‘হাজারটা চাঁদ আসলেও সে রাতের কোনো মূল্য নাই, যদি তুমি না আস’—সামাজিক মাধ্যমে রিলে, স্টোরিতে কথাটা ঘুরছে। ঈদে প্রকাশ পেয়েছে নিশো-তমা মির্জা জুটির সিনেমা ‘দাগি’। ডায়লগটা এই সিনেমার। যাঁরা সিনেমাটি ইতিমধ্যে দেখেছেন, তাঁদের অনেকে যেমন কথাটা বলে, শুনে আপ্লুত হয়েছেন, হচ্ছেন—একইভাবে ট্রেলার দেখেও উচ্ছ্বসিত হয়েছেন অনেকে।
গত ২৭ মার্চ চরকির ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ পায় সিনেমাটির অফিশিয়াল ট্রেলার। ২ মিনিট ২৬ সেকেন্ডের ট্রেলারের শুরুতে শোনা যায়, ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, নিশানের ফাঁসি চাই’ স্লোগান। আর একেবারে শেষে নিশোর মায়াময় কণ্ঠে শোনা যায় ডায়লগটা। তা ছাড়া ট্রেলারের ‘ছুঁয়ে যায় আদরের এই উপহার’ গানটিও দর্শককে আকর্ষণ করেছে। আকর্ষণ করেছে নিশোর অভিনয়। মন্তব্যের ঘরে অনুভূতির কথাও জানিয়েছেন দর্শক। তাপস সরকার লিখেছেন, ‘“ছুঁয়ে যাক আদরের এই উপহার” গানটা শোনার সাথে সাথে কলিজায় লাগল।’ রুদ্রনীল লিখেছেন, ‘কী সুন্দর অভিনয়, আসলেই নিশো তুমি সেরা।’ কেউ কেউ আবার ‘হাজারটা চাঁদ আসলেও সে রাতের কোনো মূল্য নাই, যদি তুমি না আস’ কথাটায় মন্তব্যে লিখেছেন। প্রত্যাশার কথাও ব্যক্ত করেছেন অনেকে। যেমন কেউ বলেছেন, ‘“দাগি” সিনেমা হবে ব্লকবাস্টার।’ আবার অনেকের মন্তব্য, ‘দাগি’ ছাড়িয়ে যাবে ‘সুড়ঙ্গ’কে।

প্রত্যাশা তৈরি হয় সফলতাকে ঘিরে। নিশো দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত শিল্পী। ধাপে ধাপে প্রস্তুত করেছেন নিজেকে। অভিনয়দক্ষতা দিয়ে জিতে নিয়েছেন অগণিত দর্শকের প্রিয় অভিনেতার আসন। অর্জন করেছেন বাংলা চলচ্চিত্র অঙ্গনে নিজের অবস্থান। তাই তো তাঁকে ঘিরে তাঁর দর্শকের এত আশা, ভরসা, প্রত্যাশা। ‘দাগি’ নিশোর দ্বিতীয় সিনেমা। তা–ও দুই বছর পর। ২০২৩ সালে প্রকাশ পায় নিশোর প্রথম সিনেমা ‘সুড়ঙ্গ’। কেবল প্রশংসিত ও আলোড়িত বললে কম বলা হবে। সিনেমাটি রীতিমতো হইচই ফেলে দিযেছিল। সব শ্রেণির দর্শক সিনেমাটি দেখে মুগ্ধ হয়েছেন। নিশো-তমা মির্জা জুটির আলোয় আলোকিত হয়ে উঠেছিল চলচ্চিত্র অঙ্গন। ‘কী সাবলীল, প্রাণবন্ত অভিনয়, কী টানটান গল্প’ দর্শক উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে সিনেমাটি দেখে অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছিলেন। দর্শকের মুখে মুখে ‘সুড়ঙ্গ’র নাম ছড়িয়ে পড়েছিল। কেবল ঢাকা নয়, ঢাকার বাইরেও অনেক সিঙ্গেল হলে ছবিটি দেখতে দর্শক ভিড় করেছিলেন। মাল্টিপ্লেক্সেও তৈরি হয়েছিল দেখার মতো অবস্থা। দর্শকের মুখে মুখে ফিরছিল ‘সুড়ঙ্গ’র নাম। ঈদের তৃতীয় দিন স্টার সিনেপ্লেক্সে শোর সংখ্যার দিক দিয়ে রেকর্ড গড়ে সিনেমাটি। দর্শকের চাপে শোর সংখ্যা বাড়ানো হয়েছিল। তা ছাড়া ‘সুড়ঙ্গ’-এর দর্শক চাহিদার কারণে ঢাকার বাইরে সিরাজগঞ্জের ‘রুটস সিনেক্লাব’ প্রথমবারের মতো লেটনাইট শো শুরু করতে বাধ্য হয়েছিল।

‘দাগি’তেও নিশোর বিপরীতে অভিনয় করেছেন তমা মির্জা। ‘সুড়ঙ্গ’–এ নিজের অভিনয়নৈপুণ্য দেখিয়েছেন তিনি। চরিত্রটিকে এত প্রাণোচ্ছলভাবে উপস্থাপন করতে পেরেছিলেন যে দর্শক চরিত্রটিকে আক্রোশের সঙ্গে, নেতিবাচক চোখে দেখতে শুরু করে। এখানেই অভিনয়ের সার্থকতা, চরিত্রকে বাস্তবতার আলোকে পরশ দিতে পারা।
‘ছুঁয়ে দিলে মন’ খ্যাত নির্মাতা শিহাব শাহীনের নির্মাণ ‘দাগি’। দীর্ঘদিন পর কাজ নিয়ে বড় পর্দায় এলেন তিনি। তাঁর সিনেমা মানেই গল্পে টুইস্ট থাকবেই। তিনি যে গল্প বলতে ভালোবাসেন। গল্পকেই সবচেয়ে বেশি মূল্য দেন। আর এই সিনেমার গল্প, চিত্রনাট্য, সংলাপ লিখেছেন নিজেই। তাই দাগির গল্প যে দর্শকের মন কাড়বে, সে আশা রাখায় যায়।
আজ ঈদের তৃতীয় দিন। দর্শকের আশা, ভালোবাসাকে পুঁজি করে ‘দাগি’ এগিয়ে যাচ্ছে আপন গতিতে। প্রথম দিন হাউসফুল ছিল। সিনেমাটি দেখে উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে প্রাঙ্গণ মুখর করেছেন দর্শক। এক দিন যেতে না যেতেই মাল্টিপ্লেক্সে ‘দাগি’র শো বাড়ানো হয়েছে। ‘দাগি’ও ছড়িয়ে পড়েছে দর্শকের মুখে মুখে।

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে উল্লাস করে অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে দেখা গেছে দর্শককে। কেউ বলছেন, ‘দাগি হৃদয়ে দাগ কেঁটেছে’। আবার কেউ বলছেন, ‘ব্যতিক্রমী একটি মুভি দেখলাম, ভালো লাগল।’  আবার তরুণ দর্শকদের অনেকে বলছেন, ‘আমার এক্সকে সিনেমাটি দেখাতে চাই।’ পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও ‘দাগি’ নিয়ে অনুভূতির কথা আসতে শুরু করেছে। নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘দাগি’ নিয়ে তাঁর অনুভূতির কথা জানিয়েছেন। যেখানে ‘দাগি’কে নিখুঁত নির্মাণ ও ভালো গল্পের ভালো চলচ্চিত্র বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
সময় গড়ালে দর্শকমত আরও স্পষ্ট হবে। জানা যাবে, নিশো-তমা মির্জা জুটি নিজেদের ছাপিয়ে যেতে পারলেন কি না, আর ‘দাগি’ই বা কতটা আলো ছড়াতে পারল।
নিশো–তমা মির্জা ছাড়াও সিনেমাটিতে আরও অভিনয় করেছেন সুনেরাহ বিনতে কামাল, শহীদুজ্জামান সেলিম, গাজী রাকায়েত, মিলি বাশার, রাশেদ মামুন অপু প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতের ৬ প্রতিষ্ঠানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

ইরান থেকে তেল ও পেট্রোকেমিক্যাল পণ্য কেনার অভিযোগে ৬টি ভারতীয় কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, বিশ্বজুড়ে মোট ২০টি প্রতিষ্ঠানকে এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে, যাদের মধ্যে ভারতের ৬টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা এসব প্রতিষ্ঠান ইরানের পেট্রোলিয়াম পণ্য কেনাবেচা ও বিপণনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লেনদেনে ইচ্ছাকৃতভাবে অংশ নিয়েছে। এতে তারা যুক্তরাষ্ট্রের ইরানবিষয়ক নিষেধাজ্ঞা ভেঙেছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, যেসব ভারতীয় কোম্পানির ওপর মার্কিন সরকার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সেগুলো হচ্ছে, অ্যালকেমিক্যাল সলিউশনস, গ্লোবাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল কেমিক্যালস, জুপিটার ডাই কেম, রমনিকলাল এস গোসালিয়া অ্যান্ড কোম্পানি, পার্সিসটেন্ট পেট্রোকেম ও কাঞ্চন পলিমার্স।

আরো পড়ুন:

পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্নের ঘোষণা ট্রাম্পের

ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি ট্রাম্পের

 

নিষেধাজ্ঞার ফলে এসব প্রতিষ্ঠানের যুক্তরাষ্ট্রে থাকা সম্পদ জব্দ করা হবে এবং মার্কিন নাগরিক ও কোম্পানিগুলো তাদের সঙ্গে ব্যবসা করতে পারবে না। এদের অধীন যেসব সহযোগী প্রতিষ্ঠানের ৫০ শতাংশ বা তার বেশি মালিকানা রয়েছে, তারাও নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে।

ট্রাম্প প্রশাসন বলেছে, এই পদক্ষেপের লক্ষ্য ইরানের ‘ছায়া নৌবহর’ ও বিশ্বব্যাপী মধ্যস্বত্বভোগীদের দমন করা, যারা ইরানি তেল ও পেট্রোকেমিক্যাল পণ্য পরিবহনে সহায়তা করে থাকে।

যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, ইরান থেকে এই ধরনের পণ্য কেনার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলো তেহরানকে অতিরিক্ত তহবিল সংগ্রহের সুযোগ করে দিচ্ছে। আর এই অর্থ ব্যবহার করা হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে হিজবুল্লাহ, হুথি বিদ্রোহী, হামাসসহ অন্যান্য জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর সহায়তায় এবং যুদ্ধপরিস্থিতি উসকে দিতে। মার্কিন সরকারের মতে, ইরান সরকারের এই নীতিমালার কারণে গোটা মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতা ছড়িয়ে পড়ছে এবং এতে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ছে।

ট্রাম্প প্রশাসন ভারতীয় কোম্পানি ছাড়াও তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, চীন ও ইন্দোনেশিয়ার কিছু প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ