সাফল্য লাভের জন্য কর্ম যথেষ্ট নয়। দরকার সঠিক কর্মকৌশল, সহনশীলতা এবং কিছু বিষয়ে সচেতনতা। আর তাতেই আপনি জীবনের প্রতিটি যুক্তিসঙ্গত চাওয়াকে পাওয়ায় রূপান্তর করতে পারবেন।
পাশ্চাত্য রাশিচক্রমতে চন্দ্র ও অন্যান্য গ্রহগত অবস্থানের ওপর ভিত্তি করে চলতি সপ্তাহের বিভিন্ন রাশির জাতক-জাতিকাদের নানা বিষয়ের শুভাশুভ পূর্বাভাস ও সতর্কতা জানাচ্ছেন বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রলজার্স সোসাইটির (বিএএস) যুগ্ম মহাসচিব জ্যোতিষশাস্ত্রী ড.
মেষ রাশি (২১ মার্চ-২০ এপ্রিল): মানসিক স্থিরতা বজায় রাখার চেষ্টা করুন। আর্থিক বিষয় শুভ। আয়ের সুযোগ তৈরি হবে। আত্মিক চিন্তাভাবনা বাড়বে। ব্যবসায়িক যোগাযোগে সমস্যা তৈরি হতে পারে। দাম্পত্য জীবনযাপন নিয়ে সমস্যা বাড়বে। ভ্রমণে জটিলতা বাড়তে পারে।
আরো পড়ুন:
এ সপ্তাহের রাশিফল (১৫-২১ মার্চ)
এ সপ্তাহের রাশিফল (৮-১৪ মার্চ)
বৃষ রাশি (২১ এপ্রিল-২১ মে): পেশাগত সফলতা পাবেন। শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থতা বোধ করতে পারেন। সুনাম ও মর্যাদা বাড়বে। জীবনের প্রতি মুক্ত ও উদার দৃষ্টিভঙ্গী দিয়ে অবসাদ নিরাময় করুন। প্রিয়জনের সঙ্গে পারস্পরিক সম্পর্ক ভালো রাখুন। অন্যের দ্বারা প্রভাবিত হতে পারেন।
মিথুন রাশি (২২ মে-২১ জুন): পারিবারিক আনন্দ উপভোগ করবেন। স্বাস্থ্যের বিষয়ে মনোযোগ দিন। অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। পেশাগত কাজে ধৈর্য ও একাগ্রতা, ধারাবাহিকতার অভাব থাকবে। প্রেমজনিত সমস্যা তৈরি হতে পারে।
কর্কট রাশি (২২ জুন-২৩ জুলাই): গুরুত্বপূর্ণ কোনো সিদ্ধান্ত উত্তেজিত অবস্থায় নেয়া ঠিক হবে না। ভ্রমণের সুযোগ পাবেন। লেনদেনে আরো সতর্ক হওয়া উচিত। শারীরিক বিষয়ে দুশ্চিন্তা বাড়তে পারে। পেশাগত কাজে সফলতা পাবেন।
সিংহ রাশি (২৩ জুলাই-২৩ আগস্ট): দীর্ঘসূত্রিতা পরিহার করতে হবে। শারীরিকভাবে অসুস্থ বোধ করতে পারেন। অশ্লীলতা থেকে দূরে থাকুন। অহেতুক সমালোচনা করা থেকে বিরত থাকুন। প্রাণবন্ত ও কর্মচাঞ্চল্য মানসিকতা বাড়বে। হতাশ লোকদের এড়িয়ে চলুন। আর্থিক যোগাযোগ শুভ। ভ্রমণ শুভ।
কন্যা রাশি (২৪ আগস্ট-২৩ সেপ্টেম্বর): প্রশান্তি অনুভব করবেন। বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে সফলতা পাবেন। অনেক সমস্যা ও প্রতিকূলতাকে জয় করতে পারবেন। নেতিবাচক পরিবেশ থেকে দূরে থাকাই ভালো হবে। ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
তুলা রাশি (২৪ সেপ্টেম্বর-২৩ অক্টোবর): শারীরিক সুস্থতার দিকে নজর রাখুন। আর্থিক যোগাযোগ শুভ। ভ্রমণ শুভ। পারিবারিক বিষয়ে উদার দৃষ্টিভঙ্গী বজায় রাখুন। ব্যয় নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুন। পেশাগত কাজে সফলতা আসবে।
বৃশ্চিক রাশি (২৪ অক্টোবর-২২ নভেম্বর): ব্যবসায়িক সফলতা পাবেন। অনেক বিষয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিতে পারে। প্রতিশোধ নেওয়ার মানসিকতা পরিহার করুন। সাংগঠনিক কাজে সফলতা পাবেন। আর্থিক বিষয় শুভ।
ধনু রাশি (২৩ নভেম্বর-২১ ডিসেম্বর): চাকরিক্ষেত্রে উন্নতির সুযোগ আছে। সুযোগের সদ্ব্যবহার করুন, সফলতা পাবেন। হঠাৎ সিদ্ধান্ত নেওয়ার মানসিকতা পরিহার করুন। ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
মকর রাশি (২২ ডিসেম্বর-২০ জানুয়ারি): পারিবারিক অশান্তি দেখা দিতে পারে। নির্ভরযোগ্য কোনো জায়গায় বিনিয়োগ করলে সফলতা পাবেন। যেকোনো কষ্ট ও হতাশায় ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে চলুন। কোনো সম্পর্কে কিছু সমস্যা তৈরি হতে পারে। আর্থিক যোগাযোগ শুভ।
কুম্ভ রাশি (২১ জানুয়ারি-১৮ ফেব্রুয়ারি): অপ্রত্যাশিত বিষয় থেকে মানসিক কষ্ট পেতে পারেন। ধীরস্থিরভাবে যেকোনো সিদ্ধান্ত নিন। ভুল বোঝাবুঝি বাড়তে পারে। নেতিবাচক পরিবেশ থেকে দূরে থাকাই ভালো হবে। ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
মীন রাশি (১৯ ফেব্রুয়ারি-২০ মার্চ): সহনশীলতা বাড়াতে হবে। পারিবারিক বিষয় নিয়ে ইতিবাচক থাকুন। শারীরিক বিষয়ে সমস্যা হতে পারে। প্রতিবন্ধকতাকে দৃঢ়তার সঙ্গে মোকাবিলা করুন। বহুমুখী তৎপরতাকে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুন।
ঢাকা/ফিরোজ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র শ ফল প শ গত আর থ ক হ র কর ভ রমণ সমস য
এছাড়াও পড়ুন:
চিরন্তন সফলতার অপরিহার্য ১০ শর্ত
সাফল্য অর্জনের জন্য মুমিন সমাজকে সম্মিলিতভাবে ও ব্যক্তিগতভাবে বেশ কিছু মৌলিক শর্ত পালন করতে হয়:
১. আত্মশুদ্ধিআত্মশুদ্ধি হলো ব্যক্তির ভেতরের সৎ ও ন্যায়ের দিকে ধাবিত হওয়া সহজাত প্রবণতাগুলোকে পরিচর্যা করা এবং সেগুলোকে বিকশিত করা।
বাহ্যিক পরিবেশ, নির্দেশনা ও উদ্দীপনা এই সহজাত প্রবণতাকে জাগ্রত করতে, শাণিত করতে ও সঠিক পথে চালিত করতে সাহায্য করে, যাতে মানুষ সত্যকে তার সঠিক রূপে উপলব্ধি করতে পারে। কোরআনের ভাষ্য অনুযায়ী, “নিশ্চয় সে-ই সফলকাম হয়েছে, যে আত্মাকে পবিত্র করেছে।” (সুরা শামস, আয়াত: ৯)
২. সবরসবর হলো ধৈর্য, যা সাফল্যের একটি শক্তিশালী ভিত্তি। এটি তিন ধরনের হয়:
আনুগত্যে ধৈর্য: আল্লাহর বিধান ও ইবাদত পালনে ধৈর্যধারণ করা।
পাপ থেকে বিরত থাকার ধৈর্য: নফসের কামনা, লোভ ও আকাঙ্ক্ষা এবং শয়তানের প্ররোচনা থেকে দূরে থাকার জন্য নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা।
বিপদাপদে ধৈর্য: বাতিল ও অসত্যের বাড়াবাড়ি, জালিমের নির্লজ্জতা, দুর্দিনে সাহায্যকারীর অভাব এবং কঠিন মুহূর্তে হতাশা ও সন্দেহের বিরুদ্ধে অবিচল থাকা।
এর পাশাপাশি বিজয় ও ক্ষমতা লাভের পর বিনয় ও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার ধৈর্যও জরুরি। সকল পরিস্থিতিতে—সুখে-দুঃখে—আল্লাহর সঙ্গে দৃঢ় সংযোগ বজায় রাখা এবং তাঁর ফয়সালার কাছে আত্মসমর্পণ করাই সবর। (গাজালি, ইহইয়াউ উলুমিদ্দিন, ৪/৫৯, দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ, বৈরুত, ২০০৫)
৩. অবিচলতাঅবিচলতা মানে এখানে শত্রুদের চেয়েও বেশি দৃঢ় ও অবিচল থাকা। এটি শত্রুর ধৈর্যের বিরুদ্ধে নিজেদের ধৈর্যের এক প্রতিযোগিতা। যখন ভ্রান্তপন্থীরা তাদের পথে অবিচল থাকে, তখন সত্যপন্থীদের উচিত আরও বেশি দৃঢ়তা ও সাহসের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়া।
আল্লাহ বলেন, “যদি তোমরা কষ্ট পাও, তবে তারাও তোমাদের মতোই কষ্ট পাচ্ছে, আর তোমরা আল্লাহর কাছে এমন কিছু আশা করো যা তারা আশা করে না।” (সুরা নিসা, আয়াত: ১০৪)
আরও পড়ুনসফলতা ও বিজয়ের জন্য ঐক্যের গুরুত্ব ১৬ আগস্ট ২০২৪৪. সতর্ক অবস্থানইসলামি পরিভাষায় একে বলে মুরাবাতা। অর্থাৎ, জিহাদের স্থানে, সীমান্ত ও স্পর্শকাতর অঞ্চলে সর্বদা সতর্ক ও প্রস্তুত থাকা। ইসলাম প্রচারের গুরুদায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই মুসলিম উম্মাহ সবসময় শত্রুদের বাধার সম্মুখীন হয়েছে। এটি নবীদের ও তাদের অনুসারীদের ক্ষেত্রে আল্লাহর এক সাধারণ নীতি। যখন ওয়ারাকা ইবনে নওফল রাসুল (সা.)-কে বলেছিলেন যে, “আপনার মতো বার্তা নিয়ে এমন কেউ আসেনি, যার বিরুদ্ধে শত্রুতা করা হয়নি” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৩), তখন এটিই প্রমাণিত হয়েছে।
এই কারণে মুসলিম উম্মাহকে তার স্থায়ী ও স্বাভাবিক শত্রুদের থেকে সুরক্ষিত থাকার জন্য সর্বদা সতর্কতা ও পাহারায় থাকতে হবে। আল্লাহ বলেন, “হে মুমিনগণ! তোমরা ধৈর্য ধারণ করো এবং ধৈর্যে প্রতিযোগিতা করো এবং সীমান্ত পাহারায় প্রস্তুত থাকো আর আল্লাহকে ভয় করো, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো।” (সুরা আলে ইমরান, আয়াত: ২০০)
৫. খোদাভীতিখোদাভীতি হলো ভেতরের সেই সুরক্ষা, যা ব্যক্তিকে খারাপ পরিস্থিতিতে প্রভাবিত হওয়া থেকে রক্ষা করে। কঠিন সামাজিক বা অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কিংবা সামরিক পরাজয় ততক্ষণ পর্যন্ত সামান্যই ক্ষতি করতে পারে, যতক্ষণ না তা মৌলিক নীতি, নৈতিকতা ও আত্মাকে পরিবর্তন করে ফেলে।
আল্লাহকে ভয় করা সমাজের আত্মাকে পরিমার্জিত, শক্তিশালী ও উন্নত করার পথ। এর মধ্যে রয়েছে সৎ আচরণ, হারাম কাজ থেকে বিরত থাকা (যেমন সুদ, মদ, জুয়া), কঠোরভাবে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা, লোভের প্রতিরোধ করা, সহযোগিতা, আত্মত্যাগ, আল্লাহর পথে ব্যয় এবং জাতীয় সম্পদ রক্ষা করা।
খোদাভীতিই বিবেক বা চেতনার সতর্ক প্রহরী, যা ব্যক্তিকে ভুল পথে বা দুর্বলতায় পতিত হওয়া থেকে রক্ষা করে। এটিই সাফল্যের মূল কেন্দ্রবিন্দু, “সুতরাং হে জ্ঞানীরা, তোমরা আল্লাহকে ভয় করো, যাতে তোমরা সফল হতে পারো।” (সুরা মায়েদা, আয়াত: ১০০)
৬. সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধসমাজকে সংশোধন ও সাফল্যের পথে পরিচালিত করার জন্য এই কাজটি অপরিহার্য। এটি ধর্ম, জীবন, জ্ঞান, সম্পদ ও বংশ—এই পাঁচটি মৌলিক প্রয়োজনীয়তাকে রক্ষা করে। এর মাধ্যমে সমাজের কল্যাণ নিশ্চিত হয় এবং স্থিতিশীলতা বজায় থাকে।
এই দায়িত্ব পালনের মাধ্যমেই আল্লাহ উম্মাহকে শ্রেষ্ঠত্বের আসনে সমাসীন করেছেন, “আর তোমাদের মধ্যে এমন একটি দল থাকা উচিত, যারা কল্যাণের দিকে আহ্বান করবে, সৎ কাজের আদেশ দেবে এবং অসৎ কাজের নিষেধ করবে; আর এরাই হলো সফলকাম।” (সুরা আলে ইমরান, আয়াত: ১০৪)
আরও পড়ুনবিশ্বাসীরা কখন সফল হবে০৮ মে ২০২৫৭. রাসুল (সা.)-এর খাঁটি অনুসরণসাফল্যের জন্য আল্লাহর ইবাদত ও আনুগত্য একমাত্র সেই পদ্ধতিতেই করতে হবে, যা তিনি তাঁর রাসুল (সা.)-এর মাধ্যমে বিধিবদ্ধ করেছেন। যারা রাসুলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে, তাঁকে সাহায্য করে এবং তাঁর সঙ্গে নাজিলকৃত নূর (কোরআন) অনুসরণ করে, তারাই সফলকাম। (সুরা আরাফ, আয়াত: ১৫৭)
৮. অনুতাপ ও প্রত্যাবর্তনতওবা মানে আল্লাহর দিকে দ্রুত ফিরে আসা এবং তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। এটি ভ্রান্ত পথ থেকে সরে আসার প্রতীক। আল্লাহ তায়ালা তওবাকে সাফল্যের সঙ্গে সম্পর্কিত করেছেন, “হে মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর কাছে তওবা করো, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো।” (সুরা জুমার, আয়াত: ৩১)
৯. আল্লাহকে স্মরণ করাআল্লাহর জিকির বা স্মরণ অধিক পরিমাণে করলে সফলতা অবশ্যম্ভাবী। কোরআনে বলা হয়েছে, “আর তোমরা আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ করো, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো।” (সুরা জুমুআ, আয়াত: ১০)
১০. আল্লাহর নেয়ামতের শুকরিয়াআল্লাহর নেয়ামত ও অনুগ্রহের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা, যা তিনি কৃতজ্ঞদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন, এর মাধ্যমেও সাফল্য লাভ হয়: “সুতরাং আল্লাহর অনুগ্রহের কথা স্মরণ করো, যাতে তোমরা সফল হতে পারো।” (সুরা আরাফ, আয়াত: ৬৯)
আরও পড়ুনসফল মুমিনের বৈশিষ্ট্য২৫ মার্চ ২০২৪