ধারাভাষ্যকার বাকরুদ্ধ। ঠিকমতো গুছিয়ে কথা বলতে পারছিলেন না। স্রেফ বললেন, ‘‘এর আগে আমি কখনও এমন কিছু দেখিনি। ব্যাটসম্যান কেন ব্যাট ক্রিজের ভেতরে নিচ্ছেন না।’’
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে মিরপুর শের-ই-বাংলায় দুটি স্টাম্পিংকে ঘিরে প্রবল আলোচনা, প্রশ্ন ও সন্দেহ তৈরি হয়েছে। গুলশান ক্রিকেট ক্লাব ও শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের ম্যাচকে ঘিরে তেমন উত্তেজনা ছড়ানোর কথা না। এই ম্যাচটি গুলশানের জন্য ছিল গুরুত্বপূর্ণ। শাইনপুকুরের জন্য তেমন বড় কিছু নয়।
সুপার লিগ নিশ্চিত করতে গুলশানের শেষ দুই রাউন্ডে একটি জয় চাই। ১৭৮ রানের পুঁজি নিয়ে শাইনপুকুরকে ৫ রানে হারিয়ে জয় তুলে নিয়ে ১৩ পয়েন্টে সুপার লিগ নিশ্চিত হয়ে গেছে। কিন্তু শাইনপুকুরের দুই ব্যাটসম্যানের চরম হতশ্রী আউটে উঠেছে প্রশ্ন।
আরো পড়ুন:
পারিশ্রমিক না পেলে ম্যাচ বয়কটের হুমকি পারটেক্সের
আবাহনীর মুখোমুখির আগে মোহামেডানের আত্মবিশ্বাসী জয়
ইনিংসের ৩৬তম ওভারে নিহাদ উজ জামানের বলে ক্রিজের বাইরে বেরিয়ে আসেন রহিম আহমেদ। বল ছিল অফস্টাম্পের বাইরে। ব্যাটসম্যান ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে আসেন মাঝ বরাবর। টার্ন মিস করলেও বল খেলার কোনো চেষ্টা ছিল না তার। বরং ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন। পরবর্তীতে পেছনে না ফিরে ড্রেসিংরুমের পথে হাঁটা দেন।
ইনিংসের শেষ দিকে ম্যাচে রোমাঞ্চ ছড়ায়। শেষ ওভারে জয়ের জন্য ৭ রান প্রয়োজন ছিল শাইনপুকুরের। হাতে কেবল ১ উইকেট। নাঈম ইসলামের করা প্রথম বলে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে যান ব্যাটসম্যান মিনহাজুল আবেদীন সাব্বির। বল তখন ওয়াইড হয়েছে। শট খেলার কোনো চেষ্টাই করেননি মিনহাজুল। হাঁটু গেড়ে মাটিতে বসে পড়েন। পরবর্তীতে ক্রিজে ব্যাট রাখার যথেষ্ট সময় পেলেও করেননি।
উইকেটকিপার ইমন প্রথম দফায় চেষ্টা করেছিলেন স্ট্যাম্প ভাঙার। কিন্তু পারেননি। ওই সময়ে ব্যাট ক্রিজের বাইরে রেখে পুরোটা সময় তাকিয়ে ছিলেন ব্যাটসম্যান মিনহাজুল। পরবর্তীতে স্ট্যাম্প ভাঙলে আম্পায়ার আউট দেন। ইচ্ছাকৃতভাবে ব্যাটসম্যানের এমন আউটে রীতিমত তোলপাড় ক্রিকেটাঙ্গন।
ম্যাচ শেষে এই দুই আউট নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কেউই কথা বলেননি। তবে ম্যাচ রেফারি ও আম্পায়ারের রিপোর্টের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে পারে সিসিডিএম।
বিতর্ক ছড়ানো এই ম্যাচে গুলশানোর জয়ের নায়ক আজিজুল হাকিম তামিম। ব্যাটিংয়ে মাত্র ১৬ রান করলেও বোলিংয়ে ২০ রানে ৩ উইকেট নেন। ৩ উইকেট পেয়েছেন নিহাদুজ্জামানও। এছাড়া ব্যাটিংয়ে তাদের হয়ে সর্বোচ্চ ৪০ রান করেন শাহরিয়ার সাকিব।
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব য টসম য ন শ ইনপ ক র পরবর ত উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের পরবর্তী শুনানি বুধবার
রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের (রিভিউ) ওপর পরবর্তী শুনানির জন্য আগামীকাল বুধবার দিন রেখেছেন আপিল বিভাগ। আজ মঙ্গলবার শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের বেঞ্চ পরবর্তী ওই দিন ধার্য করেন।
এর আগে গত ১৮ মে শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ শুনানির জন্য ১ জুলাই দিন ধার্য করেছিলেন। ধার্য তারিখে বিষয়টি শুনানির জন্য রিভিউ আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবীর সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ ১৫ জুলাই পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন। আজ বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকার ৭ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।
ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স সংশোধন করে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। পরে ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। রায়ে রাষ্ট্রের সাংবিধানিক পদধারীদের পদক্রম ওপরের দিকে রাখা ও অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়। পাশাপাশি জেলা জজদের পদক্রম আট ধাপ উন্নীত করে সচিবদের সমান করা হয়।
আপিল বিভাগের রায়ের পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতির পদক্রম এক ধাপ উন্নীত করে জাতীয় সংসদের স্পিকারের সমান এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের (স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদক ও মহান স্বাধীনতাসংগ্রামে অংশগ্রহণ করে যে মুক্তিযোদ্ধারা বীর উত্তম খেতাব পেয়েছেন) পদক্রমে যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত বলে উল্লেখ করা হয়।
ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) তৎকালীন চেয়ারম্যান ২০১৭ সালে পৃথক আবেদন করেন। রিভিউ আবেদনে রাষ্ট্রের ৯০ জন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল পক্ষভুক্ত হন। পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের ওপর গত ২৭ এপ্রিল শুনানি শুরু হয়।
আজ আদালতে রিভিউ আবেদনকারী মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন শুনানি করেন। রিট আবেদনকারী পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম শুনানিতে অংশ নেন।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী, ১৯৮৬ সালে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরি করে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর একই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর তা জারি করা হয়। পরে বিভিন্ন সময়ে তা সংশোধন করা হয়।
সর্বশেষ সংশোধন করা হয় ২০০৩ সালের ডিসেম্বরে। সংশোধিত এই ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরির ক্ষেত্রে সাংবিধানিক পদ, সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত ও সংজ্ঞায়িত পদগুলো প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিচের ক্রমিকে রাখা হয়েছে—এমন উল্লেখ করে এর বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের তৎকালীন মহাসচিব মো. আতাউর রহমান ২০০৬ সালে রিট করেন।
রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট আট দফা নির্দেশনাসহ ১৯৮৬ সালের ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স (সংশোধিত) অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ২০১১ সালে আপিল করে। এ আপিলের ওপর শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ২০১৭ সালে করা আবেদনের ওপর শুনানি চলছে।