ফ্যাসিস্টরা নানাভাবে জুলাই অভ্যুত্থানকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেছেন, দেশের মানুষ যখন বিরাট এক অভ্যুত্থান করে নতুন বাংলাদেশের যাত্রা দেখছেন, তখন অনেকেই যেন ওই শেখ হাসিনার অপতৎপরতার মতো নানাভাবে আবার দখলদারি করতে এবং জনগণের কণ্ঠ ও স্বাধীনতা রুখে দিতে চান।

রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে আজ শুক্রবার বিকেলে এক বিক্ষোভ সমাবেশে জোনায়েদ সাকি এ কথা বলেন। গণসংহতি আন্দোলনের উদ্যোগে ‘গাজা ও রাফার মজলুম ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের নৃশংস গণহত্যা’র প্রতিবাদে ওই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘বাংলাদেশের মজলুমরা আজ যদি ঐক্যবদ্ধ হই, আমরা যেমন অভ্যুত্থান করে হাসিনাকে পালাতে বাধ্য করেছি.

..। বাংলাদেশে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত তৈরি করে এ দেশে গণতন্ত্র কায়েম করতে পারব এবং সকলের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে পারব।’ তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ চায় তারা নিজের মর্যাদা নিয়ে বাঁচবে, নিজের চিন্তা ও মত প্রকাশ করতে পারবে, এ জন্য ভয় পেতে হবে না। ছাত্ররা হলে থেকে নিজের চিন্তা প্রকাশ করতে পারবে, আবরার ফাহাদের মতো শহীদ হতে হবে না। তিনি আরও বলেন, কেউ যদি এটা বন্ধ করতে চায়, তারা হাসিনারই পথ অবলম্বন করছে। শেখ হাসিনার নতুন রূপে হাজির হওয়া বাংলাদেশের মানুষ বরদাশত করবে না।

জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদ হচ্ছে সেটাই, যখন আপনার নিজের মত অন্যর ওপর চাপিয়ে দিতে চান। আপনি আপনার মত প্রকাশ করবেন, অন্যকে আহ্বান করবেন। মত প্রকাশ করার জন্য জবরদস্তি করার অধিকার কারও নেই। জবরদস্তি মানেই ফ্যাসিবাদ।’

ইসরায়েলের জায়নবাদী প্রকল্প এক ভয়ংকর ফ্যাসিবাদী প্রকল্প মন্তব্য করে জোনায়েদ সাকি বলেন, বছরের পর বছর ধরে তারা ফিলিস্তিনের জনগণের ওপর যে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ, নিপীড়ন ও দখলদারত্ব চালিয়ে আসছে, তা মানব জাতির জন্য কলঙ্ক। ফিলিস্তিনের জনগণের পক্ষে বিশ্বের সব বিবেকবান মানুষের ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শান্তিকামী মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে বিশ্বের দরবারে এই নারকীয় হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে পদক্ষেপ নিন, রাষ্ট্রীয়ভাবে বাংলাদেশের মানুষের পক্ষ থেকে ফিলিস্তিনি জনগণের পক্ষে সোচ্চার হোন।’

গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক বলেন, বাংলাদেশেও নানা নির্যাতন দেখেছি। এ দেশে ধর্মীয় নির্যাতনকে কেন্দ্র করে পাশের দেশ ভারত তাদের ফায়দা তুলতে চায়। নানা ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’

বাংলাদেশের নারীরা নানাভাবে আক্রমণের শিকার হচ্ছেন বলে উল্লেখ করেন জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, মাজারে যাঁরা ধর্মচর্চা করেন, তাঁদের ওপর হামলা করা হচ্ছে। ফ্যাসিস্টরা নানাভাবে অভ্যুত্থানকে ধ্বংস করতে চাইছে।

গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল বলেন, বিশ্বের যত নিপীড়িত মানুষ আছে, তার মধ্যে সবচেয়ে নিপীড়িত হচ্ছে ফিলিস্তিনের জনগণ। অথচ তাদের এই নিপীড়ন দেখেও না দেখার ভান করে তথাকথিত বিশ্ব বিবেক। তিনি বলেন, একদিকে সারা দুনিয়ার বিবেকবান মানুষ ফিলিস্তিনের জনগণের পক্ষে সোচ্চার, অন্যদিকে ট্রাম্প-নেতানিয়াহু জুটি গাজায় গণহত্যা চালিয়ে সেখানে প্রমোদনগরী তৈরির স্বপ্ন দেখছে। এই নব্য ফ্যাসিবাদীদের বিরুদ্ধে শান্তিকামী বিবেকবান গণতন্ত্রকামী মানুষের ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া, জুলহাসনাইন বাবু, তরিকুল সুজন প্রমুখ। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন কৃষক মজুর সংহতির সাধারণ সম্পাদক আলিমুল কবীর, গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহিম চৌধুরীসহ ঢাকা জেলা ও মহানগরের বিভিন্ন ইউনিটের নেতা–কর্মীরা।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফ ল স ত ন র জনগণ জনগণ র র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে রূপগঞ্জে লিফলেট বিতরণ 

আওয়ামীলীগ দেশের মানুষের অধিকার হনন করেছে। তাই, দেশে এক গণবিপ্লবের সৃষ্টি হয়েছে। ২৪এর গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামীলীগ এ দেশ থেকে বিতারিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও রূপগঞ্জ আসনের বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী মোহাম্মদ দুলাল হোসেন। 

বৃহস্পতিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের ভোলাব ইউনিয়নের আতলাপুর বাজার এলাকায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘোষিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে লিফলেট বিতরণকালে মোহাম্মদ দুলাল হোসেন এসব কথা বলেন। 

লিফলেট বিতরণকালে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সাধারণ মানুষ, বিএনপি-যুবদলসহ অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। 

মোহাম্মদ দুলাল হোসেন আরও বলেন, “গত ১৭ বছর ধরে এ দেশের জনগণ একদলীয় শাসন ও ফ্যাসিবাদের শিকার হয়ে জিম্মি হয়ে ছিল। মানুষের বাকস্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছিল। কিন্তু ২০২৪ সালের গণজাগরণের মধ্য দিয়ে জনগণ আবারও তাদের অধিকার পুনরুদ্ধার করতে পেরেছে। এখন সময় এসেছে মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার, একটি সত্যিকার গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার।”

তিনি আরও বলেন, “তারেক রহমানের ৩১ দফা দেশের পুনর্গঠনের পথনির্দেশনা। এই দফাগুলোতে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, মানবাধিকার, দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার রূপরেখা দেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে হবে।”

এসময় স্থানীয় যুবদল ও ছাত্রদল নেতৃবৃন্দও লিফলেট বিতরণে অংশগ্রহণ করেন। তারা সাধারণ মানুষকে বিএনপির পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করেন যে, দেশকে সঠিক পথে এগিয়ে নিতে তারা রাজনৈতিকভাবে প্রস্তুত এবং জনগণের পাশে থাকবে।

স্থানীয়রা জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার। একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা এবং নাগরিক অধিকার ফিরিয়ে আনার প্রত্যাশা করছেন তারা। এ ধরনের লিফলেট বিতরণ কার্যক্রমে জনগণ আরও বেশি সচেতন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারা।

প্রসঙ্গত, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান চলতি বছরের শুরুতে ৩১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন, যেখানে রাষ্ট্র সংস্কার ও জনগণের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্য তুলে ধরা হয়।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইসির প্রতিটি কাজে জবাবদিহি থাকতে হবে
  • জুলাই সনদে আমাদের যে সম্মতি সেটি আইনের ঊর্ধ্বে: সালাহউদ্দিন
  • সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও মাদকমুক্ত বন্দর গড়তে চাই : সাখাওয়াত
  • বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে রূপগঞ্জে লিফলেট বিতরণ 
  • জুলাই আন্দোলনকে মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে জড়াবেন না: টুকু
  • সবাই অপেক্ষা করছে একটা নির্বাচনের জন্য
  • সরকারের ভুল সিদ্ধান্তে দেশে ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ মাথাচাড়া দিতে পারে: তারেক রহমান
  • সরকারের একটি অংশ অপকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে: তারেক রহমান
  • ট্রাম্পের প্রতি মার্কিন জনগণের সমর্থন ৪০ শতাংশে ঠেকেছে
  • জাতিসংঘে সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশ-পাকিস্তান বৈঠক, ফিলিস্তিন ইস্যুতে উদ্বেগ