রাহানের ঝোড়ো ফিফটিতে চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ কলকাতার
Published: 22nd, March 2025 GMT
অধিনায়ক আজিঙ্কা রাহানে ও সুনীল নারিনের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে চ্যালেঞ্জিং পুঁজি গড়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। শনিবার (২২ মার্চ) ইডেন গার্ডেন্সে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৭৪ রান তোলে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। তবে ব্যর্থ হয়েছেন বেঙ্কটেশ আইয়ার, রিঙ্কু সিং ও আন্দ্রে রাসেল। বেঙ্গালুরুর হয়ে ক্রুনাল পাণ্ডে ৪ ওভারে ২৯ রান দিয়ে শিকার করেন ৩ উইকেট।
টস জিতে কলকাতাকে ব্যাট করতে পাঠান বেঙ্গালুরু অধিনায়ক রজত পতিদার। শুরুতেই বাউন্ডারিতে ইনিংস শুরু করলেও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি ওপেনার কুইন্টন ডি কক। প্রথমে ক্যাচ মিস হলেও হ্যাজলউডের পরের বলে উইকেটরক্ষক জিতেশ শর্মার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। ইনিংসের শুরুতেই উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে কলকাতা।
তবে সেই চাপ সামাল দেন ওপেনার সুনীল নারিন ও অধিনায়ক রাহানে। শুরুতে সাবধানী ব্যাটিং করলেও পরবর্তীতে দুজনেই হাত খুলে খেলেন। পাওয়ার প্লে শেষে স্কোর দাঁড়ায় ৬০/১। নবম ওভারে সুয়েশ শর্মার এক ওভারেই তুলে নেন ২২ রান। সেই ওভারেই ছক্কা মেরে হাফ সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন রাহানে। মাত্র ৯.
তবে দশম ওভারে ম্যাচে ফেরে বেঙ্গালুরু। ৪৪ রান করা সুনীল নারিনকে ফেরান রাসিখ সালাম। পরের ওভারে রাহানেকেও সাজঘরে ফেরান ক্রুণাল পাণ্ডে। রাহানে ৩১ বলে ৫৬ রান করেন, যেখানে ছিল ৬টি চার ও ৪টি ছক্কা। দ্রুত দুই সেট ব্যাটার ফিরে যাওয়ায় আবার চাপে পড়ে কলকাতা। এরপর ব্যর্থ হন বেঙ্কটেশ আইয়ার (৭ বলে ৬), রিঙ্কু সিং (১০ বলে ১২) ও আন্দ্রে রাসেল (৪ রান)। এক পর্যায়ে কলকাতার সমর্থকদের মুখেও নেমে আসে হতাশা।
পাঁচ নম্বরে নেমে কিছুটা লড়াই করেন তরুণ ব্যাটার রঘুবংশী। শেষ দিকে ২১ বলে ৩০ রান করে তিনিও ফেরেন যশ দয়ালের বলে। হর্ষিত রানা করেন ৫ রান। ইনিংসের শেষে রমনদীপ সিং (৬*) ও স্পেনসার জনসন (১*) অপরাজিত থাকেন। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৭৪ রানে থামে কলকাতার ইনিংস।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
গোপালগঞ্জে সহিংসতার ঘটনায় গত চার দিনে ১২ শিশুর জামিন নামঞ্জুর
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পথসভাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে ১৮ জন শিশু রয়েছে। এর মধ্যে গত চার দিনে ১২ শিশুর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
গতকাল বৃহস্পতিবার সাত শিশুর জামিন আবেদনের শুনানি হয়। গোপালগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) সৈয়দ আরাফাত হোসেন তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। এর আগে সোম ও মঙ্গলবার পাঁচ শিশুর জামিন আবেদন করা হয়। তাদের জামিন নামঞ্জুর করা হয়। ওই পাঁচজনের জামিন আবেদন করা হয়েছিল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে।
কারাগার সূত্র জানায়, গত ১৬ জুলাই সংঘর্ষের পর ১৭ ও ১৮ জুলাই জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ১৮ শিশুকে আটক করে পুলিশ। ১৮ জুলাই তাদের আদালতে হাজির করে গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। পরে ২১ জুলাই তাদের যশোরের পুলেরহাট শিশু-কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়।
আদালতের নথি অনুযায়ী, গ্রেপ্তার হওয়া শিশুদের বয়স, ঠিকানা পরিষ্কারভাবে উল্লেখ নেই। তবে গতকাল পর্যন্ত ১২ শিশুর নাম ও পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। প্রথম আলোর পক্ষ থেকে চার পরিবারের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। অভিভাবকদের অভিযোগ, তাদের সন্তানদের কোনো ধরনের তদন্ত ছাড়াই আটক করা হয়েছে।
আরও পড়ুনগ্রেপ্তার হওয়া শিশুদের বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ২৭ জুলাই ২০২৫একজন শিশুর বাবা বলেন, ‘সংসারে অভাব–অনটন, নিজেরাই সংসার চালাইতে পারি না। আমার কষ্ট দেখে ছেলে রাজমিস্ত্রির কাজে যোগ দেয়। সে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার রমজান শেখ নামের একটা রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করে। কাজের সময় পুলিশ তাদের ধরে নিয়ে যায়।’
আরেক শিশুর ভ্যানচালক বাবা বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, কোথাও কোনো কাইজের মধ্যে নেই। তিনডা ছেলে, বড়টা একটা মাদ্রাসার শিক্ষক। ছোট দুইডা এখনো পড়ে। যারে ধরছে, সে সবার ছোট। ওই দিন সকালে আমার মাদ্রাসায় গেছে, পরীক্ষা ছিল। পরে দুপুরের আগে আমি নিজে যাইয়ে নিয়ে আসছি। সেদিন বাড়িতেই ছিল। পরের দিনও সারা দিন বাড়ি ছিল, সেদিন তো কারফিউ ছিল। আসরের নামাজের পর আমার কাছ থেকে ২০ টাকা নিয়ে গেছে চটপটি খাইতে। পাশে মাদ্রাসার সামনেই চটপটির দোকান বসে। সেই হান দে ওরে ধইরে নিছে।’
ওই ব্যক্তি আরও বলেন, ‘ধরার ঘণ্টাখানেক পর থানা থেইকা ফোন দিছে, কয় ছেলে ধরা হইছে। আমরা থানায় গিয়া অনেক কইছি, ও তো কোথাও যায় না, কোনো গ্যাঞ্জামের ছেলে না। মাদ্রাসায় পড়ে। কিন্তু কেউ কিছুই শুনল না। ছেলেরে ছাড়ায় আনতে অনেক জায়গায় দৌড়াইছি।’ তিনি জানান, এ ঘটনার পর থেকে তাঁদের প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।
এ ছাড়া জামিনের আশ্বাস দিয়ে কয়েকজন লোক তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন একজন অভিভাবক।
আরও পড়ুনগোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলার ঘটনায় আরও একটি মামলা, আসামি ৪৭৭ জন৩১ জুলাই ২০২৫গ্রেপ্তার এক শিশুর আইনজীবী ফিরোজা বেগম বলেন, ১৬ জুলাই সহিংসতার ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় এই শিশুকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭৩ ধারায় দ্রুত তদন্ত করে নির্দোষ প্রমাণিত হলে তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে সরকারি কৌঁসুলি তৌফিকুল ইসলাম বলেন, শিশুরা অল্প সময় আগে গ্রেপ্তার হয়েছে, এখনো তদন্ত চলছে। তাই হয়তো বিচারক জামিন নামঞ্জুর করেছেন। এ মামলায় এখনো কারও জামিন হয়নি।
আরও পড়ুনগোপালগঞ্জে সংঘাতের ইঙ্গিত ছিল স্পষ্ট, নিরাপত্তা প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন ১৮ জুলাই ২০২৫