পৃথক সচিবালয়ের জন্য কাজ চলছে অধ্যাদেশ তৈরির
Published: 12th, April 2025 GMT
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় তৈরির বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। এ-সংক্রান্ত অধ্যাদেশ প্রস্তুতের কাজ এগিয়ে চলছে দ্রুতগতিতে।
শনিবার খুলনার একটি হোটেলে ‘জুডিশিয়াল ইন্ডিপেন্ডেন্স অ্যান্ড এফিসিয়েন্সি ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি। সুপ্রিম কোর্ট ও ইউএনডিপির যৌথ উদ্যোগে এ সেমিনার হয়।
প্রধান বিচারপতি ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন নিশ্চিত করতে বিচার বিভাগের ভূমিকা তুলে ধরেন এবং তাঁর ঘোষিত বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপ বাস্তবায়নের অগ্রগতির বিবরণ দেন। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সক্রিয়তার কারণে দ্রুত উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগের অধ্যাদেশ প্রণয়ন সম্ভব হয়েছে। সংস্কারের রোডম্যাপের সফল বাস্তবায়নে সুপ্রিম কোর্ট ও সরকার নিবিড়ভাবে কাজ করছে।
সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, সরকারের সহযোগিতায় সম্প্রতি আদালতগুলোর মামলাজট নিরসনে বিভিন্ন স্তরে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বিচারকের পদ সৃজন হয়েছে। অদূর ভবিষ্যতে মামলাজট নিরসনে এ উদ্যোগ ভূমিকা রাখবে। বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালত তৈরির প্রাথমিক কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলেও জানান তিনি।
দেশের বিচার বিভাগের নতুন যাত্রা শুরু হয়েছে জানিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, বিভাগীয় পর্যায়ে আয়োজিত সেমিনারে রোডম্যাপ বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ মতামত এসেছে। সেগুলো অন্তর্ভুক্ত করে শিগগির সুপ্রিম কোর্ট বিচার বিভাগের সার্বিক আধুনিকায়নে একটি কৌশলগত পরিকল্পনা তৈরি করবে। এ সময় কক্সবাজারে সুপ্রিম কোর্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট দ্রুত চালুর বিষয়ে দুটি বিশেষ কমিটি নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করছে বলে জানান তিনি।
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতসহ বিচার সেবায় দক্ষতা বৃদ্ধিতে করণীয় সম্পর্কে সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মোহাম্মদ আলী। এতে বক্তৃতা করেন ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টিফান লিলার, বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার, সুইডেনের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস উইকস প্রমুখ।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব চ রপত
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।