ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধের দাবিতে বুয়েট শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
Published: 7th, April 2025 GMT
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের চলমান গণহত্যা বন্ধ এবং স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন।
বিক্ষোভকালে শিক্ষার্থীরা ফিলিস্তিনের পতাকা প্রদর্শন করেন। এ সময় তাঁদের হাতে গণহত্যা বন্ধ, স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিসহ বিভিন্ন প্ল্যাকার্ডও দেখা যায়।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে এতে যোগ দেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সহ-উপাচার্য (প্রো-ভিসি) অধ্যাপক আবদুল হাসিব চৌধুরী। তিনি বলেন, এই ফিলিস্তিনিদের ওপর, হত্যা-নির্যাতন, গণহত্যা সেই ১৯৪৮ সাল থেকে চলছে। তারও আগে ঔপনিবেশিক কাল থেকে উচ্ছেদ চলছে। ফিলিস্তিনে উপনিবেশ স্থাপন করেছিল ব্রিটিশ ও ফ্রান্সের ঔপনিবেশিক শক্তি।
অধ্যাপক আবদুল হাসিব চৌধুরী বলেন, ‘১৯৪৩ সালে তৎকালীন বাংলায় কৃত্রিমভাবে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করা হয়েছিল, ফসলের উৎপাদন–ঘাটতি থেকে সে দুর্ভিক্ষ হয়নি। তাতে ৩০-৪০ লাখ মানুষ মারা যায়, এটা কি গণহত্যা নয়? এই গণহত্যা ঔপনিবেশিক শক্তি বরাবরই চালিয়ে আসছে, এক ঐতিহাসিক অবিচারের মধ্যে আমরা আছি আজ।’
গাজার বর্তমান ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র দাঁড়াবে বলে আশা প্রকাশ করেন বুয়েটের এই সহ–উপাচার্য। তিনি বলেন, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে চলমান এই লড়াই মেধা ও মননের লড়াই। তাই তিনি বুয়েটের শিক্ষার্থীদের সেভাবে নিজেদের প্রস্তুত করার আহ্বান জানান।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গণহত য
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী
২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সুদান এক ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের মধ্যে পড়ে। ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নিতে দেশটির সামরিক বাহিনী এবং শক্তিশালী আধা সামরিক গোষ্ঠী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে শুরু হওয়া তীব্র লড়াই থেকে এই গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধে পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয় এবং সেখানে গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার অভিযোগও ওঠে।
সম্প্রতি আরএসএফ এল-ফাশের শহরটি দখল করার পর এর বাসিন্দাদের নিয়ে বড় ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত সারা দেশে দেড় লাখের বেশি মানুষ মারা গেছেন এবং প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। জাতিসংঘ এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সংকট বলে অভিহিত করেছে।
পাল্টাপাল্টি অভ্যুত্থান ও সংঘাতের শুরু১৯৮৯ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ২০১৯ সালে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই দফায় দফায় যে উত্তেজনা চলছিল, তার সর্বশেষ পরিস্থিতি হচ্ছে বর্তমান গৃহযুদ্ধ।
বশিরের প্রায় তিন দশকের শাসনের অবসানের দাবিতে বিশাল জনবিক্ষোভ হয়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয় সেনাবাহিনী। কিন্তু দেশটির মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যায়। যার পরিপ্রেক্ষিতে একটি যৌথ সামরিক-বেসামরিক সরকার গঠিত হয়। কিন্তু ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে আরও একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারটিকে উৎখাত করা হয়। এই অভ্যুত্থানের কেন্দ্রে ছিলেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ও দেশটির কার্যত প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তাঁর ডেপুটি ও আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো।
এই দুই জেনারেল দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ ও বেসামরিক শাসনে ফিরে যাওয়া নিয়ে প্রস্তাবিত পদক্ষেপে একমত হতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে মূল বিরোধের বিষয় ছিল প্রায় এক লাখ সদস্যের আরএসএফ-কে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা এবং নতুন এই যৌথ বাহিনীর নেতৃত্ব নিয়ে। ধারণা করা হয়, দুজন জেনারেলই তাঁদের ক্ষমতা, সম্পদ ও প্রভাব ধরে রাখতে চেয়েছিলেন।
আরএসএফ সদস্যদের দেশের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হলে সেনাবাহিনী বিষয়টিকে নিজেদের জন্য হুমকি হিসেবে দেখে। এ নিয়ে ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। সেই লড়াই দ্রুত তীব্র আকার ধারণ করে এবং আরএসএফ খার্তুমের বেশির ভাগ অংশ দখল করে নেয়। যদিও প্রায় দুই বছর পর সেনাবাহিনী খার্তুমের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়।
জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান (বামে) এবং আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো (ডানে)