খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

আজ মঙ্গলবার বেলা পৌনে দুইটার সময়  কুয়েট স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারে প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা এ ঘোষণা দেন। এদিকে আজ কুয়েটের দাপ্তরিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একজন ঘোষণাটি পড়ে শোনান। ওই ঘোষণায় বলা হয়, ‘যেহেতু ভিসি কুয়েট শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে, যেহেতু ভিসি  ব্যর্থতার দায় নিতে অস্বীকার করেছে, যেহেতু ভিসি নেট পানি অফ করে হল থেকে বের করে দিয়েছে, যেহেতু ভিসি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা দিতে ইন্ধন জুগিয়েছে, যেহেতু ভিসি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করেছে, সেহেতু আমরা ছয় দফা থেকে এক দফা ঘোষণা করছি। এই ভিসিকে অপসারণ আমাদের একমাত্র দাবি। একই সঙ্গে নতুন ভিসির অধীনে নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটির মাধ্যমে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।’

ঘোষণাপত্রটি পাঠ করার পর শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন হলের তালা খুলে ভেতরে প্রবেশ করার ঘোষণা দেন। এরপর পরপরই শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে খান জাহান আলী হলের দিকে যান। সেখানকার প্রধান ফটকের তালা ভেঙে ফেলেন। এরপর তাঁরা অন্য হলের তালা ভাঙছিলেন।

এর আগে ক্যাম্পাসের ভাস্কর্য দুর্বার বাংলার পাদদেশে বেলা একটার দিকে সমাবেশ করে ‘মেক কুয়েট, ফ্রি এগেইন’ কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখান করে এই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা হল খুলে দেওয়ার দাবি জানান। হল খুলে দেওয়ার দাবিসংবলিত বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন। তাঁরা এখনই প্রশাসনের কাছে বহিষ্কার হওয়া ৩৭ শিক্ষার্থীর সবার নাম প্রকাশ করার দাবি জানান। বিক্ষোভ প্রদর্শন শেষে স্লোগান দিতে দিতে শিক্ষার্থীরা একাডেমিক ভবনগুলোর সামনে গিয়ে হ্যান্ড মাইকে শিক্ষকদের কাছে হলে ঢোকার সহায়তার আহ্বান জানান।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একজন প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্রদল ও বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নৃশংস হামলায় প্রায় ১৫০ জন শিক্ষার্থী রক্তাক্ত হন। আমাদের ওপর গুলি চালানো হয়। এর প্রতিবাদে কুয়েটের শিক্ষার্থীরা বিচারের দাবি করলে বিচারের নামে নাটক করে দুই মাস পর কুয়েটের ৪২ জন প্রতিবাদকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়। এরপর গতকাল সোমবার সিন্ডিকেট সিদ্ধান্তেও বহিষ্কারের নামে নাটক করে প্রতিবাদকারী শিক্ষার্থীদেরও বহিষ্কার করার নির্দেশ দেওয়া হয়। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, এসব নাটক আর সহ্য করা হবে না। আমাদের ধৈর্যের সীমা পার হয়ে গেছে। আজ তিন দিন ধরে আমরা খোলা আকাশের নিচে মশার কামড় খেয়ে কষ্ট সহ্য করছি।’

এর আগে গতকাল সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০১তম (জরুরি) সিন্ডিকেট সভায় সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে আগামী ২ মে থেকে সব আবাসিক হল শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া ও ৪ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত হয়।
১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় শতাধিক মানুষ আহত হন। পরদিন প্রশাসনিক ভবনসহ সব একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। ওই দিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়।

২৫ ফেব্রুয়ারি সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ১৮ ফেব্রুয়ারির সংঘর্ষের ঘটনায় প্রকৃত দোষী শিক্ষার্থীদের খুঁজে বের করাসহ পূর্ণাঙ্গ তদন্তের জন্য গঠিত কমিটি গত রোববার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার কুয়েটের ২২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে নগরের মহেশ্বরপাশা উত্তর বণিকপাড়া এলাকার হোসেন আলী নামের এক ব্যক্তি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আমলি আদালতে মামলা করেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ঘর ষ তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

৮ ম্যাচে মাত্র ২ জয় রিয়ালের, চাকরি হারানোর শঙ্কার মুখেও ‘ইতিবাচক’ আলোনসো

লা লিগায় গত রোববার রাতে সেল্তা ভিগোর বিপক্ষে হারের পর তীব্র হয়েছিল জাবি আলোনসোর ছাঁটাই হওয়ার গুঞ্জন। বলা হচ্ছিল, চ্যাম্পিয়নস লিগে ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে ম্যাচটা দিয়েই নির্ধারিত হবে আলোনসোর ভবিষ্যৎ। সেই ভাগ্য নির্ধারনী ম্যাচেও গতকাল রাতে হেরেছে রিয়াল মাদ্রিদ। ২–১ গোলের এই হারের পর এখন সবার চোখ আলোনসোর চাকরি দিকে।

প্রশ্ন হচ্ছে, রিয়াল কি আলোনসোকে আরও সুযোগ দেবে নাকি এখানেই সম্পর্কের ইতি টানবে? রিয়ালের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানতে আরেকটু হয়তো অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু মাদ্রিদের ক্লাবটির মৌসুম যে ক্রমশ অন্ধকারে ঢেকে যাচ্ছে তা বলাই যায়।

আলোনসোর রিয়াল সর্বশেষ ৮ ম্যাচের মাত্র ২টিতে জিতেছে। ব্যর্থতার এই যাত্রায় সবচেয়ে খারাপ যে ব্যাপারটি ঘটেছে তা হলো, আলোনসো কোচিংয়ে তাঁর নিজস্ব দর্শন ভুলে গিয়েছেন।

আরও পড়ুনরিয়াল ও আলোনসোর দুর্দশা বাড়িয়ে বার্নাব্যুতে জিতল ম্যানচেস্টার সিটি৫ ঘণ্টা আগে

গতকাল কথিত বাঁচা–মরার ম্যাচে সেই দর্শনটাই ফিরিয়ে আনার চেষ্টাই যেন করলেন তিনি। চোটাক্রান্ত কিলিয়ান এমবাপ্পের জায়গায় নামালেন গনসালো গার্সিয়াকে। ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে গনসালো আলোনসোর বেশ প্রিয় হয়ে উঠেছিলেন। এরপর ফেদেরিকো ভালভের্দেকে খেলালেন রাইট–ব্যাক হিসেবে, যদিও এ ভূমিকায় তিনি স্বচ্ছন্দ নন।

এরপর মিডফিল্ডে জায়গা পেলেন দানি সেবায়োস, আর তাই আরদা গুলেরকে বসে থাকতে হলো বেঞ্চে। উইংয়ে আলোনসো ভরসা রাখলেন ৩২ ম্যাচ ধরে গোলখরায় ভুগতে থাকা রদ্রিগোর ওপর। তবে রদ্রিগো গোল করে শেষ পর্যন্ত খরা দূর করেছেন।

সময়টা ভালো যাচ্ছে না আলোনসোর

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দেয়াল টপকে ভেতরে ঢুকে মাস্ক পরা যুবক, এরপর জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে আগুন
  • তারেক রহমান দেশে ফিরছেন ২৫ ডিসেম্বর
  • হাদিকে গুলি: সিসিটিভি ফুটেজে যা দেখা গেল
  • রণবীরের হাঁটুর বয়সি নায়িকা সারাকে কতটা জানেন?
  • শত বছরের পুরোনো বিমানবন্দরে হচ্ছে ৩ হাজার কোটি ডলারের শহর
  • তফসিল‌কে স্বাগত, উৎসবমুখর নির্বাচন প্রত্যাশা ইসলামী আন্দোলনের
  • চট্টগ্রাম চেম্বারের নির্বাচন নিয়ে অচলাবস্থা কেটেছে
  • ‘এরপর তাঁর পালা’: কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট পেত্রোকে ট্রাম্পের হুমকি
  • গবিতে ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনরত শিক্ষার্থীকে মারধর, থানায় অভিযোগ
  • ৮ ম্যাচে মাত্র ২ জয় রিয়ালের, চাকরি হারানোর শঙ্কার মুখেও ‘ইতিবাচক’ আলোনসো