ঈদের কেনাকাটায় ইস্টার্ন প্লাজার জৌলুশ আর নেই
Published: 25th, March 2025 GMT
নব্বই দশকের শুরুতে রাজধানীর সবচেয়ে আধুনিক ও জনপ্রিয় মার্কেট ছিল ইস্টার্ন প্লাজা। পুরো মার্কেট ছিল আভিজাত্যে মোড়ানো এবং বিলাসবহুল পণ্যের সমাহার। ওই সময়ে এই ইস্টার্ন প্লাজায় চলন্ত সিঁড়ি (এস্কেলেটর) ও ক্যাপসুল লিফট ছিল। ঈদের সময় এই মার্কেটে ভিড় লেগেই থাকত। দেদার বেচাকেনাও চলত। তখনকার রাজধানীর সচ্ছল পরিবারের তরুণ-তরুণীদের কাছে ঈদের কেনাকাটায় প্রথম পছন্দ ছিল ইস্টার্ন প্লাজা। এমনকি তখন শুধু ঘোরাঘুরির জন্য ইস্টার্ন প্লাজায় আসতেন অনেক তরুণ-তরুণী। শুধু ঢাকাবাসী নয়; ঢাকার আশপাশের মানুষজনও এই মার্কেটে কেনাকাটার পাশাপাশি ঘুরতেও আসতেন।
কিন্তু ইস্টার্ন প্লাজার আগের জৌলুশ আর নেই। গত তিন দশকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বহুতল আধুনিক বিপণিবিতান নির্মাণ হয়েছে। রাজধানীবাসী সেসব মার্কেটে ঝুঁকছে। তবে ইস্টার্ন প্লাজার সেই জৌলুশ একেবারেই ম্লান হয়নি।
এখনো মার্কেটটি তার নিজ গুণে ক্রেতাদের আস্থা ধরে রেখেছে। ১৯৯২ সালে ৪৬২টি দোকান নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় মার্কেটটি। পুরো মার্কেটটি ৫৫ হাজার বর্গফুট। যেখানে প্রতিটি দোকানের ভাড়া জায়গা ও প্রকারভেদে ১০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকার মধ্যে।
মার্কেটটির ব্যবসায়ীরা বলছেন, নব্বইয়ের দশকজুড়ে জমজমাট ব্যবসা করেছে ইস্টার্ন প্লাজা। তবে পরে বসুন্ধরা শপিং মলসহ অন্যান্য মার্কেট হওয়ায় এই মার্কেটের চাহিদায় কিছুটা ভাটা পড়েছে। তাঁদের মতে, ২০১২ সাল পর্যন্ত রমরমা ব্যবসা করেছেন ইস্টার্ন প্লাজার ব্যবসায়ীরা। তবে এখনো পুরোপুরি জৌলুশ হারায়নি মার্কেটটি।
ইস্টার্ন প্লাজায় আগের সেই রমরমা ব্যবসা এখন আর নেই। আজ সোমবার তোলা.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
মৃত্যু যেখানে রমরমা ব্যবসা হয়ে উঠছে
দক্ষিণ কোরিয়ার বন্দর নগরী বুসানের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে সারিবদ্ধ করে রাখা হয়েছে কফিন। দেশটিতে ভবিষ্যতের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া পরিচালকদের প্রশিক্ষণের জন্য এগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ায় ব্যাপক জনসংখ্যাগত পরিবর্তনের ফলে মৃত্যুর ব্যবসায় ক্রমবর্ধমান সংখ্যক লোক কাজ খুঁজে পাচ্ছে। কারণ দেশটিতে জন্মহার বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে কম এবং জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকের বয়স ৫০ বা তার বেশি।
বুসান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির শিক্ষার্থীরা ঐতিহ্যবাহী কোরিয়ান অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার কাপড়ে সাবধানে একটি পুতুল জড়িয়ে, কাপড়টিকে আসল চামড়ার উপর মসৃণ করে, তারপর আলতো করে কফিনে নামিয়ে দিচ্ছিল।
অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া প্রশাসনের শিক্ষার্থী ২৭ বছর বয়সী জ্যাং জিন-ইয়ং বলেন, “আমাদের সমাজের বয়স বাড়ার সাথে সাথে, আমি ভেবেছিলাম এই ধরণের কাজের চাহিদা আরো বাড়বে।”
আরেক ছাত্র, ২৩ বছর বয়সী ইম সে-জিন তার দাদীর মৃত্যুর পর মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নেয়।
তিনি বলেন, “তার (দাদীর) অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় আমি দেখেছি পরিচালকরা তাকে শেষ বিদায়ের জন্য কতটা সুন্দরভাবে প্রস্তুত করেছেন। আমি গভীর কৃতজ্ঞ বোধ করছি।”
দক্ষিণ কোরিয়ার মানুষ ক্রমশ একাকী জীবনযাপন করছে এবং নিঃসঙ্গ অবস্থায় মারা যাচ্ছে। এশিয়ার চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির প্রায় ৪২ শতাংশ এখন একাকী জীবনযাপন করে।
এই পরিসংখ্যান দেশটিতে একটি নতুন পেশার আবির্ভাবকে প্রতিফলিত করছে।
উন্নত দেশগুলির মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ায় আত্মহত্যার হার সবচেয়ে বেশি। এই ‘একাকী মৃত্যু’-তে সেইসব ব্যক্তিরাও অন্তর্ভুক্ত যারা আত্মহত্যা করেছেন।
অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া ব্যবসায়ের একজন অভিজ্ঞ ব্যক্তি কিম ডু-নিয়ন বলেন, তার ২০ বছর বয়সী ক্রমবর্ধমান সংখ্যক নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মী রয়েছে।
তিনি বলেন, “মানুষ যখন একসাথে থাকে, তখন তারা জিনিসপত্র ভাগ করে নেয়... এমনকি যদি একজন ব্যক্তি মারা যায়, সেই জিনিসপত্রগুলি থেকে যায়। কিন্তু যখন কেউ একা মারা যায়, তখন সবকিছু পরিষ্কার করতে হবে।”
তবে নিজের পেশা নিয়ে ভয়ও পান কিম।
তিনি বলেন, “আমি ভয় পাচ্ছি। আপনি যতই প্রস্তুতি নিন না কেন, একজন মৃত ব্যক্তির মুখোমুখি হওয়া ভীতিকর।”
ঢাকা/শাহেদ