ফ্যাসিস্টরা নানাভাবে অভ্যুত্থানকে ধ্বংসের চেষ্টা করছে: জোনায়েদ সাকি
Published: 11th, April 2025 GMT
ফ্যাসিস্টরা নানাভাবে জুলাই অভ্যুত্থানকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেছেন, দেশের মানুষ যখন বিরাট এক অভ্যুত্থান করে নতুন বাংলাদেশের যাত্রা দেখছেন, তখন অনেকেই যেন ওই শেখ হাসিনার অপতৎপরতার মতো নানাভাবে আবার দখলদারি করতে এবং জনগণের কণ্ঠ ও স্বাধীনতা রুখে দিতে চান।
রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে আজ শুক্রবার বিকেলে এক বিক্ষোভ সমাবেশে জোনায়েদ সাকি এ কথা বলেন। গণসংহতি আন্দোলনের উদ্যোগে ‘গাজা ও রাফার মজলুম ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের নৃশংস গণহত্যা’র প্রতিবাদে ওই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘বাংলাদেশের মজলুমরা আজ যদি ঐক্যবদ্ধ হই, আমরা যেমন অভ্যুত্থান করে হাসিনাকে পালাতে বাধ্য করেছি.
জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদ হচ্ছে সেটাই, যখন আপনার নিজের মত অন্যর ওপর চাপিয়ে দিতে চান। আপনি আপনার মত প্রকাশ করবেন, অন্যকে আহ্বান করবেন। মত প্রকাশ করার জন্য জবরদস্তি করার অধিকার কারও নেই। জবরদস্তি মানেই ফ্যাসিবাদ।’
ইসরায়েলের জায়নবাদী প্রকল্প এক ভয়ংকর ফ্যাসিবাদী প্রকল্প মন্তব্য করে জোনায়েদ সাকি বলেন, বছরের পর বছর ধরে তারা ফিলিস্তিনের জনগণের ওপর যে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ, নিপীড়ন ও দখলদারত্ব চালিয়ে আসছে, তা মানব জাতির জন্য কলঙ্ক। ফিলিস্তিনের জনগণের পক্ষে বিশ্বের সব বিবেকবান মানুষের ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শান্তিকামী মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে বিশ্বের দরবারে এই নারকীয় হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে পদক্ষেপ নিন, রাষ্ট্রীয়ভাবে বাংলাদেশের মানুষের পক্ষ থেকে ফিলিস্তিনি জনগণের পক্ষে সোচ্চার হোন।’
গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক বলেন, বাংলাদেশেও নানা নির্যাতন দেখেছি। এ দেশে ধর্মীয় নির্যাতনকে কেন্দ্র করে পাশের দেশ ভারত তাদের ফায়দা তুলতে চায়। নানা ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’
বাংলাদেশের নারীরা নানাভাবে আক্রমণের শিকার হচ্ছেন বলে উল্লেখ করেন জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, মাজারে যাঁরা ধর্মচর্চা করেন, তাঁদের ওপর হামলা করা হচ্ছে। ফ্যাসিস্টরা নানাভাবে অভ্যুত্থানকে ধ্বংস করতে চাইছে।
গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল বলেন, বিশ্বের যত নিপীড়িত মানুষ আছে, তার মধ্যে সবচেয়ে নিপীড়িত হচ্ছে ফিলিস্তিনের জনগণ। অথচ তাদের এই নিপীড়ন দেখেও না দেখার ভান করে তথাকথিত বিশ্ব বিবেক। তিনি বলেন, একদিকে সারা দুনিয়ার বিবেকবান মানুষ ফিলিস্তিনের জনগণের পক্ষে সোচ্চার, অন্যদিকে ট্রাম্প-নেতানিয়াহু জুটি গাজায় গণহত্যা চালিয়ে সেখানে প্রমোদনগরী তৈরির স্বপ্ন দেখছে। এই নব্য ফ্যাসিবাদীদের বিরুদ্ধে শান্তিকামী বিবেকবান গণতন্ত্রকামী মানুষের ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া, জুলহাসনাইন বাবু, তরিকুল সুজন প্রমুখ। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন কৃষক মজুর সংহতির সাধারণ সম্পাদক আলিমুল কবীর, গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহিম চৌধুরীসহ ঢাকা জেলা ও মহানগরের বিভিন্ন ইউনিটের নেতা–কর্মীরা।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ফ ল স ত ন র জনগণ জনগণ র র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
লন্ডন বৈঠকে অবিশ্বাস দূর, সরকারের সম্মানজনক প্রস্থানের পথ সুগম হবে: সাইফুল হক
লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক দেশে আগামী সংসদ নির্বাচনকেন্দ্রিক অচলাবস্থা, সন্দেহ ও অবিশ্বাস দূর করবে বলে আশা করছেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। আজ শনিবার সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ২১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে এ কথাগুলো বলেন তিনি।
লন্ডনে দুই নেতার বৈঠকের বিস্তারিত সব রাজনৈতিক দল ও জনগণের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করারও আহ্বান জানিয়েছেন সাইফুল হক।
সরকারের এই উদ্যোগ বিলম্বিত বোধদয়ের ফল বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। সাইফুল হক বলেন, আরও আগে সরকারের এই বোধদয় হলে অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত বিতর্ক ও রাজনৈতিক বিরোধ এড়িয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতিসহ মৌলিক কাজে আরও বেশি মনোযোগ দেওয়া যেত।
সব অংশীজনকে আস্থায় নিয়ে সরকারকে কাজ করার আহ্বান জানান সাইফুল হক। তিনি বলেন, এই বৈঠকের মধ্য দিয়ে বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের সম্মানজনক প্রস্থানের রাস্তা সুগম হলো।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সাইফুল হক বলেন, দেশের মানুষের অধিকার ও মুক্তি অর্জনে তাঁর দল জনগণের ভালোবাসা নিয়ে আগামীতে আপসহীন ধারায় সংগ্রাম অব্যাহত রাখবে।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী, আকবর খান, আবু হাসান টিপু, আনছার আলী দুলাল ও মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক। সমাবেশে সংহতি জানান গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিষদের আহবায়ক শেখ আবদুর নূর।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাইফুল ইসলাম মীর, রেজাউল আলম, ফিরোজ আলী, কেন্দ্রীয় সংগঠক আইয়ুব আলী, বাবর চৌধুরী, ঢাকা মহানগর কমিটির নেতা মো. সালাউদ্দীন, মিজারুল রহমান ডালিম, আরিফুল ইসলামসহ পার্টির ঢাকা মহানগরের নেতারা।