ভূমি ভাবতেই পারেননি তার জীবনে এমন সুযোগ কখনও আসবে
Published: 7th, April 2025 GMT
বলিউড অভিনেত্রী ভূমি পেড়নেকারের গল্পটা শুরু হয়েছিল ১০ বছর আগে ‘দম লাগা কে হাইশা’ সিনেমার মধ্য দিয়ে। ‘দম লাগা কে হাইশা’ ছবিতে তাঁর চরিত্র ছিল সাহসী, বাস্তব আর সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিবিম্ব। সেদিন কেউ ভাবেননি এই মেয়ে একদিন গ্ল্যামার আর ঝলকানিতে ভরা চরিত্রে দাপিয়ে বেড়াবেন। কিন্তু সময় বদলেছে, বদলেছেন ভূমিও।
তবে একটি জিনিস বদলায়নি– তাঁর আত্মবিশ্বাস। ২০২৫ সালে এসে ভূমি ওয়েব সিরিজ জগতে পা রাখছেন। তাঁকে দেখা যাবে ‘দ্য রয়্যালস’ নামের সিরিজে। এতে তাঁর বিপরীতে অভিনয় করেছেন ঈশান খট্টার। সম্প্রতি সিরিজটির ট্রেলার প্রকাশের পর এ জুটি নিয়ে ইতোমধ্যে দর্শকদের মধ্যে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। সিরিজে অভিনয় প্রসঙ্গে ভূমি বলেন, ‘আমি খুবই রোমাঞ্চিত। এ সিরিজ নিয়ে আমি চাঁদে ওঠার স্বপ্ন দেখছি না, শুধু চাই সবাই কাজটাকে ঠিকভাবে দেখুক। এখন পর্যন্ত যা কিছু প্রকাশ পেয়েছে, তাতে অনেক ভালোবাসা পেয়েছি। ঈশানের সঙ্গে কাজ করাও বেশ আনন্দের।’
এ সিরিজে ভূমিকে দেখা যাবে একজন গ্ল্যামারাস ও সফল নারী উদ্যোক্তার ভূমিকায়। এক দশক আগে যে অভিনেত্রী নিজের শরীর নিয়ে সামাজিক বার্তা দিতে সিনেমায় এসেছিলেন, আজ তিনিই ধরা দিচ্ছেন একদম ফ্যাশন-ফরোয়ার্ড, ঝকঝকে এক চরিত্রে। তবে এ পরিবর্তনে তিনি গর্বিত হলেও, আত্মবিশ্বাস হারাননি নিজের পুরোনো রূপে ফিরতে।
ভূমি বলেন, ‘আমি আজকের ভূমি হতে পেরেছি বলেই পুরোনো ভূমিও আজও বাঁচে আমার মধ্যে।’ তবে শুধু গ্ল্যামার নয়, ভূমির পথচলা বরাবরই এক সামাজিক দায়িত্বের সঙ্গী। তিনি বিশ্বাস করেন, তাঁর প্রথম ছবিই তাঁকে এ দিকচিহ্ন দিয়েছিল। ভারতীয় গণমাধ্যমের এক সাক্ষাৎকারে ভূমি বলেন, “যখন ‘দম লাগা কে হাইশা’ দিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলাম, তখন ভাবতেই পারিনি আমি ‘দ্য রয়্যালস’ সিরিজে একদিন এমন একটি চরিত্র করব।
এ সিরিজে আমি একেবারে নায়িকাসুলভ একটি চরিত্রে আছি। যদি আবার এমন কোনো চরিত্র করতে হয়, যেখানে আমায় নিজেকে বদলাতে হবে, আমি একপলকে রাজি হয়ে যাব। আমার সাফল্য এ পরিবর্তনে নয় বরং এ ব্যাপারে যে, ১০ বছর আগে যে মেয়ে ‘দম লাগা কে হাইশা’ করেছিল, সেই আজ ‘দ্য রয়্যালস’-এর এ চরিত্রও করছে।” ‘দ্য রয়্যালস’-এর মাধ্যমে ভূমি পেড়নেকার শুধু ওটিটিতে অভিষেক করছেন না, বরং প্রমাণ করছেন কোনো ফরম্যাটে নিজেকে আটকে না রেখে, নিজের বিশ্বাস ও স্বকীয়তাই একজন শিল্পীর আসল পরিচয়।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ফরিদপুর জেলা এনসিপি’র কমিটি গঠনের দায়িত্বে মহিলা আ’লীগ সভাপতি মেয়ে
ফরিদপুরে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর কমিটি গঠনের দায়িত্ব পেয়েছেন জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহ্মুদা বেগমের মেয়ে সৈয়দা নীলিমা দোলা।গত মঙ্গলবার এনসিপির সদস্যসচিব আক্তার হোসেন ও মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক চিঠি থেকে এ তথ্য জানা গেছে। ওই চিঠিতে ফরিদপুর অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক করা হয়েছে মো. আব্দিুর রহমানকে এবং সংগঠক করা হয়েছে মো. রাকিব হোসেনকে।
এছাড়া ফরিদপুর অঞ্চলের পাঁচটি জেলা, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, রাজবাড়ী জেলার দু’জন করে ব্যক্তিকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
ফরিদপুর জেলার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে যে দু’জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তাদের একজন হলেন সৈয়দা নীলিমা দোলা। তিনি জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহ্মুদা বেগমের মেয়ে এবং জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোহাম্মদ নাসিরের ভাগনি। দোলার বাবা সৈয়দ গোলাম দস্তগীর পেশায় ব্যবসায়ী।
সৈয়দা নীলিমা ২০১৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংগীত বিভাগে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি কিছুদিন একটি মোবাইল ফোন কোম্পানিতে চাকরি করেন। বর্তমানে ‘সিনে কার্টেল’ নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারী।
এ বিষয়ে সৈয়দা নীলিমা দোলা বলেন, ‘আমার পরিবারের সদস্যদের আওয়ামী রাজনীতি করা সংক্রান্ত কিছু পোস্ট আপনাদের সামনে আসতে পারে। আমি নিজে এর একটা ব্যাখ্যা রাজপথের সহযোদ্ধাদের দিয়ে রাখতে চাই। আমি ১০ বছর ধরে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন করছি। নো মেট্রো অন ডিইউ মুভমেন্ট, রামপাল বিরোধী আন্দোলন, ডিএসএ বাতিলের আন্দোলন, সুফিয়া কামাল হলকে ছাত্রলীগ মুক্ত করাসহ অন্যান্য সকল আন্দোলনে আমি পরিচিত মুখ। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমার লেখালেখিও পুরনো। ২০১২ সালে পরিবার ছাড়ার পর রাজপথই আমার আসল পরিবার। জুলাইয়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া অন্যতম মামলা তাহির জামান প্রিয় হত্যা মামলার একজন প্রত্যক্ষদর্শী আমি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরাসরি ছাত্রলীগ করে অনেকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন। আমি কখনও ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না, তাই আমার নাগরিক কমিটির সদস্য হতে বাধা কোথায়? এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা জেনে-বুঝে এবং আমি ‘লিটমাস’ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরই আমাকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য করা হয়েছে।’
আওয়ামী লীগ নেত্রীর মেয়ে দায়িত্ব পেয়েছেন জেলার এনসিপি কমিটি গঠনে-এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফরিদপুর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব সোহেল রানা বলেন, ‘তার (সৈয়দা নীলিমা) পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড আওয়ামী লীগ। আমরা দেখেছি, গত জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে তার মামা গোলাম নাসির কিভাবে আমাদের ওপর নির্বিচার গুলি ছুড়েছিল। তার মায়ের কর্মকাণ্ডও আমাদের অজানা নয়।’
সৈয়দা নীলিমা দোলার সঙ্গে আমাদের পরিচয় পর্যন্ত নেই মন্তব্য করে সোহেল রানা বলেন, ‘আসলে দায়িত্ব দেওয়ার আগে সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করে নেওয়া হলে ভাল হতো। যাচাই-বাছাই করা হলে এ রকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না।’