মাদারীপুরের শিবচরে এক ভ্যানচালককে গলা কেটে হত্যা করে যানটি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পালিয়ে যাওয়ার সময় ভ্যানে রক্ত দেখে স্থানীয় কয়েকজন সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করেছেন।

গতকাল বুধবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের তালতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তির নাম সাঈদ মোল্লা (৬৫)। তিনি শিবচর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের কেশবপুর এলাকার বাসিন্দা। অন্যদিকে আটক ব্যক্তির নাম সৈকত ঢালী (৩৫)। তিনি পাঁচ্চর ইউনিয়নের কেরানিবাট এলাকার বাসিন্দা।

পুলিশ ও স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত ১০টার দিকে তালতলা এলাকার রাস্তর পাশে সাঈদের গলাকাটা মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন কয়েকজন। এ সময় তাঁরা আশপাশের লোকজনকে খবর পাঠিয়ে ভ্যানটি খুঁজতে বের হন। একপর্যায়ে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে একটি ভ্যানে রক্ত দেখতে পেয়ে তাঁদের সন্দেহ হয়। স্থানীয় লোকজন ভ্যানসহ সৈকতকে আটক করেন। পরে তাঁরা সৈকতকে মরদেহর কাছে নিয়ে গিয়ে পিটুনি দেন।

খবর পেয়ে শিবচর থানার পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে সৈকতকে পুলিশি হেফাজতে নেয়। একই সঙ্গে মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়।

কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সৈয়দ ব্যাপারী বলেন, এ ধরনের ঘটনায় এলাকাবাসী উদ্বিগ্ন। এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চান তাঁরা।

লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রতন শেখ। তিনি বলেন, এ ঘটনায় জড়িত একজনকে আটক করা হয়েছে। ছিনতাই করা ভ্যান ও একটি ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্তে কাজ করছে পুলিশ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ বচর

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ