পড়ন্ত বিকেলে বদলগাছীর শালুককুড়ি মাঠে ধানক্ষেত দেখতে যায় সাব্বির হোসেন ও গোলাম রব্বানী নামে দুই কিশোর। ক্ষেতের মধ্যে বড় একটি ঈগল পাখিকে পড়ে থাকতে দেখে তারা। মানুষ দেখে আতঙ্কিত হয়ে চোখ রাঙাতে থাকে পাখিটি। প্রথমে ভয় পেলেও সাহস করে কাছে যায় তারা। ব্যথা আর যন্ত্রণায় পাখিটি কাতরাচ্ছি। ধান ক্ষেত থেকে তুলে জমির আইলে আনলে দেখা যায় দুই ডানা রক্তাক্ত। গভীর ক্ষত দেখে দ্রুত চিকিৎসার জন্য ছোটেন তারা। চার কিলোমিটার পথ দূরে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরে নিয়ে যায় অসুস্থ ঈগলটিকে। সেখানে ঈগলটির চিকিৎসা দেন প্রাণিসম্পদ কর্মকতা। 

ঈগলটির দুই ডানায় গুলি করা হয়েছিল বলে জানান উপজেলা উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মঞ্জুরুল হাসান। একটি পাখির প্রতি ওই দুই কিশোরের এমন ভালোবাসা দেখে স্থানীয় লোকজনের প্রশংসায় ভাসছেন ওই দুই কিশোর। তারা হলো, মো.

সাব্বির হোসেন ও গোলাম রব্বানী। তাদের বাড়ি পাশের বদলগাছি উপজেলার খাদাইল বাহ্মণপুকুর গ্রামে। 

উপজেলা প্রাণি সম্পদ দপ্তর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সন্ধ্যার পর ওই দুই কিশোর গুলিবিদ্ধ অসুস্থ ঈগল পাখিটিকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য প্রাণিসম্পদ দপ্তরে নিয়ে যায়। পাখিটিকে দেখতে উৎসুক লোকজন ভিড় করছিলেন। চিকৎসার পর অসুস্থ ঈগলের দায়িত্ব নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন পৌর শহরের পুরাতন বাজার এলাকার মোশারফ হোসেন। এরপর ঈগল পাখিটিকে তাঁর জিম্মায় দেওয়া হয়।

সাব্বির হোসেন ও গোলাম রব্বানী জানান, শালুককুড়ি মাঠে নিজেদের ধানক্ষেত দেখতে গিয়েছিলাম। জমির আইল দিয়ে যেতেই বড় একটি ঈগল পাখিকে ধান খেতে পড়ে থাকতে দেখি। পাখিটি আমাদের দেখে চোখ রাঙাচ্ছিল। প্রথমে ভয় পেলেও আমরা সাহস করে ঈগল পাখিটির কাছে যাই। দুটি ডানায় ক্ষত চিহ্ন ও রক্ত দেখে তাৎক্ষণিক পাখিটিকে সুস্থ করতে আক্কেলপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরে নিয়ে যাই। উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ঈগলের দুটি ডানা ড্রেসিং করে ইনজেকশন দিয়েছেন।

পাখিটির জিম্মা নেওয়া মোশারফ হোসেন বলেন, আমি ঈগল পাখিটিকে নিজের বাড়িতে রাখব। যত দিন লাগে সুস্থ করবো। সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত নিজ উদ্যোগে নিয়মিত প্রাণিসম্পদ দপ্তরে আনা-নেওয়া করব।

প্রাণিসম্পদ দপ্তরের উপসহকারী কর্মকর্তা মঞ্জুরুল হাসান সুমন বলেন, ঈগলটি খুবই অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। ঈগলের দুই ডানায় গুলির দাগ রয়েছে। প্রায় চার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে দুই কিশোর ঈগল পাখির চিকিৎসা করাতে এনেছে। তাদের এমন কর্মকাণ্ড সত্যিই প্রশংসনীয়। যারা ঈগলটি গুলি করেছে তারা নিষ্ঠুর মনের মানুষ।

উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম বলেন, ঈগল পাখিটিকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ভালো আছে। পাখি প্রকৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই পাখি শিকার থেকে সকলকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ঈগল প খ ট ক কর মকর ত উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

শেফালি আর দীপ্তিতে নতুন মুম্বাইয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত

নাবি মুম্বাই। নয়া মুম্বাই। নতুন সেই মুম্বাইয়ে কাল নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পেল মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত।

দীপ্তি শর্মার করা ৪৬তম ওভারের তৃতীয় বলে নাদিন ডি ক্লার্কের তোলা ক্যাচটি এক্সট্রা কাভারে ভারত অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌরের হাতে জমা হতেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের আনন্দে মাতল পুরো ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকা ২৪৬ রানে অলআউট, ভারত ৫২ রানে জয়ী।

ভারতের জয়ের উৎসব অবশ্য শুরু হয়ে গিয়েছিল পাঁচ ওভার আগেই। লরা ভলভার্টকে ফিরিয়ে পথের কাঁটা উপড়ে ফেলেই উদ্‌যাপন শুরু করেছিল ভারতীয়রা। অসাধারণ এক সেঞ্চুরি করে দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক চোখ রাঙাছিলেন ভারতের উৎসব ভন্ডুল করার। কিন্তু সেঞ্চুরি করার পরপরই ক্যাচ তুললেন ভলভার্ট। আর সেই ক্যাচ নিতে গিয়ে আমানজোত কৌর ভারতের প্রায় শত কোটি মানুষের হৃৎস্পন্দন প্রায় থামিয়ে দিয়েছিলেন। একবার নয়, দুবার নয়, তৃতীয়বারের চেষ্টাতেই ক্যাচ নিতে পারেন আমানজোত। এবারও বোলার সেই অফ স্পিনার দীপ্তি শর্মা।

৯৮ বলে ১০১ রান করে ভলভার্ট যখন ফিরলেন দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ৪১.১ ওভারে ২২০/৭। এরপর শুধু আনুষ্ঠানিকতাই ছেড়েছে ভারত। দীপ্তি আরও ২টি উইকেট নিয়ে পেয়ে গেছেন ৫ উইকেট। আর ভারত হয়ে গেছে চ্যাম্পিয়ন। এর আগে ব্যাট হাতেও ৫৮ বলে ৫৮ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন দীপ্তি।

ব্যাট হাতে ৮৭ রান করা শেফালি বর্মা বল হাতে নিয়েছেন ২ উইকেট

সম্পর্কিত নিবন্ধ