ফিলিস্তিনের গাজা ও রাফায় গণহত্যার প্রতিবাদ এবং ইসরায়েলকে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করানোর দাবিতে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা। বিক্ষোভ মিছিল–পূর্ব সমাবেশে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের আমির নুরুল ইসলাম বলেন, মানবতার ফেরিওয়ালা জাতিসংঘ নীরব ভূমিকা পালন করছে।

সোমবার বিকেলে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম উত্তর গেট থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে শান্তিনগরে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলের আগে সমাবেশে জামায়াত নেতা নুরুল ইসলাম বলেন, মানবতাবিরোধী, গণহত্যাকারী নেতানিয়াহুর ইসরায়েল রাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যের বিষফোড়া হিসেবে বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ ফিলিস্তিন ও বাইতুল আকসাকে নিয়ে একের পর এক চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র করে সন্ত্রাস সৃষ্টি করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, আজকে শুধু পাখির মতো গুলি করে মানুষ হত্যা নয়, আকাশ থেকে শক্তিশালী বোমা নিক্ষেপ করে মানুষগুলোকে ছিন্নভিন্ন করে দেওয়া হচ্ছে। নেতানিয়াহুর নির্দেশে ফিলিস্তিনের অগণিত বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করা সত্ত্বেও জাতিসংঘ চুপ করে বসে রয়েছে। অনতিবিলম্বে জাতিসংঘ কর্তৃক ইসরায়েলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে।

ফিলিস্তিনের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে শুধু পতাকা উত্তোলন নয়, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বাংলাদেশকে কঠোর জবাব দিতে হবে উল্লেখ করে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা শান্তিতে নোবেল বিজয়ী। তিনি বিশ্বের কাছে শ্রদ্ধা ও আস্থার এক মহান ব্যক্তি। তাই বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টাকে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ইসরায়েলি হামলা বন্ধে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, শান্তি প্রতিষ্ঠায় ইসরায়েল যুদ্ধ বন্ধ না করলে পৃথিবীর মানচিত্র থেকে ইসরায়েলের নাম মুছে দিতে হবে। এ জন্য ২০০ কোটি মুসলিমকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

সমাবেশে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য খলিলুর রহমান মাদানী বলেন, ইহুদি গোষ্ঠী আশ্রয়ের জন্য আরব ভূখণ্ডে এসেছে। মুসলিমরা দয়া দেখিয়ে তাদের আশ্রয় দেওয়ার পর তারা ইসরায়েল রাষ্ট্র গঠন করে। ফিলিস্তিন দখল করে নেওয়ার উদ্দেশে যুক্তরাষ্ট্রের মদদে ফিলিস্তিনে বর্বরোচিত নৃশংস গণহত্যা চালিয়েছে ইসরায়েল। তিনি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে মুসলিম রাষ্ট্রপ্রধানদের প্রতি আহ্বান জানান।

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জামায়াত ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট হেলাল উদ্দিন, সহকারী সেক্রেটারি মুহাম্মদ দেলাওয়ার হোসেন, মোহাম্মদ কামাল হোসেন, অধ্যাপক আবদুল মান্নান, শামছুর রহমান।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন র ল ইসল ম ইসর য় ল র

এছাড়াও পড়ুন:

হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত

ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স। 

গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’

পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।

হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।

আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।

সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’ 

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’

তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।

রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজায় ইসরায়েলি অভিযানের ‘কঠোরতম ভাষায়’ নিন্দা জানিয়েছে সৌদি আরব
  • যারা জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলকে নিষিদ্ধ চায়, তারা আদালতে অভিযোগ দিতে পারে: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার প্রমাণ পেয়েছে জাতিসংঘের তদন্ত কমিশন
  • হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
  • ‘গাজায় গণহত্যা চলছে, আমি সেই গণহত্যার নিন্দা করছি’