সীমান্তে বিএসএফের মারধরে বাংলাদেশি যুবক নিহতের অভিযোগ
Published: 9th, April 2025 GMT
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) বিরুদ্ধে বাংলাদেশি এক যুবককে ধরে নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতনে আহত যুবক ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে গতকাল মঙ্গলবার রাতে মারা যান। সন্ধ্যায় উপজেলার সেজামোড়া সীমান্তে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত যুবক হলেন- সেজামোড়া গ্রামের মৃত ফজলুর রহমানের ছেলে মুরাদ মিয়া (৩৬)।
নিহত মুরাদের স্ত্রী রত্না বেগম অভিযোগ করে বলেন, সীমান্ত ঘেঁষা তাদের জমিতে মঙ্গলবার বিকেলে সবজি দেখতে যান মুরাদ। কিন্তু ফিরে না আসায় তিনি বিভিন্ন জায়গায় স্বামীর খোঁজ করতে থাকেন। এ সময় এক ব্যক্তি মোবাইল ফোনে কল করে জানান যে, বিএসএফ তার স্বামীকে ধরে নিয়ে গেছে। মাগরিবের নামাজের পর একটি বাচ্চা এসে তাকে জানায় যে, বিএসএফ তাকে মারধর করে ফেলে রেখে গেছে। আমরা তাকে জিজ্ঞেস করলে সে জানায় বিএসএফ তাকে নিয়ে মারধর করেছে।
তিনি আরও জানান, পরে মুমূর্ষু অবস্থায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে আনার পথে মুরাদ মারা যান।
নিহতের বড় বোন আমেনা খাতুন জানান, সন্ধ্যায় বিজিবির কাছ থেকে খবর পেয়ে তার ভাইকে গুরুতর অবস্থায় ধানক্ষেত থেকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে মুরাদ মারা যায়। তিনি জানান, সীমান্ত পিলার থেকে তাদের বাড়ি ১৫০ গজ দূরে। তার ভাই সীমান্তে জমি চাষ করে। এ ছাড়াও বাজারে তাদের ব্যবসা রয়েছে। তার ভাইকে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। এ সময় ভাই হত্যার বিচার দাবি করেন আমেনা খাতুন।
২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সফিউল্লাহ আরাফাত জানান, জরুরি বিভাগে আনার পর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।পরে ঘটনাটি পুলিশকে জানানো হয়। পুলিশ মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে রাখার কথা জানায়।
বিজিবি-২৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফারাহ মোহাম্মদ ইমতিয়াজ বলেন, বিএসএফ জিরো লাইন অতিক্রম করার কথা নয় বা করবে না। মুরাদ নামে এক ব্যক্তি অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে আবার ফিরে এসেছিলেন। কিন্তু কি কারণে তিনি সেখানে গিয়েছিলেন বা কে তাকে ধরে নিয়ে গেছে এবং তাকে মেরেছে তা এখনো জানা যায়নি। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব র হ মণব ড় য় ব এসএফ ন হত ব র হ মণব ড় য় ব এসএফ
এছাড়াও পড়ুন:
জঙ্গি সন্দেহে কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি যুবক
জঙ্গি সন্দেহে কলকাতা পুলিশের বিশেষ টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে এক বাংলাদেশি নাগরিক। মুফতি আবদুল্লাহ আল মাসুদ নামে ওই বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয় পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার গয়েশপুর পুলিশ ফাঁড়ি এলাকা থেকে। এরপর তাকে ফাঁড়িতে নিয়ে এসে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ চলে। বৃহস্পতিবার এই ঘটনাটি ঘটেছে।
ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও ভারত থেকে নিজের দেশে ফিরে যাননি মাসুদ। তিনি অবৈধভাবে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কাটাগঞ্জ এলাকায় বসবাস করতেন। সম্প্রতি তার বেশ কিছু কর্মকান্ডে সন্দেহ প্রকাশ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এর পরই মাসুদকে ইসলামী উগ্রপন্থী বলে দাবি করে পুলিশে অভিযোগ করা হয়। যেহেতু তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাই পুলিশ তাকে একজন অবৈধ অভিবাসী হিসেবে বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারতীয় আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
বিষয়টি সামনে আসার পরই যথেষ্ট উত্তেজনা ছড়িয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে কলকাতা পুলিশের পক্ষে কিছুই জানানো হয়নি।
অন্যদিকে, গত ২৪ ঘন্টায় ভারত বাংলাদেশের দিনাজপুর সীমান্ত ও ভোমরা ঘোজাডাঙা সীমান্তে এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন আরো ১১ জন বাংলাদেশি নাগরিক।
পুলিশ ও বিএসএফের যৌথ অভিযানে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় এক বাংলাদেশি নাগরিককে। আটককৃতে ওই ব্যক্তির নাম পঞ্চানন পাল। তিনি বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গা থানার বাসিন্দা। ভারতে তিনি পরিচয় বদল করে রূপায়ণ পাল নামে বসবাস করছিলেন বলে অভিযোগ। তার কাছ থেকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট ছাড়াও ভারতের আধার কার্ড, ভোটার কার্ড ও এমনকি ভারতীয় পাসপোর্ট পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে।
একইদিনে ভারত থেকে অবৈধ পথে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময়ে ঘোজাডাঙ্গা ভোমরা সীমান্তের কাছে সরুপনগর এলাকার তারালি সীমান্ত থেকে বিএসএফের ১৪৩নম্বর ব্যাটালিয়নের হাতে আটক হয়েছেন আরো বাংলাদেশি নাগরিক।
সীমান্তরক্ষী বাহিনী জানিয়েছে আটকের পর তাদের স্বরূপনগর থানার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে রয়েছে তিন শিশু, তিনজন পুরুষ ও চারজন নারী। এর সবাই বাংলাদেশের সাতক্ষীরা এবং খুলনার বাগেরহাটের বাসিন্দা।
সুচরিতা/শাহেদ