স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে ফ্রান্স
Published: 10th, April 2025 GMT
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে তার দেশ ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে। স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার ফ্রান্স ফাইভ টেলিভিশনের সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপে এ কথা বলেন মাখোঁ।
আজ বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ম্যাক্রোঁ বলেন, “ফ্রান্সের লক্ষ্য জুন মাসে সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের কনফারেন্সে নেতৃত্ব দেওয়া, যেখানে বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ফিলিস্তিনকে একটি রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে।”
আরো পড়ুন:
টাইব্রেকার জিতে সেমিফাইনালে ফ্রান্স
মদ্রিচের সামনে মুখ থুবড়ে পড়লেন এমবাপে
ফরাসি প্রেসিডেন্ট আরো বলেন, “আমি কাউকে খুশি করার জন্য এটি করছি না। আমি এটি করব, কারণ আমি মনে করি এক সময় এটি সঠিক হবে এবং আমি একটি যৌথ গতিশীলতাতে যুক্ত হতে চাই, যেটিতে যারা ফিলিস্তিনকে সমর্থন করেন, তারা এর বদলে ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেবেন। যেটি তাদের অনেকেই করেন না।”
জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য দেশের মধ্যে প্রায় ১৫০টি দেশ ফিলিস্তিনকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। তবে বেশিরভাগ পশ্চিমা শক্তি এখনও ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়নি, যার মধ্যে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্যে, ফ্রান্স, জার্মানি এবং জাপান।
অন্যদিকে, যেসব দেশ ইসরায়েলকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় না, তাদের মধ্যে রয়েছে সৌদি আরব, ইরান, ইরাক, সিরিয়া এবং ইয়েমেন।
ফ্রান্স দীর্ঘদিন ধরেই ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন আলাদা দুটি রাষ্ট্র গঠনের পক্ষে মতামত দিয়ে আসছে। তবে তারা বিষয়টিতে এতদিন আনুষ্ঠানিকভাবেই সমর্থন জানিয়ে আসছিল। শেষ পর্যন্ত ফ্রান্স যদি ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়, তাহলে এটি তাদের পররাষ্ট্রনীতির বড় পরিবর্তন হবে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
করোনা বাড়ায় এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে বিকল্প চিন্তা
উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষা আগামী ২৬ জুন শুরু হচ্ছে। ১১টি শিক্ষা বোর্ড এরই মধ্যে প্রস্তুতি শেষ করেছে। প্রশ্ন ও উত্তরপত্র উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছেছে। কিন্তু মহামারি করোনা সংক্রমণ বাড়ায় পরীক্ষা শুরুর সময় নিয়ে বিকল্প চিন্তা করছে শিক্ষা বোর্ড। এর সঙ্গে ডেঙ্গু পরিস্থিতিকেও আমলে নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ভাবছে সংশ্লিষ্টরা।
গত কিছুদিন ধরে আবারো করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) তথ্যমতে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত সারা দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৬০ জন। তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে তিন জনের। অন্যদিকে একই সময়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, সারা দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ৫ হাজার ৫৭০; মারা গেছেন ২৮ জন।
শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক সর্বশেষ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩৯ জনকে পরীক্ষা করে ৭ জনের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে। এ নিয়ে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৫১ হাজার ৮০৭ জন।
গত কয়েক দিনে ডেঙ্গুর পাশাপাশি করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সূত্র জানায়, পরীক্ষার যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। করোনা পরিস্থিতি এমন থাকলেও পরীক্ষা যথানিয়মে ও নির্ধারিত সময়ে শুরু করা হবে। সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ জন্য অনানুষ্ঠানিকভাবে একাধিক বিকল্পও ভেবে রাখা হচ্ছে।
২৬ জুন সারা দেশের ৯ হাজার ৩১৪ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ জন উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমান পরীক্ষায় বসতে যাচ্ছে। পরীক্ষা হবে ২ হাজার ৭৯৭ কেন্দ্রে। তত্ত্বীয় পরীক্ষা শেষ হবে ১০ আগস্ট। এরপর ব্যবহারিক পরীক্ষা ১১ থেকে ২১ আগস্ট পর্যন্ত চলবে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এক সভায় দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকরা জানিয়েছেন, করোনা ও ডেঙ্গু সংক্রমণ নিয়ে শঙ্কা থাকলেও তারা নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষা শুরু করবেন। উচ্চ মাধ্যমিকে বিষয় বেশি থাকায় পরীক্ষা নিতে সময় লাগে। নির্ধারিত সূচির বাইরে গিয়ে পরীক্ষার ক্ষেত্রে আপাতত কোনো বিকল্প হাতে নেই। এ জন্য পরীক্ষা শুরু করার পর অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তবে এখনই অটোপাস সংক্রান্ত কিছু কোনোভাবেই ভাবছে না পরীক্ষাসংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, অভিভাবকরাও অটোপাসের বিষয়ে আগ্রহী নয়। আর, করোনা সংক্রমণ ক্রমবর্ধমান হলেও পরীক্ষা সম্পন্ন করার বিষয়েই ভাবছেন সংশ্লিষ্টরা।
২০২০ সালের মার্চে দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর ১৮ মার্চ থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি দফায় দফায় বাড়ানো হয়। করোনার কারণে স্কুল-কলেজ খুলতে না পারায় ২০২০ সালে জেএসসি, এসএসসি এবং এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অটোপাস দেওয়া হয়। জেএসসির ২৫ শতাংশ ও এসএসসির ৭৫ শতাংশ ফলের ভিত্তিতে এইচএসসি অটোপাসের ফল প্রকাশ করা হয়। তবে এ ফল প্রকাশে মান বণ্টন, আইন সংশোধনসহ অনেক সিদ্ধান্ত নিতে হয় সরকারকে।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটির সভাপতি এবং ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার বলেন, “এটি সত্যি, ডেঙ্গু এবং করোনা নিয়ে আমরা দুশ্চিন্তায় রয়েছি। অভিভাবকরাও আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে নানা শঙ্কার কথা জানাচ্ছেন। তবে আমাদের হাতে পরীক্ষা শুরু করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।”
অভিভাবক ঐক্য ফোরামের সভাপতি জিয়াউল কবির দুলু বলেন, “আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু ও করোনার ঝুঁকি মোকাবিলার জন্য পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেই। এই অবস্থায় রবিবার থেকে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় খুলছে। তাই শঙ্কা বাড়ছে। তবে আমরা আশা করি, সরকার সকল বিষয় আমলে নিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে।”
ঢাকা/হাসান/ইভা