চালুর প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিটি বিভাগে ন্যূনতম ২৬ জন করে শিক্ষক রাখার ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেছেন, “আমরা মিটিংয়ে এগুলো সুপারিশ করেছি। অর্গানোগ্রাম অনুসারে বিশ্ববিদ্যালয় ডিপার্টমেন্টের জন্য ছাড়পত্র চায়, তারপর কমিশন (ইউজিসি) যদি অনুমোদন দেয়, তখন সেটা অর্গানাগ্রামে যুক্ত হয়। অর্গানোগ্রামে থাকলেই যে বিভাগ হয়ে যাবে, এমন না। একটা অনুমোদন দিয়ে রাখে। এই অনুমোদনের আলোকে আবার যখন দরখাস্ত দেওয়া হয়, তখন কমিশন বসে সিদ্ধান্ত নেবে।”
তিনি আরো বলেন, “ইউজিসি আমাদের নির্দেশনা দিয়েছে আসন সংখ্যা কমাতে, যাতে কোয়ালিটি এডুকেশনের নিশ্চিত হয়। তারা ল্যাববেজড বিভাগের জন্য ৪০টি আসন এবং ল্যাববিহীন বিভাগের জন্য ৫০টি আসন বরাদ্দ দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে।”
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেছেন, “অনেকগুলো সিদ্ধান্তই নেওয়া হয়েছে। তবে, এখনই না দেখে বলা যাচ্ছে না। রেজ্যুলেশন পাস হলে বিস্তারিত বলতে পারব।”
ঢাকা/এমদাদুল/রফিক