যত দিন পর্যন্ত ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা না আসে, ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি না দেওয়া হয়, ফিলিস্তিনের মানুষেরা গণহত্যা থেকে মুক্তি না পায়, তত দিন পর্যন্ত ইসরায়েলের সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো বন্ধুত্ব হতে পারে না বলেও মন্তব্য করেন এনসিপির এই শীর্ষ নেতা।
স্বার্থের রাজনীতি বন্ধ করে ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়াতে বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানান এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিন। সমাবেশে তিনি আরও বলেন, ইসরায়েলের গণহত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ অব্যাহত থাকবে।
এনসিপির আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক তাজনূভা জাবীন বলেন, গাজাবাসীর জন্য পুরো বিশ্ব আজকে থমকে গেছে। নৃশংসতায় একের পর এক ধাপ অতিক্রম করছে ইসরায়েলি বাহিনী, যা ক্রমশ জঘন্য থেকে জঘন্যতর হচ্ছে।
বিতর্কিত ওয়াক্ফ বিলইসরায়েলের নৃশংসতার পাশাপাশি ভারতের সংসদে পাস হওয়া বিতর্কিত ওয়াক্ফ বিলের কঠোর সমালোচনা করে সমাবেশে বক্তব্য দেন এনসিপির নেতারা।
এ প্রসঙ্গে এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘ভারত সরকার যে ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের পথ উন্মুক্ত করেছে, এনসিপির পক্ষ থেকে আমরা এর নিন্দা জানাই। আমরা মনে করি, এটা নিতান্তই বৈষম্যমূলক এবং ভারতের মুসলমানদের জন্য নিপীড়নের আরেকটি পথকে উন্মোচন করা হয়েছে। ভারতের মুসলমান ও গণতন্ত্রকামী শক্তিগুলো এই বিলের বিরুদ্ধে ভারতের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ এবং প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছেন। সেসব কর্মসূচির প্রতি আমরা সংহতি জানাই।’
ওয়াক্ফ সংশোধনী বিল থেকে সরে এসে ভারত সরকার আগের আইনে ফিরে যাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন এনসিপির এই নেতা।
সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব লুৎফর রহমান, উত্তরাঞ্চলের সংগঠক রফিকুল ইসলাম আইনী প্রমুখ বক্তব্য দেন। সমাবেশের পর শাহবাগ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন এনসিপির নেতা–কর্মীরা। মিছিলটি বাংলামোটরে এনসিপির কার্যালয় পর্যন্ত যায়। মিছিলে নেতা–কর্মীরা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে এবং ফিলিস্তিনের মানুষের পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দেন। এর মধ্যে ছিল ‘ফ্রম দ্য রিভার টু দ্য সি, প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি’, ‘ওয়ান টু থ্রি ফোর, জেনোসাইড নো মোর’।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন এনস প র ইসর য় ল র
এছাড়াও পড়ুন:
২ মে ঢাকায় এনসিপির বিক্ষোভ, প্রচারপত্রে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ৭ অপরাধ
‘গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের বিচার ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে’ আগামী ২ মে (শুক্রবার) রাজধানী ঢাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ করবে নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। রাজধানীর গুলিস্তানে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ ফটকে এনসিপির ঢাকা মহানগর শাখার উদ্যোগে এই সমাবেশ হবে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের উদ্যোগে গঠিত দল এনসিপি।
সমাবেশ উপলক্ষে তৈরি করা প্রচারপত্রে আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের শাসনামলের সাতটি অপরাধের কথা উল্লেখ করেছে এনসিপি। এগুলো হলো ২০০৯ সালে বিডিআর বিদ্রোহ দমনের নামে ৫৭ সেনা কর্মকর্তার হত্যাকাণ্ড; গুম, খুন ও ক্রসফায়ারের মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহরণ; ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে তিনটি অবৈধ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার হরণ; ২০১৩ সালে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে চালানো হত্যাযজ্ঞ; লাখ লাখ কোটি টাকার দুর্নীতি, লুটপাট ও পাচার; ২০২১ সালে নরেন্দ্র মোদিবিরোধী আন্দোলনে চালানো হত্যাকাণ্ড এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় চালানো নজিরবিহীন গণহত্যা।
এরপর চারটি দাবিও উল্লেখ করা হয়েছে প্রচারপত্রে। এগুলো হলো প্রতিটি অপরাধের জন্য আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ট্রাইব্যুনাল বা কমিশন গঠন করে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিচারের ব্যবস্থা; আগামী নির্বাচনের আগেই আওয়ামী লীগ প্রশ্নের মীমাংসা তথা আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল; বিচার চলাকালে আওয়ামী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ রাখা এবং ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে জড়িত ব্যক্তিদের বিচার ও তাঁদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা।
দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব আজ মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, সমাবেশে প্রায় ২০ হাজার মানুষের জমায়েত হতে পারে। এই সমাবেশে এনসিপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
দলগতভাবে আওয়ামী লীগের বিচার, দলটির নিবন্ধন বাতিল ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে গত ২১ এপ্রিল থেকে ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানায় বিক্ষোভ, সমাবেশ ও মশালমিছিল করছে এনসিপি। এর ধারাবাহিকতায় এবার কিছুটা বড় পরিসরে ঢাকা মহানগর শাখার ব্যানারে সমাবেশ হতে যাচ্ছে।
এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব জয়নাল আবেদীন শিশির। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা মহানগরের থানা পর্যায়ে কিছুদিন ধরে এনসিপির যে কর্মসূচিগুলো হচ্ছে, এগুলোরই চূড়ান্ত সমাবেশটা হবে আগামী ২ মে।