গুলিবিদ্ধ ঈগল পাখিটিকে বাঁচাল দুই কিশোর
Published: 12th, April 2025 GMT
পড়ন্ত বিকেলে বদলগাছীর শালুককুড়ি মাঠে ধানক্ষেত দেখতে যায় সাব্বির হোসেন ও গোলাম রব্বানী নামে দুই কিশোর। ক্ষেতের মধ্যে বড় একটি ঈগল পাখিকে পড়ে থাকতে দেখে তারা। মানুষ দেখে আতঙ্কিত হয়ে চোখ রাঙাতে থাকে পাখিটি। প্রথমে ভয় পেলেও সাহস করে কাছে যায় তারা। ব্যথা আর যন্ত্রণায় পাখিটি কাতরাচ্ছি। ধান ক্ষেত থেকে তুলে জমির আইলে আনলে দেখা যায় দুই ডানা রক্তাক্ত। গভীর ক্ষত দেখে দ্রুত চিকিৎসার জন্য ছোটেন তারা। চার কিলোমিটার পথ দূরে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরে নিয়ে যায় অসুস্থ ঈগলটিকে। সেখানে ঈগলটির চিকিৎসা দেন প্রাণিসম্পদ কর্মকতা।
ঈগলটির দুই ডানায় গুলি করা হয়েছিল বলে জানান উপজেলা উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মঞ্জুরুল হাসান। একটি পাখির প্রতি ওই দুই কিশোরের এমন ভালোবাসা দেখে স্থানীয় লোকজনের প্রশংসায় ভাসছেন ওই দুই কিশোর। তারা হলো, মো.
উপজেলা প্রাণি সম্পদ দপ্তর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সন্ধ্যার পর ওই দুই কিশোর গুলিবিদ্ধ অসুস্থ ঈগল পাখিটিকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য প্রাণিসম্পদ দপ্তরে নিয়ে যায়। পাখিটিকে দেখতে উৎসুক লোকজন ভিড় করছিলেন। চিকৎসার পর অসুস্থ ঈগলের দায়িত্ব নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন পৌর শহরের পুরাতন বাজার এলাকার মোশারফ হোসেন। এরপর ঈগল পাখিটিকে তাঁর জিম্মায় দেওয়া হয়।
সাব্বির হোসেন ও গোলাম রব্বানী জানান, শালুককুড়ি মাঠে নিজেদের ধানক্ষেত দেখতে গিয়েছিলাম। জমির আইল দিয়ে যেতেই বড় একটি ঈগল পাখিকে ধান খেতে পড়ে থাকতে দেখি। পাখিটি আমাদের দেখে চোখ রাঙাচ্ছিল। প্রথমে ভয় পেলেও আমরা সাহস করে ঈগল পাখিটির কাছে যাই। দুটি ডানায় ক্ষত চিহ্ন ও রক্ত দেখে তাৎক্ষণিক পাখিটিকে সুস্থ করতে আক্কেলপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরে নিয়ে যাই। উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ঈগলের দুটি ডানা ড্রেসিং করে ইনজেকশন দিয়েছেন।
পাখিটির জিম্মা নেওয়া মোশারফ হোসেন বলেন, আমি ঈগল পাখিটিকে নিজের বাড়িতে রাখব। যত দিন লাগে সুস্থ করবো। সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত নিজ উদ্যোগে নিয়মিত প্রাণিসম্পদ দপ্তরে আনা-নেওয়া করব।
প্রাণিসম্পদ দপ্তরের উপসহকারী কর্মকর্তা মঞ্জুরুল হাসান সুমন বলেন, ঈগলটি খুবই অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। ঈগলের দুই ডানায় গুলির দাগ রয়েছে। প্রায় চার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে দুই কিশোর ঈগল পাখির চিকিৎসা করাতে এনেছে। তাদের এমন কর্মকাণ্ড সত্যিই প্রশংসনীয়। যারা ঈগলটি গুলি করেছে তারা নিষ্ঠুর মনের মানুষ।
উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম বলেন, ঈগল পাখিটিকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ভালো আছে। পাখি প্রকৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই পাখি শিকার থেকে সকলকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ঈগল প খ ট ক কর মকর ত উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
৪৫ কেজি মণ হিসাবে আম কিনে ৪০ কেজিতে বিক্রি, ঠকছেন গৃহস্থ ও খুচরা ক্রেতা
জয়পুরহাটে গৃহস্থদের কাছ থেকে ৪৫ কেজিতে ১ মণ হিসাবে নাকফজলি আম কিনে তুলনামলূক বেশি দাম ও কম পরিমাণে (৪০ কেজিতে ১ মণ ধরে) বিক্রির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও পাইকারী বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অভিযোগ, ৪৫ কেজি নাকফজলি আম ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায় কিনে খুচরা বাজারে ৪০ কেজি হিসাবে ১ মণ ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এতে গৃহস্থ ও খুচরা ক্রেতা উভয়ই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, জয়পুরহাটের আক্কেলপুর পৌর শহরের রেলগেট এলাকায় এভাবেই সিন্ডিকেট করে আম কেনাবেচা হচ্ছে। খুচরা ক্রেতা ও গৃহস্থরা আম ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য প্রশাসনের নজরদারির দাবি করেছেন।
প্রতিবেশী নওগাঁর বদলগাছী উপজেলায় প্রচুর পরিমাণে নাকফজলি আমের উৎপাদন হয়। সেখানকার এই আম অন্য এলাকার চেয়ে সুস্বাদু। প্রতিবছর আমের মৌসুমে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর পৌর শহরের কিশোর মোড় থেকে রেলগেট পর্যন্ত সড়কে এই আমের পাইকারি বাজার বসে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। প্রতিদিন ভোর ৫টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত আম কেনাবেচা হয়। বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকারেরা সেখানে গিয়ে আম কেনেন।
আজ শনিবার সকালে আক্কেলপুর পৌর শহরের রেলগেট এলাকায় কয়েকজন গৃহস্থ ও খুচরা আম ক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদের আগে নাকফজলি আম ১ হাজার ৪০০ টাকা মণে বিক্রি হয়েছে। ঈদের পর নাকফজলি আমের আমদানি বেড়েছে। এ কারণে আমের মণ ৬০০ থেকে ৪০০ টাকা কমেছে। ৪০ কেজিতে মণ হলেও পাইকারেরা গৃহস্থদের কাছ থেকে ৪৫ কেজি মণে আম কিনছেন। কিন্তু পাইকারেরা দোকানে সেই আম ৪০ কেজিতে মণ ধরে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি করছেন।
বদলগাছীর ভান্ডারপুর গ্রামের আমচাষি সাইফুল ইসলাম বলেন, আক্কেলপুর বাজারে ৮০০ টাকা দরে ৩ মণ নাকফজলি আম বিক্রি করেছেন। ৩ মণ আমে ১৫ কেজি বেশি দিতে হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই এটি চলে আসছে, যা অন্যায়। এ বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তিনি।
অন্যদিকে রেলগেট এলাকা থেকে (৪০ কেজিতে মণ ধরে) ১ মণ নাকফজলি আম ১ হাজার ২০০ টাকায় কেনার দাবি করেন খুচরা বিক্রেতা কামরুল ইসলাম। তিনি বলেন, দোকানিরা প্রতি মণে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা লাভ করছে।